গৌতম ব্রহ্ম: ‘সবুজের সান্নিধ্যে বেড়ে উঠুক শৈশব…’। নিজের নামে পার্ক হচ্ছে শুনে এমনই উক্তি করেছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দর্শনকে সামনে রেখেই শুক্রবার সন্ধেয় বাঘাযতীন-পাটুলি এলাকায় ডানা মেলছে ‘অভিজিৎ বিনায়ক উদ্যান’।
উদ্বোধন হচ্ছে অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী আরেক বাঙালি অমর্ত্য সেনের নামাঙ্কিত উদ্যানেরও। একইসঙ্গে দুই ‘নোবেল’ উদ্যানের উদ্বোধন এই শহরে তো বটেই, গোটা দেশে বিরল। এখানেই শেষ নয়। অস্কারজয়ী চিত্রপরিচালক সত্যজিৎ রায়ের নামাঙ্কিত শিশু উদ্যানের দরজাও খুলে যাচ্ছে আজই। তিনটি পার্কই কলকাতা পুরসভার ১০১ নং ওয়ার্ড এলাকায়। সন্ধেবেলা তিন পার্কের উদ্বোধন করবেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, রাজ্যের স্কুলশিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার। থাকবেন বহু বিশিষ্ট মানুষ।
[আরও পড়ুন: কলকাতায় অমিত শাহের সফরে বিক্ষোভের হুঁশিয়ারি বামেদের]
২০১৯এ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্য়ায় অর্থনীতিতে নোবেল পাওয়ার পরই ওয়ার্ডের দুই পার্কের নাম দুই নোবেলজয়ীদের নামে করার প্রস্তাব রাখেন কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত। অনুমোদন দেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সম্মতি জানান অভিজিৎ বিনায়ক নিজেও। অর্থনীতিতে নোবেল জয়ের পর অভিজিৎবাবুকে স্বাগত জানাতে কলকাতা বিমানবন্দরে মন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে নিয়ে গিয়েছিলেন মেয়র। নিজের গাড়িতে নোবেলজয়ীকে বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের ফ্ল্যাটে পৌঁছে দিয়েছিলেন। পুরসভার তরফে এই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে মেয়রের। তার আগেই ডানা মেলছে অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামাঙ্কিত পার্ক।
যাত্রা শুরু করছে অমর্ত্য সেন উদ্যানও। গাঙ্গুলিবাগানের অরুণাচল সংঘের সামনের মাঠটি অমর্ত্য সেনের নামে করা হয়েছে। পার্কের দেওয়ালে সাবেক কলকাতার হরেক ছবি রিফিলের মোটিফে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। থাকছে দুই নোবেলজয়ীর ছবি ও তাঁদের বইয়ের প্রচ্ছদ। কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তর কথায়, “দুই নোবেলজয়ী বাঙালিকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে বসিয়েছেন। আমাদের মনের জোর বাড়িয়ে দিয়েছেন। নতুন প্রজন্মের কাছেও এঁরা আইকন। তাই বিশেষ অনুমতি নিয়ে এঁদের নামেই পার্ক তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়।”
[আরও পড়ুন: ই-মেল হ্যাক করে কোটি টাকার উপর জালিয়াতি, একাধিক অভিযোগ দায়ের লালবাজারে]
তাঁর এই উদ্যোগে খুশি এলাকার বাসিন্দারাও। তাঁদের বক্তব্য, “কিংবদন্তি হয়ে যাওয়া এই দুই মানুষের সঙ্গে এলাকার একটি স্থায়ী যোগসূত্র স্থাপিত হল। এর চেয়ে ভাল আর কী-ই বা হতে পারে? বাইরের লোকদের গর্ব করে এই কথা বলতে পারব। ভাল লাগছে সত্যজিৎ রায়ের নামেও পার্ক হচ্ছে।” তিন উদ্যানের পাশাপাশি উদ্বোধন হচ্ছে একটি সেতুরও। রাজ্যের সেচ দপ্তরের আর্থিক অনুদানে তৈরি সেতুটি এলাকার যান চলাচলে অনেক গতি আনবে। বাঘাযতীন রেলগেট লাগোয়া খালের উপর এটি দ্বিতীয় সেতু।
The post নোবেলজয়ী বঙ্গসন্তানদের শ্রদ্ধার্ঘ্য, খুলছে অমর্ত্য-অভিজিতের নামাঙ্কিত উদ্যান appeared first on Sangbad Pratidin.