অর্ণব আইচ: বর্ষবরণের আগেই রাজ্যে দুই জঙ্গি অনুপ্রবেশ করেছে বলে সতর্কতা গোয়েন্দাদের৷ জঙ্গি সংগঠন নিও জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-র ওই সদস্যদের সন্ধানে চলছে গোয়েন্দাদের তল্লাশি৷ আইএস-এর আদলে আত্মঘাতী বাহিনী তৈরি করেছে নিও জেএমবি৷ তাই তাদের বিষয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নন কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের গোয়েন্দারাও৷
জঙ্গিদের সফট টার্গেট কলকাতা হতে পারে, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না গোয়েন্দারা৷ আইএস বা নিও জেএমবি জঙ্গিদের ঠেকাতে এবার কলকাতা পুলিশের হাতে উঠে আসছে হালকা, কিন্তু অত্যন্ত কার্যকর অস্ত্র ৫.৫৬ ক্যালিবার বা ইনসাস৷ ঘরের কোণে জঙ্গিরা গা ঢাকা দিলেও রক্ষা নেই৷ একে ৪৭-এর উপর বসানো হচ্ছে ‘কর্নার শট’৷ এই ছোট ভিডিও স্ক্রিন দেখেই খোঁজ মিলবে জঙ্গিদের৷
আইএস জঙ্গি নেতা মসিউদ্দিন ওরফে মুসা কলকাতার মাদার হাউসে হামলা চালিয়ে বিদেশিদের হত্যার ছক কষেছিল৷ সম্প্রতি ঢাকার আশকোনায় তল্লাশি চালিয়ে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা উদ্ধার করেন ‘সুইসাইড ভেস্ট’, যা ব্যবহার করে ফিদায়েঁ ও আত্মঘাতী জঙ্গিরা৷ উদ্ধার হয় ১৭টি গ্রেনেডও৷ আগেই কলকাতার গোয়েন্দাদের কাছে খবর ছিল যে, আত্মঘাতী বাহিনী তৈরি করছে নিও জেএমবি৷ বাংলাদেশের বাইরেও কলকাতা-সহ এই রাজ্যও যে নিও জেএমবি জঙ্গিদের ‘টার্গেট’, তা ধৃত ৬ জেএমবিকে জেরা করে জানতে পারে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সও৷ এর পরই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, সালেম নামে এক নিও জেএমবি জঙ্গি তার এক সঙ্গীকে নিয়ে প্রবেশ করেছে রাজ্যে৷ গত কয়েক মাসের মধ্যে ওই সংগঠনের আরও কয়েকজন জঙ্গি রাজ্যে ঢুকেছে বলেও গোয়েন্দাদের কাছে খবর৷ কিন্তু তাদের সন্ধান মেলেনি৷ এবার ঢাকার জঙ্গিদের ডেরা থেকে ‘সুইসাইড ভেস্ট’ উারের পর গোয়েন্দাদের সন্দেহ, আইএস-এর মতো নিও জেএমবি আত্মঘাতী হামলার ছক কষতে পারে কলকাতা-সহ দেশের যে কোনও শহরেই৷
জঙ্গি দমন করতে যতটা সম্ভব তাড়াতাড়ি পুলিশের হাতে আরও অত্যাধুনিক কিছু অস্ত্র তুলে দিচ্ছে লালবাজার৷ তার মধ্যে রয়েছে বিদেশের দশটি স্নাইপার৷ এ ছাড়াও ৫.৫৬ ইনসাসও তুলে দেওয়া হচ্ছে কলকাতা পুলিশের বিশেষ বাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনীর হাতে৷ ইছাপুর গান অ্যান্ড শেল কারখানা থেকে এই ধরনের ৮৮টি অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় রাইফেল আনা হচ্ছে৷ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অস্ত্রগুলি তুলনামূলকভাবে হালকা৷ তাই বহনে সুবিধা৷ এর গুলিও ছোট মাপের৷ একবার ট্রিগার টিপলে তিনটি বুলেট একসঙ্গে বের হয়ে ছুটে যেতে পারে শত্রুর দিকে৷
একই সঙ্গে একে ৪৭ রাইফেল দিয়েও যাতে সহজে জঙ্গিদের হদিশ মেলে, তার জন্য যে অস্ত্রগুলি কলকাতা পুলিশের হাতে রয়েছে, তারও আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে৷ এই স্বয়ংক্রিয় রাইফেলের উপর বসানো হচ্ছে ‘কর্নার শট’, আসলে যা ছোট ভিডিও স্ক্রিন৷ কোনও ঘরের মধ্যেও জঙ্গিরা লুকিয়ে থাকলে এই ভিডিও সি্নের মাধ্যমে তাদের সন্ধান মেলা সুবিধাজনক হবে৷ তখন রাইফেলের নল ঘুরিয়েও গুলিবর্ষণ করতে পারে কমান্ডো বাহিনী বা জঙ্গিদমনে থাকা পুলিশের বিশেষ বাহিনী৷ অন্ধকারেও জঙ্গিদের দমন করার ব্যবস্থাও একে ৪৭-গুলিতে থাকছে বলে জানিয়েছে পুলিশ৷
The post রাজ্যে ঢুকেছে দুই জঙ্গি, সতর্ক গোয়েন্দারা appeared first on Sangbad Pratidin.