সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘদিন ধরেই রোগে ভুগছিলেন পাকিস্তানের (Pakistan) প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মুশারফ (Pervez Musharraf)। অবশেষে রবিবাসরীয় সকালে দুবাইয়ের মার্কিন হাসপাতালে ৭৯ বছর বয়সি মুশারফের মৃত্যু হল। তাঁর প্রয়াণ মনে করিয়ে দিচ্ছে কার্গিল যুদ্ধের কথা। একই সঙ্গে ২০০২ সালে সবাইকে চমকে দিয়ে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ীর সঙ্গে তাঁর করমর্দনের কথাও। তবে ইতিহাসের পাতায় মুশারফের সম্পর্কে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মূল্যায়ন অবশ্য এটা যে, তিনি হলেন কাশ্মীর সমস্যার সমাধানের কাছাকাছি পৌঁছনো পাক প্রেসিডেন্ট। তাঁর আমলেই উপত্যকা ইস্যু সমাধানের সবচেয়ে কাছে পৌঁছেছিল। পরবর্তী সময়ে যা ক্রমেই ফিকে হয়ে গিয়েছে।
১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের মসনদে বসে পড়েন তিনি। ইতিহাসে যা ‘ব্লাডলেস ক্যু’ নামেই পরিচিত। নওয়াজ শরিফকে সরিয়ে তিনি ক্ষমতা দখল করেন। মুশারফের আমলে পাকিস্তানে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ে। বার্ষিক আর্থিক বৃদ্ধি পৌঁছয় ৭.৫ শতাংশে, যা তিন দশকের মধ্যে ছিল সর্বোচ্চ।
[আরও পড়ুন: পাক পুলিশের সদর দপ্তরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রচুর হতাহতের আশঙ্কা, দায় স্বীকার তালিবানের]
তাঁর আমলেরই ফসল কার্গিল যুদ্ধ। লাদাখের বালটিস্তান জেলার অন্তর্গত কার্গিলে ঢুকে পড়েছিল পাক সেনা। কাছেই পাক সীমান্ত ফলে অস্ত্র সরবরাহের সুবিধাও ছিল। এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান পিছু হটে। ফৌজ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। যদিও মুশারফ চেষ্টা করেছিলেন কাশ্মীরপন্থী জঙ্গিদের ঘাড়ে ওই হামলার দায় চাপাতে। কিন্তু যা প্রমাণ মেলে, তাতে এটা পরিষ্কার হয়ে যায় পাক সেনা এই যুদ্ধের সঙ্গে ভালভাবেই যুক্ত ছিল।
এর ঠিক তিন বছর পর। ২০০২ সালে মুশারফ একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য পেশের পরই আচমকা সেখানে উপস্থিত বাজপেয়ীর দিকে এগিয়ে গিয়ে করমর্দন সারেন। প্রস্তাব দেন শান্তি বৈঠকের। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কাশ্মীর সমস্যার সমাধানের সবচেয়ে কাছাকাছি ভারত ও পাকিস্তান পৌঁছেছিল মুশারফের আমলেই। কিন্তু তাঁর আমল পেরোতে না পেরোতেই পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণ বদল ঘটে। যা আজও একই রয়েছে। মুশারফের মৃত্যুতে সেই ইতিহাসই যেন মনে পড়ছে সবচেয়ে বেশি।