স্টাফ রিপোর্টার: ইজরায়েল-হামাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ছায়া কলকাতায়! শহরের ঐতিহ্যবাহী ইহুদি উপাসনালয় সিনাগগে (Synagogues) বিধর্মীদের প্রবেশের উপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। অর্থাৎ শুধুমাত্র ইহুদি ধর্মাবলম্বী ছাড়া অন্য কোনও ধর্মের মানুষজন সিনাগগে ঢুকতে পারছেন না। এমনকী, প্রার্থনাস্থলের সামনে গাড়িও রাখতে দেওয়া হচ্ছে না। যদিও কী কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সে সম্পর্কে সিনাগগের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
মধ্যপ্রাচ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলছে। ইজরায়েল-হামাসের সংঘর্ষে (Israel-Hamas Clash) ইতিমধ্যে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১০ হাজার মানুষের। তবু যুদ্ধে ইতি পড়ার কোনও ইঙ্গিত নেই। স্বাভাবিকভাবেই সেই যুদ্ধের ছায়া পড়েছে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও। কে কার পক্ষে তা নিয়ে রাজনৈতিক দলাদলি তো রয়েছেই। পাশাপাশি রাস্তায় নেমে ‘ইজরায়েলি হামলার’ প্রতিবাদে শামিল হচ্ছে বহু ভিনদেশের নাগরিকরাও। শহর তিলোত্তমাও সেই মিছিল দেখেছে। বামেরা প্যালেস্তাইনের স্বপক্ষে গলা ফাটিয়েছে। ইহুদি-আরব সংঘাতের আঁচ ভারতের অন্যান্য অংশে পড়েছে। এর মধ্যেই কলকাতার ইহুদি প্রার্থনাস্থলে বিধর্মীদের প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে বলে খবর।
[আরও পড়ুন: রাজ্যজুড়ে ক্রমশ বাড়ছে আতঙ্ক, বেলেঘাটা আইডি-তে ডেঙ্গুর বলি আরও ১]
বিবিধের মাঝে মহামিলনস্থল কলকাতা। মন্দির-মসজিদ-গির্জার পাশাপাশি শহরে রয়েছে জৈন-বৌদ্ধ-পারসি-ইহুদিদের প্রার্থনাস্থল। সেখানে ধর্মাবলম্বীরা শুধুমাত্র প্রার্থনা করেন এমনটা নয়, ‘বিধর্মী’ রাও বেড়াতে যান। প্রাচীন স্থাপত্যকলার আস্বাদ নেন তারা। এর মধ্যে অন্যতম শহরের তিন সিনাগগ-মাগেন ডেভিড, বেথ এল সিনাগগ, নেভে শালোমে। এর মধ্যে দুটি রয়েছে ব্য়স্ত এলাকা বড়বাজারে। আর একটি রয়েছে চিনা বাজারে। এতদিন সপ্তাহে একটি দিন বাদে বাকি ৬ দিন আমজনতা সেখানে বেড়াতে যেতে পারতেন। তবে জমা রাখতে হত নিজেদের পরিচয়পত্র। কিন্তু বর্তমানে সেই রসাস্বদন থেকে বঞ্চিত তিলোত্তমাবাসী।
শহরের হাতে গোনা জনা ১৫ ইহুদি রয়েছেন। তাঁরাই সিনাগগগুলি পরিচালনা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। সূত্রের খবর, তাঁরা আপাতত কোনও ‘বিধর্মী’কে প্রার্থনাস্থলে ঢুকতে দিচ্ছেন না। ইহুদি ছাড়া অন্য ধর্মাবলম্বীদের বন্ধ থাকছে সিনাগগের দরজা। দিনের নির্দিষ্ট সময় একমাত্র প্রার্থনার জন্য় খোলা হচ্ছে দরজা। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে সিনাগগের সামনে কোনও গাড়িও দাঁড় করাতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে কি কলকাতার সিনাগগেও যুদ্ধের আঁচ পড়তে পারে? যে কোনও সময় হামলা হতে পারে ইহুদি প্রার্থনাস্থলে? সেই আতঙ্কেই ‘বিধর্মী’দের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে? প্রশ্ন অনেক কিন্তু উত্তর দেওয়ার লোক নেই।