shono
Advertisement

এক হেঁশেলে ৭ ভাষাভাষী জওয়ানের রান্না, দামোদর পাড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর শিবিরে বৈচিত্র্যের ছবি

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ‘মিলে সুর মেরা তুমহারা।’ ৯৫৮ কিমি দূরে গুয়াহাটি থেকে সুদূর পুরুলিয়ায় ভোট ডিউটি করতে এসেও এক সুরে বাঁধা সিআরপিএফ জওয়ানরা। ১২৮ নম্বর ব্যাটেলিয়নের আলফা কোম্পানির ঠিকানা এখন দামোদর নদ লাগোয়া পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর থানার চেলিয়ামা কমিউনিটি হল। এই হল ঘরই যেন ওই জওয়ানদের দ্বিতীয় ঘর হয়ে উঠেছে। তাই ঘরে যেমন মিলে মিশে সকলে […]
Posted: 05:35 PM Mar 16, 2024Updated: 05:49 PM Mar 16, 2024

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ‘মিলে সুর মেরা তুমহারা।’ ৯৫৮ কিমি দূরে গুয়াহাটি থেকে সুদূর পুরুলিয়ায় ভোট ডিউটি করতে এসেও এক সুরে বাঁধা সিআরপিএফ জওয়ানরা। ১২৮ নম্বর ব্যাটেলিয়নের আলফা কোম্পানির ঠিকানা এখন দামোদর নদ লাগোয়া পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর থানার চেলিয়ামা কমিউনিটি হল। এই হল ঘরই যেন ওই জওয়ানদের দ্বিতীয় ঘর হয়ে উঠেছে। তাই ঘরে যেমন মিলে মিশে সকলে সংসার সামলান। সেই ছবি পুরুলিয়ার দামোদর পাড়েও। চেলিয়ামার কমিউনিটি হলে। বিভিন্ন কাজের জন্য এক এক জন নিযুক্ত থাকলেও ওই কমিউনিটি হলের শিবির সামলাচ্ছেন সকলে মিলে। রান্নার দায়িত্বে পাঁচজন থাকলেও তারাই যে শুধু হেঁশেল সামলাবেন তা নয়। একইভাবে জামাকাপড় কাচার জন্য একজন থাকলেও তাকেই যে সব কাচতে হবে এমন না। সুরের সঙ্গে কথা, কাজ মিলে এই ক্যাম্পে যেন ফুটে উঠছে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য।

Advertisement

পুলিশ থেকে আধা সামরিক বাহিনী এমনিই শৃঙ্খলাপরায়ণ। তা আর নতুন কী? কিন্তু চেলিয়ামার ওই কমিউনিটি হলের শিবির যেন একতার বন্ধনে এক অন্য উদাহরণ। ইউনিফর্মে থাকা মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা বীরেন্দ্র সিং বলেন, “এখানে কি রাজনীতি আছে এসব আমাদের দেখার নয়। আমাদের যদি নির্দেশ দেওয়া হয় সামনের গাছটাকে রক্ষা করতে হবে। তাহলে আমরা সবাই মিলেমিশে ওই গাছটাকেই রক্ষা করব। তার বাইরে কি হচ্ছে আমাদের দেখার নেই।” পড়ন্ত বিকালে ক্যাম্পে পা রাখতেই রেজিস্টারে নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর লিখে দিতে হল। সাথে সাথে সামনে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে চেয়ারে বসার অনুরোধ। সঙ্গে সঙ্গে পেয়ালায় দুধ চা, বিস্কুট দিয়ে আপ্যায়ন। এক কোম্পানিতে ১৩৫ জন থাকলেও এই বাহিনীতে রয়েছেন ৭৫। সপ্তাহখানেক আগে এই কমিউনিটি হলে পা রাখা জওয়ানরা এই শিবিরকে নিজের ঘরের মতোই মানিয়ে নিয়েছেন। বললেন তারাই।

[আরও পড়ুন: বিজেপিকে ৪ আসনে বেঁধে রাখার হুঁশিয়ারি, কটি আসন পাবে তৃণমূল? ভবিষ্যৎবাণী কুণালের]

আসলে প্রশাসন যে এই শিবিরে স্থায়ী রান্নাঘর, ডাইনিং, ১০টি শৌচালয় বানিয়ে দিয়েছে। ট্যাঙ্কে ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে ব্যবহৃত জল থেকে পানীয় জলের। রয়েছে দুটি জেনারেটর। গুয়াহাটির হেডকোয়ার্টারের শিবিরের মতো এই কমিউনিটি হলের আয়তন না হলেও এই ক্যাম্পই যেন তাদের দ্বিতীয় ঘর হয়ে উঠেছে। এখানেই যে তাদের থাকতে হবে কম করে দেড় মাস। এই কোম্পানির অসমিয়া অফিসার পদমাকান্ত দাস বলেন, “গুয়াহাটিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এই সময় ৩৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যেই ঘোরাফেরা করে। ফলে কোন অসুবিধে হচ্ছে না। আপাতত এই শিবির আমাদের কাছে দ্বিতীয় ঘর-ই হয়ে গিয়েছে।”

শিবিরে রয়েছেন অসম, মধ্যপ্রদেশ, বাংলা, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, মেঘালয় মিলিয়ে ৬ ভাষাভাষী জওয়ানরা। ভিন্ন ভিন্ন ভাষা। ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি। ভিন্ন খাদ্যাভাস। কিন্তু চেলিয়ামার শিবিরে সব যেন এক সুরে বাঁধা। এক হেঁশেলের এক উনুনেই হচ্ছে সব রান্না। ভোর চারটেয় চা-বিস্কুট। সকাল ৮টাতে আলুর পরোটা, দই, চাটনি। কিংবা ডালিয়া পোহা। সঙ্গে ড্রাই ফ্রুটস। দুপুর ১২টা বাজতেই ভাত কিংবা রুটি। সঙ্গে ডাল, ভাজা সবজি। মাছ কিংবা মুরগির মাংস। কখনও আবার ডিম। এমনকি মটনও। রাতেও প্রায় এক। এই ডায়েট চার্ট যে দিল্লি থেকে বাঁধা। কোম্পানির সাব ইন্সপেক্টর মেঘালয়ের বাসিন্দা আবুনডিয়াস সিয়াম বলেন, “এই খাদ্য তালিকার বাইরে যে আর কেউ কিছু খেতে পারবে না তা নয়। যার যা খুশি মিলেমিশে খেতেই পারেন।” এই কোম্পানির মূল মন্ত্রই যে একতা।

[আরও পড়ুন: এবার অনলাইনে ছুটির দরখাস্ত, সরকারি কর্মীদের জন্য বদলে গেল নিয়ম]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup অলিম্পিক`২৪ toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার