নির্মল ধর: হেমেন্দ্র কুমার রায়ের ‘যকের ধন’ বহু পঠিত কাহিনি। কাল ও বয়সহীন আবেদন এই গল্পের। পরিচালক সায়ন্তন ঘোষাল তার প্রথম ফিচার ছবির জন্য এমন একটি জনপ্রিয় কাহিনি বেছে নিয়ে প্রথম বাজিমাত করেছেন। দ্বিতীয় বাজিমাত পুরনো লেখার শরীরে আজকের সময়টাকেও তিনি জড়িয়ে দিয়েছেন। গুগল, এসএমএস, মোবাইল শুধু নয়, সংলাপের মধ্যে ফেলুদা, সোনার কেল্লার মুকুল, সুকুমার রায়দের প্রাসঙ্গিকভাবেই নিয়ে এসেছেন। ফলে আজকের দর্শক খুব সহজেই পুরনো গল্পের সঙ্গে নিজেকে রিলেট করতে পারবেন। বাংলা গোয়েন্দা গল্পে বিমল-কুমার জুটির আবির্ভাব অবশ্যই অন্যরকম। এবার পর্দায় এসে তাঁরা সত্যিই জমজমাট। বিশেষ করে দু’জনের স্ক্রিন রসায়ন। পরিচালক চিত্রনাট্যে হাসি-মজার অনেক উপকরণ রেখেছেন। মরার দু’টি খুলিতে তিব্বতি লিপির ভাষ্য উদ্ধার করার মধ্যে গুপ্তধনের যে সাংকেতিক বার্তা আছে, সেটা নিয়েই তো ‘যকের ধন’-এর গল্প।
[একই ফ্রেমে বচ্চন পরিবারের তিন প্রজন্ম, দেখুন ছবি]
গল্পের বিস্তারিত যাচ্ছি না, ছবির তিন চতুর্থাংশ যেমন ঝরঝরে গতিময়। ক্যামেরার কাজ চোখকে আরাম দেয়। বিশেষ করে উত্তর বাংলার সবুজে ঘেরা প্রকৃতি। তবে শেষ পর্যায়ে এসে পরিচালক কিন্তু ভিজ্যুয়ালসের ধারাবাহিকতা রাখতে পারলেন না। ক্লাইম্যাক্স পর্বে এসে ক্যামেরা ঢুকে পড়ে বানানো সেটে। সেখানেই আলো-আঁধারিতে সবটাই যেন কেমন অন্ধকারাচ্ছান্ন হয়ে গেল। গোয়েন্দা গল্পের শেষ পর্ব যদি যথেষ্ট সপ্রতিভ না হয় তাহলে দর্শককে আটকে রাখা মুশকিল। সায়ন্তনের ছবিতে তেমনই ঘটল। শুরুতে নিখাদ বাঙালি বাঙালি যে পরিমণ্ডল তৈরি হয়েছিল, শেষ পর্বে তা কেমন যেন আধা-ফ্যান্টাসি, আধা-গাঁজাখুরিতে পরিণত হল।
অভিনয়ে অবশ্য পরমব্রত-রাহুল জুটির বিমল-কুমারের যুগলবন্দি মন্দ নয়। খুব অল্প সময় থেকেও প্রিয়াঙ্কা চোখ কেড়ে নেন। হিরুদার চরিত্রে কৌশিক সেন তেমন জমাতে পারলেন না। সব্যসাচী চক্রবর্তী হয়েছেন খলনায়ক করালি, তিনি ঠিক তাঁরই মতো। হেমেন্দ্রকুমারকে প্রথম পর্দায় আনার জন্য সায়ন্তনকে সাবাশি দেব, বলব প্রযুক্তির দিকে আরও একটু নজর দিলে ভাল হয়।
সংখ্যার বিচারে – ২/৫
[মুক্তি পেল ‘জব হ্যারি মেট সেজল’, বাজিমাত করতে পারলেন ‘বাজিগর’?]
The post জমল না ‘যকের ধন’, ক্লাইম্যাক্সটাতেই গণ্ডগোল appeared first on Sangbad Pratidin.