সুব্রত বিশ্বাস: কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা পার। তার পরেও দোষারোপের পালা চলছে। এবার সরাসরি মালগাড়ির মৃত চালকের বিরুদ্ধেই দায়ের হল এফআইআর। সূত্রের খবর, তুলনামূলক দ্রুতগতিতে চলছিল মালগাড়িটি।
সূত্রের খবর, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের এক মহিলা যাত্রী নিউ জলপাইগুড়ির জিআরপির কাছে অভিযোগ করেছেন। দাবি, ঘণ্টায় মালগাড়িটির গতি থাকার কথা ১০ কিলোমিটার কিন্তু বাস্তবে মালগাড়িটি চলছিল প্রতি ঘন্টায় ৭৮ কিলোমিটার গতিতে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে যে চালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে, মালগাড়ির সেই লোকো পাইলট অনিল কুমারের মৃত্যু হয়েছে দুর্ঘটনাস্থলে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দুর্ঘটনা এড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন লোকো পাইলট, নয়তো দুর্ঘটনার আগে মালগাড়ির ইঞ্জিন থেকে লাফিয়ে নেমে যেতে পারতেন। নিজের প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করতেন। কিন্তু তা করেননি।
[আরও পড়ুন: দুর্গাপুরে ডাক-কর্মীকে মাঝরাস্তা থেকে অপরহণের চেষ্টা! কাঠগড়ায় যোগীরাজ্যের পুলিশ]
মঙ্গলবার সাতসকালে মালগাড়ির ধাক্কায় দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। রেলের তরফে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল ৫ টা বেজে ৫০ মিনিট থেকে রাঙাপানি ও আলুয়াবাড়ির মাঝের অটোমেটিক সিগন্যাল বন্ধ ছিল। ফলে সকাল থেকেই ট্রেন চলাচল হচ্ছিল অত্যন্ত ধীর গতিতে। পেপার লাইন ক্লিয়ার টিকিটের মাধ্যমে চলাচল করছিল ট্রেন। সকাল ৮ টা বেজে ২৭ মিনিট নাগাদ পেপার মেমো অর্থাৎ কাগুজে ছাড়পত্র পেয়েই রাঙাপানি স্টেশন ছেড়ে এগোয় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। জানা গিয়েছে, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে TA912 ফর্ম দিয়েছিলেন রাঙাপানির স্টেশন মাস্টার। যার ভিত্তিতে সিগন্যাল না থাকলেও নির্দিষ্ট গতিতে ট্রেন এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন চালক।
৮ টা বেজে ৪২ মিনিট নাগাদ রাঙাপানি স্টেশন ছাড়ে মালগাড়িটি। এতেই মাথাচাড়া দিচ্ছে একাধিক প্রশ্ন। দুটি ট্রেনের মাঝে সময়ের ব্যবধান ছিল ১৫ মিনিট। পেপার মেমোয় যদি কোনও ট্রেন চালানো হয়, সেক্ষেত্রে নিয়মই হচ্ছে গতি প্রতি ঘণ্টায় হবে ১০ কিমি। এতেই প্রশ্ন তবে কীভাবে পনেরো মিনিট ব্যবধানে চলা দুটি ট্রেন এত কাছে এল? তবে কি কাগুজে ছাড়পত্রের নিয়ম মানেননি চালক? এর প্রেক্ষিতেই মালগাড়ির চালকের বিরুদ্ধে দায়ের হল অভিযোগ।