ইকুইটি ফান্ডই আজকের বাজারে লক্ষ্যভেদের চাবিকাঠি হতে পারে। রিস্ক আছে অবশ্যই, তবে রিটার্নের সম্ভাবনাও যথেষ্ট। বিস্তারিত জানাল টিম সঞ্চয়
ইকুইটি ফান্ডগুলি স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করে সম্পদ গঠন করার উদ্দেশ্য নিয়ে। বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি-র নির্দেশিকা মেনে, এই ধরনের স্কিমের ফান্ড ম্যানেজাররা তাঁদের মোট অ্যাসেটের অন্তত ৬৫ শতাংশ, ইকুইটি সংক্রান্ত ইনস্ট্রুমেন্টগুলিতে বিনিয়োগ করেন।
এই ফান্ডের অ্যাসেট অ্যালোকেশন সেবি-নির্ধারিত স্কিমের শ্রেণিতেই পড়ে এবং লগ্নির নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য মেনেই এগোয়। এক্ষেত্রে অ্যাসেট অ্যালোকেশন করা যেতে পারে মূলত তিন ধরনের কোম্পানির স্টকে-লার্জ ক্যাপ, মিড ক্যাপ এবং স্মল ক্যাপ বা নানা ধরনের ‘কম্বিনেশনে’। যদিও তা নির্ভর করছে স্কিমগুলির অ্যাসেট অ্যালোকেশন স্ট্র্যাটেজি এবং বাজারের পরিস্থিতির উপর। আবার, বিনিয়োগের ধরন দু’প্রকার হতে পারে। হয় ‘ভ্যালু-ওরিয়েন্টেড’, আর না হয় ‘গ্রোথ-ওরিয়েন্টেড’। বাজারের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে, সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করতে কী কিনবেন আর কী বেচবেন-চূড়ান্ত সেই সিদ্ধান্ত নেবেন একমাত্র ফান্ড ম্যানেজারই।
[আরও পড়ুন: মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নি করতে চান, তাহলে অবশ্যই জেনে নিন এই বিষয়গুলি]
মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের একাধিক সুবিধা আছে–
ক. বিশেষজ্ঞদের পরামর্শমতো অর্থের পরিচালনা
খ. উচ্চ রিটার্ন পাওয়ার আশা
গ. স্বল্প মূল্য
ঘ. সুযোগ-সুবিধা
ঙ. ডাইভারসিফিকেশন
চ. সিস্টেম্যাটিক ইনভেস্টমেন্ট
ছ. সাবলীলতা
জ. লিকুইডিটি
ঝ. ডিভিডেন্ড থেকে সম্ভাব্য আয়
ঞ. ট্যাক্স সেভিংস (বর্তমান আয়কর আইন অনুসারে)
উপযোগিতা কীসে?
ইকুইটি ফান্ডে লগ্নি যেন আপনার রিস্ক প্রোফাইল, বিনিয়োগের পরিধি এবং লক্ষ্যের সঙ্গে সাযুজ্য বজায় রেখে হয়। সাধারণভাবে বলতে গেলে, যদি আপনার দীর্ঘমেয়াদী টার্গেট থাকে (ধরা যাক, পঁাচ বছর বা তার বেশি) তাহলে ইকুইটি ফান্ডে বিনিয়োগ করাই শ্রেয়। এতে আপনার ফান্ডটি বাজারে উত্থানপতনের মোকাবিলা করার জন্য জরুরি সময়টুকু পেয়ে যাবে। ঝুঁকি নিতে পিছপা হন না যাঁরা, এবং যাঁদের বিনিয়োগের পরিধি অনেক বড়, সেই সমস্ত ইনভেস্টরদের জন্য এই ধরনের ফান্ড আদর্শ।
কীভাবে কর ধার্য হয়?
যখন এই ধরনের স্কিমের ইউনিটগুলি অন্তত এক বছর বা তার থেকে কম সময়ের জন্য ধরে রাখা হয়, তখন লব্ধ ক্যাপিটাল গেইনসকে ‘শর্ট টার্ম ক্যাপিটাল গেইনস’ (এসটিসিজি) বলে অভিহিত করা হয়। এক বছর সময়কাল পর্যন্ত লগ্নিতে এই ধরনের ক্যাপিটাল গেইনসের উপর ১৫ শতাংশ হারে কর ধার্য হয়।
যখন এই ধরনের স্কিমের ইউনিট এক বছর বা তারও বেশি সময়ের জন্য ধরে রাখা হয়, তখন লব্ধ গেইনসকে বলা হয় ‘লং টার্ম ক্যাপিটাল গেইনস’ (এলটিসিজি)। ১ লক্ষের বেশি পর্যন্ত এলটিসিজি-র উপর ১০ শতাংশ হারে কর ধার্য হয়। তবে তা ইনডেক্সেশন-এর সুবিধা ছাড়াই। ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত এলটিসিজি সম্পূর্ণ কর-মুক্ত।
বিনিয়োগকারীদের শিক্ষিত এবং সচেতন করার উদ্যোগ কেবলমাত্র রেজিস্টার্ড মিউচুয়াল ফান্ডেই লগ্নি করা উচিত। এমন ফান্ড, যা সেবির ‘ভেরিফায়েড’ ওবেসাইট-ভুক্ত। এই নিয়ে বিশদ তথ্য পেতে www.sebi.gov.in সাইটটি দেখতে পারেন। ওয়ান-টাইম কেওয়াইসি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা নিয়ে তথ্য পেতে, ঠিকানা-ফোন নম্বর এবং ব্যাঙ্ক তথ্যের পরিবর্তন প্রভৃতি তথ্যের খোঁজও এখান থেকে পেয়ে যাবেন। অভিযোগ জানাতে সেবির www.scores.gov.in সাইটটি দেখুন। মিউচুয়াল ফান্ডস-এর সাইটে গিয়ে ‘ইনভেস্টর এডুকেশন’ অংশটিও দেখতে পারেন, যদি ‘ইনভেস্টর এডুকেশন অ্যান্ড অ্যাওয়েরনেস ইনিশিয়েটিভস’ নিয়ে আরও তথ্য চান।
বি. দ্র.- এই তথ্যসমূহ সাধারণ লগ্নিকারীদের উদ্দেশ্যেই, কোনও নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যপূরণের স্বার্থে নয়। গ্রাহকের খরচ বা ক্ষতির জন্য কোনওভাবেই কোনও মিউচুয়াল ফান্ডকে দায়ী করা যাবে না। রিটার্ন নিয়ে কোনও গ্যারান্টিও এমএফ সংস্থার করা উচিত নয়।