সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাম্প্রতিক কালের মধ্যে অন্যতম এক বেনজির ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর। শাস্তির মুখে পড়তে চলেছেন ৩১ জন সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তার। তাঁদের বন্ড পোস্টিংয়ের ২০ লক্ষ টাকা অবিলম্বে মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করল স্বাস্থ্য ভবন। বন্ড পোস্টিং নিয়ম মেনে গ্রামের হাসপতালে যেতে অস্বীকার তাই এই নির্দেশ বলে জানা যাচ্ছে। সাক্ষী হলেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডাক্তারদের একাংশ।
ওই সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারদের নাম, কোন কলেজে বন্ড পোস্টিংয়ে আছেন এবং যে সব মেডিক্যাল কলেজে তাঁরা যুক্ত বিজ্ঞপ্তিতে সেসব জানানোর পাশাপাশি বিষয়টি জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল সুপারিটেন্ডেন্ট কাম ভাইস প্রিন্সিপাল অর্থাৎ এমএসভিপিদেরও। এর পিছনে মূল উদ্দেশ্য একটাই। যাতে এটা একটা নজির হয়ে থাকে যে, সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত থেকে রোগী পরিষেবায় অবহেলা করলে চিকিৎসকদের আর রেয়াত করা হবে না। এও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ওই ২০ লক্ষ টাকা একবারে ফেরত দিতে হবে। সাম্প্রতিক কালের মধ্যে এমন ঘটনা দেখেনি স্বাস্থ্য ভবন।
জানা যাচ্ছে, এই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে এমন বিজ্ঞপ্তি জারির আগে কিন্তু তাঁদের দুবার সতর্ক করা হয়েছিল। ২০২২ সাল থেকেই তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়, মাথার উপরে ঝুলছে শাস্তির খাঁড়া। এবার যেন তাঁরা সতর্ক হন। তাঁদের অন্য বিভাগে কাজ করার নির্দেশও দেওয়া হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলির তরফে তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের প্রয়োজন নেই। এই বিষয়টি কিন্তু ওই চিকিৎসকরা কর্তৃপক্ষকে জানাননি। ফলত রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রায় আড়াই হাজার সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তারদের মধ্যে থেকে ৩১ জনকে বেছে নেয় যাঁদের বিরুদ্ধে কাজে চরম গাফিলতির অভিযোগ রয়েছে। দেখা যাচ্ছে, যে সিনিয়র রেসিডেন্টদের নাম তালিকায় রয়েছে তাঁদের মধ্যে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ, পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজের পাশাপাশি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এন আর এস, আর জি করের সিনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তাররাও রয়েছেন। সরকারি বিজ্ঞাপ্তিতে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এঁরা কোন কোন সময়ে কী কী কারণে রোগী পরিষেবায় অবহেলা করেছেন। এর থেকে পরিষ্কার হয়ে গেল, সিনিয়র রেসিডেন্ট হিসেবে যাঁরা বন্ড পোস্টিংয়ে রয়েছেন তাঁরা কী কাজ করছেন, বাইরে কোথায় কতক্ষণ কাজ করছেন সেটা প্রশাসনের নজরে রয়েছে।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য দপ্তর নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বৈঠকে স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব-সহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা বার বার জানিয়েছেন, রাজ্যে কোনওভাবেই সরকারি হাসপাতাল বা মেডিক্যাল কলেজে রোগী পরিষেবাকে অবহেলা করাকে বরদাস্ত করা হবে না। অবশেষে এই পদক্ষেপ করল স্বাস্থ্য দপ্তর।