সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার যুদ্ধের মেঘ ঘনাচ্ছে তাইওয়ানে! গত কয়েক মাস ধরে ঝাঁকে ঝাঁকে চিনা যুদ্ধবিমান তাইওয়ান প্রণালীর মধ্যরেখা অতিক্রম করেছে। বহুবার সেগুলো তাইওয়ানের এয়ার ডিফেন্স জোনেও ঢুকে পড়েছিল। জলসীমায় তৎপরতা দেখা গিয়েছে চিনা রণতরীও। লালফৌজের এই অনুপ্রবেশ ও আগ্রাসানে বেজায় ক্ষিপ্ত তাইপেই। উত্তেজনার পারদ চড়ছে দুদেশের মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে প্রথমবার তাইওয়ান প্রণালীতে প্রবেশ করেছে জাপানের যুদ্ধজাহাজ। চলতি সপ্তাহেই আমেরিকায় সমাপ্ত হয়েছে কোয়াড সামিট। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই বৈঠকের পরই এই পদক্ষেপ করেছে টোকিও। চিনকে চোখ রাঙিয়েই কি নয়া কৌশল নিয়েছে কোয়াড জোট?
ভারত, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও আমেরিকা মিলে তৈরি হয়েছে ‘কোয়াড্রিল্যাটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ’ বা কোয়াড গোষ্ঠী। চলতি সপ্তাহের সোমবার আমেরিকায় অনুষ্ঠিত হয় কোয়াড সামিট। আর বৃহস্পতিবারই পূর্ব চিন সাগর থেকে জাপানি নৌসেনার সাজানমি নামে একটি ডেস্ট্রয়ার রণতরী তাইওয়ান প্রণালীতে প্রবেশ করে। সঙ্গে ছিল অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের জাহাজও। এনিয়ে টোকিওর দাবি, আন্তর্জাতিক জলসীমায় নিজেদের জাহাজ চলাচলের অধিকারের উপর জোর দিতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। চিন-তাইওয়ান সংঘাতে আমেরিকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাইপেইয়ের পাশে রয়েছে জাপান। ফলে তাইওয়ান প্রণালীতে জাপানি যুদ্ধজাহাজের প্রবেশে ক্ষেপে লাল বেজিং। এই পদক্ষেপ তারা মোটেই ভালোভাবে নেয়নি।
জাপানের রণতরী দেখে ইতিমধ্যেই তৎপরতা শুরু হয়েছে চিনের সেনাবাহিনীতে। চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র লিন জিয়ান জানিয়েছেন, "জাপানের কর্মকাণ্ড ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সম্পর্কে আমরা অত্যন্ত সতর্ক। এনিয়ে আমরা জাপানের দ্রুত প্রতিক্রিয়া চাই। আমরা জাপান সরকারকে তাইওয়ান ইস্যুকে সম্মান করার আহ্বান জানাচ্ছি। তাদের যথেষ্ট সতর্ক থাকা উচিত। তাইওয়ান প্রণালী নিয়ে চিন-জাপান সম্পর্ক যাতে প্রভাবিত না হয় তা নজর রাখা প্রয়োজন।" ফলে এবার তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে সংঘাত বাড়ল বেজিং ও টোকিওর মধ্যে। বিশ্লেষক মতে, তাইওয়ান প্রসঙ্গে চিনা আগ্রাসান নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকতে পারে কোয়াড বৈঠকে। চিনকে বার্তা দিতেই এই কৌশল নিয়েছে কোয়াড জোট।
উল্লেখ্য, বরাবরই তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ হিসেবে দাবি করে এসেছে চিন। তবে বেজিংয়ে ক্ষমতার রাশ শি জিনপিংয়ের হাতে আসার পর থেকেই আরও আগ্রাসী হয়ে উঠেছে কমিউনিস্ট দেশটি। একাধিকবার জোর করে তাইওয়ান দখলের কথাও বলেছেন প্রেসিডেন্ট শি। তার পর থেকেই আরও সতর্ক হয়ে গিয়েছে তাইওয়ান। লালফৌজের হামলা ঠেকাতে সামরিক বাহিনীকে অত্যাধুনিক হাতিয়ারে সাজিয়ে তুলছে তাইওয়ান। নিজেদের মাটিতেই শক্তিশালী সাবমেরিন তৈরি করেছে দ্বীপরাষ্ট্রটি।