সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার দিল্লি সফরে গিয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ না করায় নতুন করে তৃণমূল ও কংগ্রেসের দূরত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। যা আরও জোরাল হয় বুধবার রাতে মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা-সহ ১২ জন কংগ্রেস বিধায়কের ঘাসফুল শিবিরে (TMC) যোগদানে। কংগ্রেস শিবিরে ‘ভাঙন’ ধরিয়ে মেঘালয়ের প্রধান বিরোধী দলে পরিণত হয় তৃণমূল। যা নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন অধীর চৌধুরী। আর ঠিক তার পরের দিনই আরও একবার কংগ্রেসকে তুলোধোনা করা হল তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’য়। ফলে জাতীয় স্তরে বিজেপির বিরোধিতায় দুই শিবিরের জোট বাঁধা নিয়ে আরও ধন্দ তৈরি হল।
কেন্দ্রে পদ্মশিবিরকে (BJP) উচ্ছেদের জন্য কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধতে যে তৃণমূল রাজি, তা আগেই জানিয়েছিল বাংলার শাসকদল। তবে একইসঙ্গে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল, এক্ষেত্রে কংগ্রেসের কিছু নীতি ও আচরণে বদল প্রয়োজন। কিন্তু যত দিন গড়াচ্ছে, ততই প্রকাশ্যে আসছে দুই শিবিরের মতানৈক্য।
মুকুল সাংমা-সহ মেঘালয়ের বিধায়করা তৃণমূলে যোগ দিতেই আক্রমণ শানান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। বলেন, “কংগ্রেসকে ভাঙার ষড়যন্ত্র চলছে। শুধু মেঘালয় নয়, গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতেই এটা ঘটানো হচ্ছে।” এরপরই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন, “যাঁরা ঘাসফুল শিবিরে যোগ দিচ্ছে তাঁরা বিধায়ক পদ ছেড়ে তৃণমূলের টিকিটে লড়াই করে দেখাক। ওঁরা তৃণমূলে গেলেও এখনও কংগ্রেসেরই বিধায়ক। কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবেই মানুষ ওঁদের ভোট দিয়েছেন। তৃণমূলের হয়ে জিতে দেখালে বুঝব কম দম।”
[আরও পড়ুন: শোকাহত রচনার পাশে মদন মিত্র, উপস্থিত অভিনেত্রীর বাবার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে]
অধীর চৌধুরীর (Adhir Chowdhury) এই চ্যালেঞ্জের পালটা দিয়েই বৃহস্পতিবার তৃণমূলের মুখপত্রে আরও একবার কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করা হয়। লেখা হয়, “কংগ্রেস এখন বেজায় মুশকিলে। নতুন কেউ কোনও দলে (পড়ুন তৃণমূল কংগ্রেস) যোগ দিলেই তাদের বুকের ভিতর হাহাকারের বাদ্যিটা বেজে ওঠে। সেই হতাশা থেকে তীর্যক মন্তব্য, কটাক্ষ।” এরপরই অধীরের নাম উল্লেখ করে কটাক্ষের সুরে লেখা হয়, “দলের জাতীয় স্তরের নেতৃত্বের চাইতে অধীর চৌধুরীর জ্বালাটা যেন একটু বেশি। অধীর চৌধুরী অস্তিত্ব সংকটে ভুগছেন। সেটা হওয়াই স্বাভাবিক। কারণ বাংলায় তাঁদের দলকে তিনি শূন্যতে টেনে নামিয়েছেন।”
তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার কংগ্রেসকে তুলোধোনা করা হয়েছে জাগো বাংলায়। তাই তৃণমূল ও কংগ্রেসের আঁকচা-আঁকচিতে জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে নিঃসন্দেহে ফের একবার প্রশ্ন উঠে গেল।