shono
Advertisement

এপারের বীজমন্ত্রে মন্দ্রিত ওপার বাংলা, রমজানে খেয়ে ফেলা ফলের বীজ এবার যমুনার তীরেও

বাংলাদেশের সবুজ বিপ্লবের নেপথ্যে দুই পরিবেশপ্রেমী।
Posted: 01:11 PM Jun 17, 2022Updated: 01:20 PM Jun 17, 2022

গৌতম ব্রহ্ম: রমজানের ‘বীজমন্ত্রে’ আগেই মন্দ্রিত হয়েছিল পদ্মার পাড়। এবার যমুনাও শুনল সেই ‘বীজমন্ত্র’। যমুনার পাড়ে রমজান (Ramjan) মাসে জমানো ফলের বীজ ছড়ানো হল। এবার বর্ষা নামলেই যমুনার (Yamuna) পাশে বাঁধের ধারে মাথা তুলবে আম, জাম, পেঁপে, বাতাবির মতো গাছ। জোয়ারের জল বা বন্যার জলে প্লাবিত হবে, এমন নয় এই জমি। এসব গাছ ভূমিক্ষয় রোধ করবে। তাছাড়া যে মাটিতে বীজ ছড়ানো হয়েছে, তা সরকারি জমি। কেউ কেটে মুড়িয়ে দিয়ে যাবে, এই আশঙ্কাও নেই। বাংলাদেশের এই ‘সবুজ বিপ্লবে’র মূল কারিগর সফি হারেশি এমনই জানাচ্ছেন। আর উল্লেখযোগ্য ঘটনা, সফি বীজ ছড়ানোর পরেই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নেমেছে।

Advertisement

বাংলাদেশের সবুজ বিপ্লবের কারিগর সফি হারেশি।

‘আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে’ গাছ লাগানোর রেওয়াজ বহুদিনের। এই দিনটিকেই সবুজ বাহিনী বেছে নিয়েছে গেরিলা গার্ডেনিংয়ের জন্য। এমনটাই জানালেন উদ্যোগের অন্যতম কারিগর শিক্ষক পিনাকী গুহ। তিনিই এই রমজানি বীজমন্ত্রকে (Seeds) বাংলা তথা দেশজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার কর্মযজ্ঞ শুরু করেছেন। পিনাকীবাবু জানালেন, ”রমজান মাসে অর্থাৎ বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ জুড়ে যে ফল খাওয়া হয়, তারই বীজ ধুয়ে শুকিয়ে রেখেছিলাম বর্ষার অপেক্ষায়। দানা পোঁতা, বেড়া দেওয়ার মত মানুষের যত্নের অপেক্ষায় না থেকে পয়লা আষাঢ়, বর্ষা সমাগত যখন, আমরা প্রকৃতির দান ছড়িয়ে দিলাম প্রকৃতির মধ্যেই। বর্ষার জল বাকি কাজটা নিজেই করে নেবে।”

এপাড়ের শিক্ষক পিনাকী গুহ খাসনবিশ।

[আরও পড়ুন: কাজে নয়, প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়েছিলেন বধূ! ডেবরায় মহিলাকে নেড়া করার ঘটনায় অভিযোগ স্বামীর

এই পদ্ধতিতে বাগান তৈরির পোশাকি নাম গেরিলা গার্ডেনিং। যা পিনাকীবাবুকে শিখিয়েছেন পরিবেশকর্মী মন্টু হাইত। ফলের গাছ যত থাকবে, লোকালয়ে ততই পাখি, মৌমাছি, কাঠবিড়ালির মত প্রকৃতির সন্তানেরা নির্ভয়ে নিজেদের বাসস্থানে থাকতে পারবে। নিশ্চিন্তে নিজেদের খাবার খুঁজে নেবে। মানুষের দয়ার দান তাদের আর প্রয়োজন হবে না। মানুষের সঙ্গে সঙ্গে গাছ, পাখি, পিঁপড়ে, মৌমাছি – সবার জন্য উন্মুক্ত হোক প্রকৃতির ভাণ্ডার। এই দর্শনের উপর দাঁড়িয়েই ‘বীজমন্ত্র’ জপেছেন পিনাকী গুহ, মন্টু হাইতরা। আসিফ সাজিল নামে বাংলাদেশের এক পক্ষী বিশারদও এই সবুজমন্ত্রে শামিল হয়েছেন।

[আরও পড়ুন: অঙ্গনওয়াড়িতে চাকরির নামে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ, কাঠগড়ায় তৃণমূল বিধায়ক]

পিনাকীবাবু নিজেও এবার আমতলা-সহ বহু জায়গায় বীজ ছড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। মাস্টারমশাইয়ের পর্যবেক্ষণ, ”হিন্দু-মুসলমানের দেশে, হিস্টিরিয়াগ্রস্ত নরনারীর দেশে আবার এসেছে আষাঢ়। এখনও মেঘ আসে প্রাগৈতিহাসিক পথ চিনে, এখনও শস্য ফলে, এখনও নতুন আশার বীজ অঙ্কুরিত হয় এখানে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement