সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর (Netaji Subhas Chandra Bose) ১২৫ তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান পালনে কলকাতাকে বেছে নিয়েছে কেন্দ্র। এখানেই শনিবার বিকেলে হয়ে গেল বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান। রাজনৈতিক মতানৈক্য ভুলে একসঙ্গে অনুষ্ঠানে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতেও তাল কাটল। মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee) মঞ্চে বক্তব্য রাখতে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই উপস্থিত দর্শকদের একাংশ ‘জয় শ্রীরাম’ (Jai Sri Ram)স্লোগান দিতে শুরু করেন। তাতেই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে মঞ্চ থেকে নেমে আসেন। নেতাজি সম্পর্কিত কোনও ভাষণই রাখেননি। আর এত বড় অনুষ্ঠানে এভাবে তাল কেটে যাওয়া নিয়ে নিমেষের মধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) প্রতিক্রিয়া, ”নেতাজির জন্মদিনে কেন্দ্রীয় সরকারে অনুষ্ঠানে দলীয় স্লোগান উঠছে। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে, কারা বাংলার গৌরব, মনীষীদের সম্মান ভূলুণ্ঠিত করছে। বাংলার মানুষজন এই দৃশ্য দেখলেন। তাঁরা বাকিটাও বুঝে নেবেন। এই স্লোগান তুলে কার্যত মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করা হল। নিন্দনীয় ঘটনা।” তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষও তাঁর সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলেন, ”একটা সরকারি অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক স্লোগান! ভাবা যায়? এতে রুচিবোধের পরিচয় ঘটে, সংস্কৃতিবোধের অভাব স্পষ্ট হয়। ওঁরা জানেন না, নিজেরাই নিজেদের কতটা ছোট করলেন।”
[আরও পড়ুন: কেন নেতাজির জন্মদিন ‘পরাক্রম দিবস’? ব্যাখ্যা দিলেন প্রধানমন্ত্রী]
তবে বিষয়টি এত নিন্দনীয় বলে মনেই করছেন না বিজেপি নেতারা। কৈলাস বিজয়বর্গী টুইটারে নিজের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে লিখেছেন, ”জয় শ্রীরাম স্লোগান তো মুখ্যমন্ত্রী সহ্যই করতে পারছেন না, এ কেমন রাজনীতি!” সায়ন্তন বসুর বক্তব্য, ”জয় শ্রীরাম বা জয় মা তারা – যে স্লোগানই উঠুক না কেন, মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ না দিয়ে মঞ্চ থেকে নেমে যাওয়া কাম্য নয়।”
এই ইস্যুতে অবশ্য একযোগে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন বাম, কংগ্রেস নেতারা। সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিমের প্রতিক্রিয়া, ”রাজনৈতিক দিক থেকে আমাদের আদর্শ পৃথক হতেই পারে। তবে কেন্দ্রীয় সরকারি অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে এ ধরনের স্লোগান নিন্দনীয়, কুরুচিকর। এতে বোঝা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকারের অনুষ্ঠানের দর্শক আসন কারা ভরিয়েছেন।” এ নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর মত, ”উনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তাই ওঁকে অপমানিত হতে দেখলে খারাপ লাগে। যা হয়েছে, তা কাম্য ছিল না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করা হয়েছে।