সৈকত মাইতি, তমলুক: কাঁচা সবজি দিয়ে তৈরি মা কালীর প্রতিমা! পরনের শাড়ি থেকে অস্ত্র, সবটাই তৈরি সবজি দিয়ে। মণ্ডপে থাকবে প্রকৃতির ছোঁয়া। অভিনব পুজো ঘিরে রীতিমতো উন্মাদনা হয়েছে তমলুকজুড়ে।
তমলুকে কালীপুজো মানেই থিমের ছড়াছড়ি। স্থানীয়দের দাবি, গত কয়েক বছরে বারাসতের পর থিমের পুজোয় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে পূর্ব মেদিনীপুরের এই শহর। সেই ধারা বজায় রেখে তমলুকের কলেজপাড়ার ভাই ভাই সংঘ তাদের ৩৪ তম বর্ষের পুজোয় তুলে ধরছে অভিনব প্রতিমা ও পুজো মণ্ডপ। থিমের নাম, 'সুফলা-শস্যশ্যামলা, প্রকৃতির বুকে সবজির প্রতিমা।'
মণ্ডপ থেকে শুরু করে প্রতিমায় লেগেছে অভিনবত্বের ছোঁয়া। হরেক রকম গাছ ও পাখির শব্দ থাকবে মণ্ডপে। দর্শনার্থীদের মনে হবে যেন এক টুকরো সাজানো বাগান। যার মধ্যে মা বিরাজ করবেন সবজির প্রতিমা রূপে।
সবজির প্রতিমা কীভাবে তৈরি করা হল? প্রতিমা শিল্পীদের থেকে জানা গিয়েছে, মূলত মাটির প্রতিমার উপর আঠার সাহায্যে গোটা সবজি কেটে লাগানো হয়েছে। ব্যবহার করা হয়েছে প্রায় এক কুইন্টাল আলু। থাকছে পটল, বেগুন, বরবটি, বাঁধাকপি, ফুলকপি, কচু, কাঁচালঙ্কা, কুমড়ো-সহ বিভিন্ন সবজি। ভোলানাথের বাঘছাল বানাতে ব্যবহার হয়েছে আনারস। বুড়ো শিবের জটা তৈরি হয়েছে বরবটি দিয়ে। মুখমণ্ডল সেজে উঠেছে বাঁধাকপির এক একটা পাপড়িতে। একইভাবে শিবের রুদ্রাক্ষ তৈরিতে ব্যবহার হয়েছে কচু। সাপের গায়ের ছাল তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে মানকচু। তবে সবজির প্রতিমা সতেজ থাকবে কী করে? তার ব্যবস্থাও করেছে পুজো কমিটি। এই পুজো মণ্ডপজুড়ে থাকছে বাতানুকূল পরিবেশ।
প্রতিমা শিল্পী ধীমান মাইতি বলেন, "নানান রকমের সবজির সমাহারে প্রায় ১৫ ফুট উচ্চতার প্রতিমা সাজিয়ে তোলা হয়েছে। যা দর্শনার্থীদের মন কেড়ে নেবে বলে আমাদের বিশ্বাস।" পুজো কমিটির সম্পাদক দেবরূপ মিদ্যা বলেন, "সম্প্রতি প্রাকৃতিক দুর্যোগে জেলায় সবজি চাষ প্রায় ধুলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছে। তাই জনসচেতনতা গড়ে তুলতে প্রকৃতি মায়ের আরাধনায় এবারে আমরা সম্পূর্ণ সবজির প্রতিমা গড়ে তুলেছি।"