shono
Advertisement
Sociology

সোশিওলজিতে উচ্চশিক্ষার পরিকল্পনা, কোন কোন ক্ষেত্রে মিলতে পারে চাকরি?

গবেষণা এবং শিক্ষকতার পাশাপাশি সমাজবিজ্ঞান বিষয়টি পেশাগত দিক থেকে এখন বহুমুখী।
Published By: Sayani SenPosted: 05:15 PM May 09, 2024Updated: 05:16 PM May 09, 2024

বোর্ড পরীক্ষায় মেধাতালিকায় থাকা পড়ুয়াদের অনেকের লক্ষ‌্য সোশিওলজিতে উচ্চশিক্ষা। কেন পড়বে? কাজের সুযোগ কতটা? অনিন্দ‌্য সিংহ চৌধুরিকে জানালেন কলকাতা বিশ্ববিদ‌্যালয়ের সোশিওলজি বিভাগের অধ‌্যাপক সুদেষ্ণা বসু মুখোপাধ‌্যায়।

Advertisement

স্কুল-কলেজের চাকরি থেকে ব‌্যাঙ্কের কাজ। আমলা হওয়া থেকে এনজিও-তে যোগ দেওয়া। গবেষণা থেকে সাংবাদিক হওয়া। একটা সাবজেক্ট পড়ে এতগুলিতে কাজের সুযোগ? একদমই তাই। ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ড হোক বা দিল্লি বোর্ড, আর্টসের ছাত্রছাত্রীদের কাছে অন‌্যতম ‘ফেভারিট’ সাবেজেক্ট ‘সোশ‌্যাল সায়েন্স’ বা বলা ভালো সোশিওলজি কিংবা বাংলায় বললে সমাজবিজ্ঞান। আসলে, এখন ছাত্রছাত্রীদের লক্ষ‌্য থাকে, তারা এমন সাবজেক্ট পড়বে, যা থেকে অনেকদিকে যাওয়ার সুযোগ থাকে। তাই তো এখন শুধু ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং নয়, ক্লাস টুয়েলভে আর্টস নিয়ে পড়েও অনেকেই মেধাতালিকায় স্থান করছে। এমনকী, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এখন সায়েন্সের পাশাপাশি, বাণিজ‌্য বা আর্টসেও উজ্জ্বল ভবিষ‌্যৎ গড়ছে ছাত্রছাত্রীরা। আর সমাজবিজ্ঞানে তো ভবিষ‌্যৎ বেশ উজ্জল।

গবেষণা এবং শিক্ষকতার পাশাপাশি সমাজবিজ্ঞান বিষয়টি পেশাগত দিক থেকে এখন বহুমুখী। সমাজবিজ্ঞান নিয়ে স্নাতকের পর যদি সোশাল ওয়ার্ক নিয়ে স্নাতকোত্তর করা যায় তা হলে ছোট-বড় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় চাকরির সুযোগ মেলে৷ যদি সমাজবিজ্ঞান নিয়ে স্নাতক কোনও পড়ুয়া এমবিএ করেন সেক্ষেত্রে তিনি বিভিন্ন সংস্থায় হিউম্যান রিসোর্স অফিসার হিসাবেও কাজ পেতে পারেন। কারণ সমাজবিজ্ঞানের ছাত্রছাত্রীদের এইচআর হিসাবে নিয়োগ করে বহুজাতিক সংস্থাও। তাই শুধু ক্লাস টুয়েলভে নয়, স্নাতক স্তরেও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সমাজবিজ্ঞান নিয়ে পড়ার আগ্রহ বাড়ছে।

ব‌্যাঙ্কের চাকরি
সমাজবিজ্ঞানের স্নাতকের পর ছাত্রছাত্রীরা যদি স্নাতকোত্তরে সোশাল ওয়ার্ক সাবজেক্টে পাসের পর অনেকেই ব‌্যাঙ্কের ফ্রন্ট অফিস বা ব‌্যাক অফিসে কাজের সুযোগ পায়। প্রত্যেক বছরই ভালো পরিমাণ পড়ুয়া দেশ-বিদেশের নানা ব‌্যাঙ্কে চাকরি করছে।

[আরও পড়ুন: আইটি ফার্মে কর্মী ছাঁটাই? চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি সামলাতে এই কৌশল না জানলেই নয়]

কনটেন্ট অ‌্যানালিস্ট
সমাজবিজ্ঞানের সঙ্গে যেহেতু রিসার্চ মেথডোলজি ও রাশিবিজ্ঞানের সম্পর্ক রয়েছে, তাই সমাজবিজ্ঞান পড়ে অনেকেই কনটেন্ট অ‌্যানালিস্ট হিসাবে বিভিন্ন সংস্থায় কাজ করে। সরকারি ও বেসরকারি নানা সংস্থায় এই পেশায় রয়েছে। মার্কেট রিসার্চ অ‌্যানালিস্ট হিসাবেও অনেক জায়গায় যোগ দেয়।

শিক্ষকতার সুযোগ
মাস্টার্স করার পর কেউ কেউ বিএড করে স্কুলে শিক্ষকতা কিংবা নেট-সেট পাস করে পিএইচডি করে কলেজে-বিশ্ববিদ‌্যালয়ে শিক্ষকতার সুযোগ রয়েছে। এখন তো বেসরকারি স্কুল-কলেজেও অনেকেই চাকরি করছে।

সাংবাদিকতা পেশায়
সরাসরি সাংবাদিকতা পেশায় কিংবা সংবাদমাধ‌্যমে ‘কনটেন্ট’ তৈরিতে অনেকেই এই বিষয় পড়ে আসে।

আমলা হওয়ার সুযোগ
স্নাতক বা মাস্টার্সের পর কেউ ডব্লুবিসিএস বা আইএএস দিয়ে আমলা হওয়ার দিকেও এগিয়ে যায়।

এনজিও-তে কাজ
স্নাতকের পর অনেকেই ‘মাস্টার্স অফ সোশ‌্যাল ওয়ার্ক’ করে এনজিও কিংবা নানা দপ্তরের সমাজমূলক প্রজেক্টে কাজের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পায়। মাস্টার্সের পর পঞ্চায়েত ব‌্যবস্থায় অনেকেই নানা প্রোজেক্টে কাজ করছে।

গবেষণায়
আইআইটি খড়গপুরে গবেষণার সুযোগ রয়েছে। মনে রাখতে হবে, জেআরএফ রাখতে হবে, তাহলে আইআইটিতে সুযোগ থাকে গবেষণার। অনেকে কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ সোশাল সায়েন্স রিসার্চ’-এ গবেষণা করে। অনেকেই ‘ইনস্টিটিউট অফ ডেভলপমেন্ট স্টাডিজ’-এ গবেষণা করছে। আইএসআই-তে গবেষণার দারুণ সুযোগ রয়েছে। সঙ্গে আছে কলকাতা বিশ্ববিদ‌্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ‌্যালয়, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ‌্যালয়, বিদ‌্যাসাগর বিশ্ববিদ‌্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ‌্যালয়, পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ‌্যালয়, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ‌্যালয়, সিধো-কানহো বিশ্ববিদ‌্যালয়-সহ অনেক বিশ্ববিদ‌্যালয়ে মাস্টার্সের পর পিএইচডি করা যায়।

রাজ্যেই পড়ার সুযোগ
উচ্চমাধ‌্যমিকে অনেকে সমাজবিজ্ঞান সাবজেক্ট রাখে। পরবর্তীতে স্নাতকস্তরে কলকাতা বিশ্ববিদ‌্যালয় ও পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ‌্যালয়, বিদ‌্যাসাগর, বর্ধমান বিশ্ববিদ‌্যালয়, সিধো-কানহো, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ‌্যালয়, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ‌্যালয়ে অধীন বেশ কিছু কলেজে স্নাতক পড়ার সুযোগ রয়েছে। এই রাজে‌্যর বেসরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ‌্যালয়ে সোশিওলজি পড়ার সুযোগ রয়েছে। স্নাতকের পর মাস্টার্স পড়া যায় কলকাতা, বিদ‌্যাসাগর, বর্ধমান, যাদবপুর, উত্তরবঙ্গ, গৌড়বঙ্গ, সিধো কানহো বিশ্ববিদ‌্যালয়ে।

রাজ্যের বাইরে
স্নাতকের পর অনেকেই দেশের মধ্যে জেএনইউ, টিআইএস, দিল্লি, হায়দরাবাদ সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ‌্যালয়-সহ আরও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ‌্যালয়ে সোশিওলজি নিয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের অনেক ছাত্রছাত্রী দেশের নানা বিশ্ববিদ‌্যালয়ে প্রত্যেক বছরই উচ্চশিক্ষার জন‌্য যাচ্ছে। আসলে, সমাজবিজ্ঞান এমন একটি সাবজেক্ট যেখানে গবেষণার মতো কর্পোরেট সংস্থাতেও কাজের সুযোগ রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিষয়ে কাজের সুযোগ আগামীতে আরও বাড়বে।

[আরও পড়ুন: শুধু ডিগ্রি পেলেই হবে না, কেন পড়ুয়াদের দেশ-দশের খবর রাখাও প্রয়োজন? জানালেন বিশেষজ্ঞ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • বোর্ড পরীক্ষায় মেধাতালিকায় থাকা পড়ুয়াদের অনেকের লক্ষ্য সোশিওলজিতে উচ্চশিক্ষা।
  • গবেষণা এবং শিক্ষকতার পাশাপাশি সমাজবিজ্ঞান বিষয়টি পেশাগত দিক থেকে এখন বহুমুখী।
  • শুধু ক্লাস টুয়েলভে নয়, স্নাতক স্তরেও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সমাজবিজ্ঞান নিয়ে পড়ার আগ্রহ বাড়ছে।
Advertisement