shono
Advertisement

Breaking News

কোন ছয় ‘দলবদলু’র উপর আস্থা তৃণমূলের? কোথায় কোথায় টিকিট পেলেন তাঁরা?

রবিবার ব্রিগেডের মঞ্চে ৪২ লোকসভা আসনের তালিকা ঘোষণা করেছে তৃণমূল।
Posted: 05:32 PM Mar 10, 2024Updated: 05:37 PM Mar 10, 2024

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্রিগেডের মঞ্চে ‘জনগর্জন সভা’য় বেজে উঠল লোকসভা ভোটের দামামা। প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করল তৃণমূল (TMC)। ওই তালিকায় যেমন রয়েছে বহু প্রত্যাশিত নাম তথা দলের বিশ্বস্ত পুরনো কুশীলব, তেমনই রয়েছে ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ খ্যাত রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানের মতো নতুন মুখ। পাশাপাশি আসন্ন লোকসভা ভোটে বিজেপিকে রুখতে ‘দলবদলু’ ছয় প্রার্থীকেও ঠাঁই দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁরা কারা?

Advertisement

পদ্ম-শিবিরে লক্ষ্মীবারে যোগ দিয়েছিলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। একই দিনে ‘মুকুট’হীন হয় গেরুয়া শিবির। লোকসভা ভোটের ফাইনাল কাউন্টডাউনের মধ্যে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলের হাত শক্ত করেন রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী (Mukutmani Adhikari)। মতুয়া সম্প্রদায়ের এই প্রতিনিধিকে নিয়ে হালকা জল্পনা ছিল- সত্যিই দল ছাড়ছেন তো! সেই দোলাচালে জল ঢেলে তৃণমূলের বনগাঁ দক্ষিণের প্রার্থী হলেন মুকুটমণি। বেগড়বাই করা মুকুটকে নিয়ে বিজেপির বক্তব্য, গার্হস্থ্য হিংসায় অভিযুক্ত। তা থেকে বাঁচতেই দলবদল। পালটা বিজেপি তথা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ এনেছেন নেতা। তাঁর দাবি, নদিয়ার মানুষকে সুবিচার দিতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদধন্য হয়ে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন।

 

[আরও পড়ুন: স্টার ভ্যালু নয়, ময়দানের লড়াকুরাই মমতার ‘তুরুপের তাস’]

বনগাঁ দক্ষিণে যদি সদ্য গেরুয়া সঙ্গত্যাগী মুকুটমণি অধিকারী প্রার্থী হন, পাশের কেন্দ্র বনগাঁয় তৃণমূলের প্রার্থী হলেন আরেক দলবদলু বিশ্বজিৎ দাস (Bishwajit Das)। ২০১৯ সালে তৃণমূলের তৎকালীন বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। এর পরে গত বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা আসন থেকে বিজেপির টিকিটে জেতেন। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের পর তৃণমূলের পতাকা হাতে নেন বিশ্বজিৎ। তাঁর কাঁধেই বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতির দায়িত্ব দেয় দল। যদিও বিজেপির টিকিটে জেতা বিধয়াক পদ ছাড়েননি। এবার অবশ্য বনগাঁ লোকসভায় জিতলে বিধানসভায় নয়, দিল্লির সংসদ ভবনে যাবেন বিশ্বজিৎ দাস।

তৃণমূল থেকে বিজেপি, বিজেপি থেকে তৃণমূল, দলবদলে নজির গড়েছেন বালুরঘাটের নেতা বিপ্লব মিত্র (Biplab Mitra)। তৃণমূলের পুরনো কর্মী বিপ্লব। জেলা সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন দীর্ঘদিন। পরে বিজেপি-তে যোগদান করেন। কিন্তু মাস কয়েকের মধ্যেই ফিরে আসেন পুরোনো দলেই। হরিরামপুর থেকে জিতে মন্ত্রীও হন। এক সময় দল ছাড়া প্রবীণ নেতা যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম বিশ্বস্ত সৈনিক রবিবার প্রার্থী ঘোষণায় তা স্পষ্ট হল। আসন্ন লোকসভা ভোটে বালুরঘাটে তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে।

 

[আরও পড়ুন: তৃণমূলে রীতি বদল, মমতার আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে প্রার্থী ঘোষণা ‘সেনাপতি’ অভিষেকের]

২০২১ সাল। বিজেপির টিকিটে রায়গঞ্জের বিধায়ক হয়েছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী (Krishna Kalyani)। ওই বছরের শেষের দিকেই দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। এর পর বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান হন। ব্যবসা থেকে রাজনীতির জগতে আসা কৃষ্ণর দাবি ছিল, দিলীপ ঘোষের জন্যই তাঁকে গেরুয়া শিবির ছাড়তে হয়েছে। এই ঘটনাও অবশ্য প্রাক্তন হয়ে গিয়েছে। সেই কৃষ্ণ কল্যাণীকেই এবার রায়গঞ্জে প্রার্থী করল দল।

রবিবার ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে ৪২ আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের মধ্যে দুজন ক্রিকেটার। একজন রাজনীতিতে ‘নিউ কামার’ ইউসুফ পাঠান। বহরমপুর প্রার্থী হচ্ছেন। দ্বিতীয় ব্যক্তি সফল ক্রিকেটার যেমন, তেমনই রাজনীতিতেও মোটের উপর পোড় খাওয়া। বিজেপি-কংগ্রেস হয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া কীর্তি আজাদকে (Kirti Azad) বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করেছেন তৃণমূল। রক্তেই ছিল রাজনীতি। বাবা বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভগবত ঝা আজাদ। কীর্তি একাধিকবার বিজেপি সাংসদ ও বিধায়ক হন। পরবর্তীকালে অরুণ জেটলিকে আক্রমণ করে দল ছাড়তে বাধ্য হন। কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়িয়ে হারের মুখ দেখতে হয়। ২০২২ সালে গোয়া বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলে যোগ দেন। গোয়া তৃণমূলের সভাপতি হন। ভরসার কীর্তিকে এবার বর্ধমান-দুর্গাপুর দাঁড় করালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার ‘জনগর্জন’ সভার মঞ্চে কীর্তি কথা দিয়েছেন, বাঙালিকে বুঝতে আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাংলা শিখে ফেলবেন।

 

[আরও পড়ুন: লোকসভায় বাদ নুসরত জাহান, কেন ‘নিষ্প্রভ’ তারকা?]

রবিবার তৃণমূলের প্রার্থী ঘোষণার আগেই বলি তারকা ও রাজনীতিবিদ শত্রুঘ্ন সিনহা (Shatrughan Sinha) প্রতিশ্রুতি দেন, আসানসোল থেকে আবার নির্বাচিত হলে এলাকায় শ্রমিক ও গরিবদের জন্য একটি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল গড়বেন। মমতা-অভিষেক সেই সুযোগ দিয়েছে ‘বিহারীবাবু’কে। আসনসোল লোকসভা কেন্দ্রে শত্রুঘ্নকেই দ্বিতীয়বার প্রার্থী করা হল। অবাঙালিদের মধ্যে শত্রুর ভূমিপুত্র ইমেজকে মান্যতা দিল দল। যদিও কীর্তি আজাদের মতোই এই বলি তারকাও বিজেপি থেকে কংগ্রেস, কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেন। অটল বিহারী বাজপেয়ী সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ ও নৌপরিবহন মন্ত্রীও ছিলেন। আজ তিনিই আসানসোল কেন্দ্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধারাল অস্ত্র।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement