অর্ণব আইচ: এ শহরে নতুন এসেছেন। কলকাতার বন্ধুদের মুখে ধর্মকথা শুনে আপ্লুত জামশেদপুরের যুবক। তাঁদের সঙ্গে গঙ্গার ধারে বসে কয়েক ছিলিম গাঁজাও সেবন করেছিলেন রোহিত যাদব। যখন নেশার ঘোর কাটল, তখন টের পেলেন, ব্যাগ থেকে উধাও ৩৫ হাজার টাকা! এই চুরির তদন্তে নেমে কুখ্যাত ‘ঘাট গ্যাং’-এর তিন সদস্যকে ধরে ফেলল পুলিশ। চক্রের পাণ্ডা শম্ভু মণ্ডলকে কাজে টোপ দিয়ে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জয়নগর থেকে শহরে এনে গ্রেপ্তার করলেন তদন্তকারী।
[ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে বৃহস্পতিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটে বাস সংগঠনগুলি]
পুলিশ জানিয়েছে, রোহিতের এক জামাইবাবু থাকেন মালদহে। ব্যবসার জন্য তাঁর ৩৫ হাজার টাকার প্রয়োজন ছিল। ছেলের হাত থেকে টাকা পাঠিয়েছিলেন রোহিতের বাবা। জামশেদপুর থেকে প্রথমে কলকাতায় এসেছিলেন ভিনরাজ্যের ওই যুবক। কলকাতা থেকে মালদহে যাওয়ার কথা ছিল। হাতে কিছুটা সময় ছিল। তাই সোমবার সকালে নিমতলার কাছে ভূতনাথ মন্দিরে গিয়েছিলেন রোহিত। পুজো দিয়ে চলে যান জগন্নাথ ঘাটে। জগন্নাথ ঘাটের দুই যুবকের সঙ্গে আলাপ হয় রোহিতের। তাঁদের মুখে গঙ্গার মাহাত্ম্য ও ধর্মকথা শুনে আপ্লুত হয়ে যান তিনি। আলাপ এতটাই জমে যায়, নতুন বন্ধুদের সঙ্গে গঙ্গার ধারে বসে গাঁজা সেবন করতেও আর আপত্তি করেননি। কিছুটা নেশাও হয়ে গিয়েছিল। পুলিশের দাবি, মিনিট খানেক বাদে রোহিত শর্মা খেয়াল করেন, তাঁর ব্যাগের চেন খোলা। উধাও ৩৫ হাজার টাকা। ততক্ষণে চম্পট দিয়েছেন অভিযুক্তরা।
[পড়ুয়াকে নগ্ন করে মার, চাপে পড়ে তদন্ত কমিটি গঠন কলেজ কর্তৃপক্ষের]
উত্তর বন্দর থানার অভিযোগ দায়ের করেন জামশেদপুরের যুবক রোহিত যাদব। এই চুরির সঙ্গে যে কুখ্যাত ঘাট গ্যাং জড়িত, তা বুঝতে সময় লাগেনি দুঁদে পুলিশকর্তাদের। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, গঙ্গার ঘাটের আশেপাশের ঘুরে বেড়ায় এই গ্যাংয়ের সদস্যরা। মূল পাণ্ডা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জয়নগরের শম্ভু মণ্ডল। তাকে সাহায্য করে কেষ্টপুরের সৌমেন পাইক, কালীঘাটের মহম্মদ রাজা-সহ আরও কয়েকজন দুষ্কৃতী। গঙ্গার ঘাটে ঘুরতে আসা মানুষের টাকা ছিনতাই, কেপমারি, তোলাবাজিতে সিদ্ধহস্ত তারা। জানা গিয়েছে, রোহিতের সর্বস্ব লুট করার পর গঙ্গার অন্য একটি ঘাটে ছিনতাইয়ে চেষ্টার করছিল ঘাট গ্যাংয়ের সদস্যরা। তখনই তাদের ধরে ফেলে উত্তর বন্দর থানার পুলিশ। দু’জন দুষ্কৃতীকে শনাক্তও করেছেন অভিযোগকারী রোহিত যাদব। ধৃতের জেরা করে জানা যায়, কোনও অপারেশনেই চট করে সামনে আসত না ঘাট গ্যাংয়ের লিডার শম্ভু মণ্ডল। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার জয়নগরে গা-ঢাকা দিয়েছে সে। তাকে ধরতে ফাঁদ পাতে পুলিশ। ফোনে বলা হয়, ঘাটের আরও বড় অপারেশন আছে। কলকাকতায় আসতে হবে। শহরে আসামাত্রই শম্ভু মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বাকীদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে।
[হকার দৌরাত্ম্যেই বাড়ছে হাওড়া স্টেশনের দূষণ]