কৃষ্ণকুমার দাস: ‘মশা মারতে কামান দাগা’ – চলতি আপ্তবাক্যটির অনুকরণে শহরে ‘কামান’ দাগবে কলকাতা পুরসভা (KMC)। তবে না, মশা মারতে নয়। কামান দাগা হবে বায়ুদূষণ (Air Pollution) কমাতে। কোভিডের আতঙ্কে শহরে প্রাইভেট গাড়ির সংখ্যা প্রচুর বেড়ে যাওয়ার ফলে শীতের শুরুতে বাতাসে কার্বনের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে উদ্বিগ্ন পুরকর্তারা এই ‘কামান’ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমফান (Amphan) ঘূর্ণিঝড়ে কলকাতায় এক ধাক্কায় প্রায় ১৬ হাজার বড় গাছ পড়ে যাওয়ায় দৈনিক যে প্রবল অক্সিজেনের ঘাটতি হচ্ছে, তা সামাল দিতে এমন সর্বাধুনিক ‘মিস্ট ক্যানন’ ব্যবহারই আপাতত সেরা উপায় বলে জানাচ্ছেন কলকাতার নামী পরিবেশবিদরা।
বায়ুদূষণের বিরুদ্ধে পুরসভা অন্যতম প্রধান অস্ত্র কামানের গোলা হল হাজার হাজার লিটার জল। বিশাল আকৃতির এই কামান থেকে ছোঁড়া হবে গোলার জল। তা আকাশে উঠে বাতাসে ভাসমান কার্বন কণার সংখ্যা কমিয়ে দূষণের মাত্রা হ্রাস করবে। কোভিডের সময় রাজপথে স্যানিটাইজেশন করতে যে ‘মিস্ট ক্যানন’ নামিয়েছিল, তাকেই এবার বায়ুদূষণ কমাতে নয়া আঙ্গিকে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিল পুরসভা। পর্যায়ক্রমে শহরের বিভিন্ন ঘনবসতি ও জনবহুল এলাকায় দুপুরের পর থেকে প্রতিদিন এই কামান ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করা হবে। তাতে দূষণের (পিএম ২.৫) হার অনেকটা কমানো যাবে।
[আরও পড়ুন: ‘সবুজ বিপ্লবে’র পথে ব্রিটেন, আগামী ১০ বছরের মধ্যে নিষিদ্ধ পেট্রল-ডিজেল চালিত গাড়ি]
পুরসভার মুখ্য প্রশাসক পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, “আমফানে ১৬ হাজার বড় গাছ ভেঙে পড়ায় শীতের শুরুতে দূষণের হার বাড়ছে। তাই মিস্ট ক্যানন দিয়ে জনবহুল এলাকায় জলের কণা ছড়ানো হবে। এভাবে বাতাসে ভাসমান কার্বনকণাকে মাটিতে নামিয়ে আনলেই দূষণের হার অনেকটাই কমবে।” পুরসভার সিদ্ধান্ত, আপাতত ১২টি জোনে পর্যায়ক্রমে কামান থেকে ‘গোলা’ ছোড়া হবে। এর জন্য কামানের পাশে আলাদা করে জলের গাড়ি মজুত থাকবে।
[আরও পড়ুন:
আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ভিক্টোরিয়ার চারপাশ, সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের দু’পাশের মতো বড় গাছের সারি যেখানে আছে সেখানে স্প্রিংলার দিয়ে বৃক্ষরাজির পাতা জল দিয়ে ধুইয়ে দেওয়া হবে। সাতদিন অন্তর ওই সমস্ত বড় গাছের সমস্ত পাতা ভিজিয়ে দিলে ধুলো ধুয়ে বেরিয়ে যাবে। পরিবেশবিদ সৌমেন্দ্রমোহন ঘোষ জানান, পাতা ধুইয়ে দেওয়ায় গাছগুলির পত্ররন্ধ্র সম্পূর্ণ মুক্ত থাকায় অনেক বেশি অক্সিজেন জোগান দিতে পারবে।