রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: কলকাতা পুরবোর্ড দখল বিজেপির কাছে কার্যত সোনার পাথর বাটি। তা সত্ত্বেও ইস্তাহার প্রকাশের সময় নেতাদের দাবি, “আমাদের হাতে মেয়র হওয়ার লোক রয়েছে।” শুধু তাই নয়, সুভাষচন্দ্র বসু, চিত্তরঞ্জন দাসের নাম উদ্ধৃত করে বলেছেন, তাঁদের যোগ্য উত্তরসূরি বিজেপিতেই রয়েছে। কলকাতা পুরভোটে কাকে মেয়র পদপ্রার্থী করবে বিজেপি? এই প্রশ্নের উত্তরে বুধবার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) বলেন, “বিজেপিতে একাধিক রাষ্ট্রভক্ত আছে। চিত্তরঞ্জন দাস, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর চেয়ারের মর্যাদা রাখার মতো কাউকে দেব। রাষ্ট্রপ্রেমী, সনাতনী সংস্কৃতি, জাতীয়তাবাদী বোধ সবই থাকবে।” যদিও দলের অন্দরে প্রার্থী তালিকা নিয়েই চাপা অসন্তোষ রয়েছেই।
শাসকদলের সঙ্গে টক্কর দেওয়ার মতোই পরিচিত কোনও মুখ প্রার্থীর নাম তালিকায় নেই। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি নেতৃত্বের দাবি নিয়ে দলের মধ্যেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে। পুরভোটের আগে প্রচার থেকে শুরু করে দলের সংগঠন সবক্ষেত্রেই ছন্নছাড়া অবস্থা বিজেপির। বহু নেতা-কর্মী প্রচারে নামেননি। গত ২০১৫ সালের দখলে থাকা সাতটি আসন এবার ধরে রাখা যাবে কি না তা নিয়েও সন্দিহান দলের একাংশ। তখন দলের সম্ভাব্য মেয়র মুখ কে? তার স্পষ্ট জবাব বুধবার রাজ্য দপ্তরে ইস্তাহার প্রকাশের দিনও মিলল না। উলটে বিজেপি নেতাদের দাবি, কলকাতা পুরসভার মেয়রের চেয়ারের মর্যাদা রক্ষা করবে রাষ্ট্রপ্রেমী কাউকেই মেয়র করা হবে।
[আরও পড়ুন: KMC Election: যাত্রীদের ইউনিফায়েড কার্ড থেকে দুর্গাপুজোকে বিশেষ মর্যাদা, প্রকাশ্যে বিজেপির ইস্তেহার]
পাশাপাশি, মেয়র মুখের কাঁটা এড়াতে কলকাতা পুরসভার তৃণমূলের প্রাক্তন তিন মেয়রকে এদিন আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছে বিজেপি নেতৃত্বকে। এদিকে, বিজেপি কি কলকাতা পুরভোটে লড়ার আগেই ব্যাকফুটে? প্রার্থী তালিকা থেকে ইস্তাহার প্রকাশ সবই হয়েছে ঢিমেতালে। প্রচারেও সেভাবে দেখা যাচ্ছে না বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। প্রশ্নের উত্তরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জবাব, বিজেপি তার পদ্ধতি অনুযায়ী প্রার্থী ঘোষণা থেকে ইস্তাহার প্রকাশ করেছে। কারও কারও আশঙ্কা ছিল বিজেপি প্রার্থী পাবে না। প্রতি ওয়ার্ড থেকে দশজনের বেশি আবেদন দিয়েছিলেন। প্রচারেও অল্প সময় রয়েছে।
শুভেন্দুর দাবি, কলকাতা পুর এলাকার ৯০ শতাংশ বাড়িতে হাতে হাতে ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দলের ইস্তাহার পৌঁছে দেওয়া হবে। এদিকে, বিজেপির পুরভোটের ইস্তাহার এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ হলেও গত সোমবার রাতেই তা প্রকাশ্যে চলে আসে। ভবিষ্যত কলকাতা গড়ার স্বপ্ন দেখালেও তড়িঘড়ি করে ইস্তাহার প্রকাশ করে সামান্য কিছু সংশোধন ও সংযোজনও করতে হল গেরুয়া শিবিরকে। এদিন ইস্তাহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে শুভেন্দু ছাড়াও ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী, রাজ্য নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, শমীক ভট্টাচার্যরা। ইস্তাহারে স্বাস্থ্য, সুরক্ষা, স্বচ্ছতা, শিক্ষা ও সংস্কৃতি এই পাঁচটি বিষয়ের শিরোনামে একাধিক প্রতিশ্রুতি থাকলেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে নতুন কোনও দিশা স্পষ্ট করা হয়নি বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।