নব্যেন্দু হাজরা: মন্ত্রিসভার রদবদলের আগে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ তিন দপ্তরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। কলকাতায় পরিবহণ দপ্তরের এক অনুষ্ঠানে গিয়ে তাঁকে বলতে শোনা গেল, “আমি থাকি বা না থাকি, এই পৃথিবী চলবে। কলকাতা চলবে।” ফিরহাদের এই মন্তব্যের পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করছে, তাহলে কি পরিবহণ দপ্তর তাঁর হাতছাড়া হতে চলেছে?
পরিবহণ দপ্তরের উদ্যোগে কলকাতায় ১১৮০টি ই-বাস চলবে। বুধবার টাটার সঙ্গে সেই বাসেরই চুক্তি স্বাক্ষর করেন পরিবহণ মন্ত্রী (Transport Minister)। সেই অনুষ্ঠানেই তাঁকে বলতে শোনা যায়,’হাম রহে ইয়া না রহে কাল, কাম চলতা রহেগা।’ ফিরহাদ আরও বলেন,”মুখ্যমন্ত্রী চান রাজ্যের সর্বত্র RTO হোক। সেই কাজ আমি সচিবদের দিয়ে যাচ্ছি।” ফিরহাদের এই মন্তব্যে তাঁর পরিবহণ দপ্তর থেকে সরে যাওয়ার জল্পনা আরও বাড়ে। যদিও পরে মন্ত্রিসভার রদবদল প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ফিরহাদ বলেন, “এর সঙ্গে মন্ত্রিসভার কোনও সম্পর্ক নেই। আমার ৬৪ বছর বয়স হয়ে গেল। সেজন্যই বললাম কাল হো না হো।”
[আরও পড়ুন: ‘চক্রান্ত হচ্ছে’, হাসপাতাল থেকে বেরনোর পথে মুখ খুললেন অর্পিতা, নীরব পার্থ]
এমনিতে ফিরহাদের একার কাঁধে বহু দায়িত্ব। তিনি কলকাতার মেয়র। একাধারে তিনি রাজ্যের পরিবহণ, পুর ও নগরোন্নয়ন এবং আবাসন মন্ত্রী। সেই সঙ্গে দলেরও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় আছেন তিনি। শোনা যাচ্ছে, মন্ত্রিসভার রদবদলের মাধ্যমে ফিরহাদের কাজের বোঝা খানিকটা হালকা করে দিতে পারেন মমতা। সেক্ষেত্রে কলকাতার মেয়রকে পরিবহণ দপ্তর থেকে অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে।
[আরও পড়ুন: রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে পরেশ অধিকারীকে সরানোর দাবি, হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের]
আসলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলে (TMC) ‘এক ব্যক্তি-এক পদ’ নীতি চালু করার পক্ষে। জেলাস্তরে বহু ক্ষেত্রে অভিষেক সেটা করেও ফেলেছেন। মন্ত্রিসভার এই নতুন রদবদলের মাধ্যমে সেই কাজে আরও খানিকটা এগোতে পারে তৃণমূল। কিন্তু ফিরহাদের কাছে এসে এই নীতি ধাক্কা খেয়ে যাচ্ছে বারবার। মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছাতেই ফিরহাদ একাধিক দপ্তরের মন্ত্রী রয়েছেন। তবে শোনা যাচ্ছে এবার খানিকটা হালকা করা হতে পারে তাঁর বোঝা। তাছাড়া ফিরহাদ নিজেও পরিবহণ দপ্তরে খুব একটা আগ্রহী ছিলেন না। সেকারণেই আরও এই দপ্তরটি সরানো হতে পারে। যদিও শেষপর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটা আগে থেকে আন্দাজ করা খুব কঠিন।