ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: শুধু আর জি কর নয়, তরুণী চিকিৎসকের নৃশংস খুনে 'জাস্টিস' পেতে স্থায়ী মঞ্চ চাই। জুনিয়র চিকিৎসকদের এটাই এখন পাখির চোখ। আর জি করের আন্দোলনের কর্মসূচি ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে চলে গিয়েছে গোটা রাজ্যে। আর এই কর্মবিরতিকে আরও জোরদার করতে রোজই গুচ্ছ গুচ্ছ কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে। আর সেগুলো ছড়িয়ে দিতে আর জি করের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যোগ দিচ্ছে অন্য মেডিক্যাল কলেজগুলোও।
একটা সূত্র বলছে, এই আন্দোলনকে সমর্থন করতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অতি বামের একাংশ পরোক্ষভাবে এগিয়ে এসেছে। ইতিমধ্যেই মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, বর্ধমান এমনকি উত্তরবঙ্গ ও ঝাড়গ্রামের জুনিয়র ডাক্তাররা। সমর্থন দিয়েছেন পিজি. মেডিক্যাল কলেজ, আর জি করের প্রাক্তনীরাও। তাঁদের কেউ অধ্যাপক, কেউ আবার বেসরকারি বাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত।
[আরও পড়ুন: চলবে বাস-ট্রেন, খুলবে দোকানপাট? বিজেপির বন্ধ ভেস্তে দিতে কী পদক্ষেপ নবান্নের?]
ইতিমধ্যে সমাজমাধ্যমে 'অভয়ার বিচার' চাইতে আগামিকাল ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের ব্যানারে গণমিছিল হবে। দাবি, সন্দীপ ঘোষের সাসপেনশন, এমনকি কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েলের পদত্যাগও দাবি করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, জুনিয়র ডাক্তারদের গণমিছিল। কিন্তু আদৌ তা কতটা জুনিয়র বা ইন্টার্নদের দখলে থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ, সোমবার মেডিক্যাল কলেজে গণ কনভেনশনে যাঁরা বক্তা ছিলেন তাঁদের ৯০ শতাংশই অচিকিৎসক বা বিভিন্ন পেশার লোকজন। এখানেই শেষ নয়, আগামিকাল বুধবার এই মিছিল হবে শ্যামবাজার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত।
সোমবার মাঝরাত পর্যন্ত মেডিক্যাল কলেজে জিবি হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, আপাতত কর্মবিরতি প্রত্যাহার হবে না। উলটে তা চালিয়ে নিতে আর জি করের বাইরে একটি স্থায়ী মঞ্চ কোথায় করা যায় তা নিয়ে পোড় খাওয়া সমাজকর্মীদের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে। এদের বক্তব্য, যেহেতু আর জি করে এহেন ঘটনা ঘটেছে, তাই বিষয়টিকে মনে করাতে শ্যামবাজারে আশপাশে কোথাও মঞ্চ বেধে বিচার চাওয়া হবে। কারও আবার মত, শহরের প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলা বা ডোরিনা ক্রসিংকে বেছে নেওয়া হতে পারে। তবে এনিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও, 'জাস্টিস চাইতে' মঞ্চ যে হচ্ছে তা একরকম স্পষ্ট। মূল ইস্যু থেকে সরে গিয়ে কলেজের হস্টেল, বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের মতো বিষয়কে সামনে আনা হচ্ছে। সিজিও কমপ্লেক্সে তারা গিয়েছিল, কিন্তু সিবিআই জানিয়ে দিয়েছে, আদালতের বিচর্য বিষয় বলে তারা এড়িয়ে গিয়েছে। তাই রোগী দেখা বন্ধ রেখে, পঠনপাঠন শিকেয় তুলে কর্মবিরতির নামে কার্যত আন্দোলনটাকেই সামনে আনা হচ্ছে। তবে একাংশ চাইছে আপাতত কর্মবিরতি স্থগিত রেখে পঠনপাঠনে ফিরে আসতে।