অর্ণব আইচ: 'অপারেশন প্রঘাতে' অসম পুলিশ দিনতিনেক আগে রাজ্য পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আর তারপরই তল্লাশি চালিয়ে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আব্বাস আলি এবং মিনারুল শেখকে। তাদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি মোবাইল, সিমকার্ড এবং নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তাতে স্পষ্ট ধৃত ওই দুই জঙ্গি মডিউল তৈরির ছক কষেছিল। নবপ্রজন্মের মগজধোলাইয়ের কাজ করত দুজনে। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানান এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতীম সরকার।
সম্প্রতি গোপন সূত্রে অসম পুলিশের এসটিএফের কাছে খবর পৌঁছয়, অশান্ত বাংলাদেশ থেকে নাশকতা চালাতে বেশ কয়েকজন জঙ্গি ভারতে ঢুকেছে। এরপরই 'অপারেশন প্রঘাত' শুরু হয়। বাংলা, কেরল এবং অসমে অভিযান চালায় অসম পুলিশের এসটিএফ। জালে ধরা পড়ে বেশ কয়েকজন জঙ্গি। অসম পুলিশের এসটিএফ সূত্রে খবর, সদ্য় জেলমুক্ত আনসারউল্লা বাংলার প্রধান জসিমউদ্দিন রহমানির নির্দেশেই বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢোকে জঙ্গিরা।
ইতিমধ্যে অসম পুলিশ শাদ রাদি নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে। জেএমবি-র সংগঠন সম্প্রসারণ এবং এলাকায় নতুন নিয়োগের মাস্টারমাইন্ড ছিল সে। অসম ও বাংলায় স্লিপার সেল তৈরির ছক কষছিল ধৃত জঙ্গি। জেএমবি-র অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে বাংলা ও কেরল সফর করে। জানা গিয়েছে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে হরিহরপাড়ায় দুজনের খোঁজ মেলে। হরিহরপাড়ার নিশ্চিন্তপুরের বাসিন্দা আব্বাস আলি এবং রুকুনপুরে বাস মিনারুল শেখকে জঙ্গি সন্দেহে বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়। জানা গিয়েছে, বারুইপাড়া এলাকায় মাদ্রাসা খুলেছিল আব্বাস আলি। সেখানে এলাকার ছাত্রছাত্রীদের একাই পড়াত আব্বাস। মিনারুল ট্রাক্টর, জলের কল এবং বিভিন্ন গাড়ি সারাতে সিদ্ধহস্ত ছিল। তাদের কাছ থেকে সন্দেহজনক নানা নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
ধৃত ২ জঙ্গিকে জেরার পর শুক্রবার কলকাতা পুলিশের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করা হয়। এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) আরও জানান, জঙ্গি সন্দেহে ধৃত ওই দুই যুবকের কাছ থেকে পাওয়া মোবাইল, সিমকার্ড, পেন ড্রাইভ পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য নিয়ে গিয়েছে অসম পুলিশ। ইতিমধ্যে অসমে পাড়ি দিয়েছে রাজ্য পুলিশের একটি টিমও। সেখান থেকে পাওয়া আরও তথ্যের ভিত্তিতে এই জঙ্গিগোষ্ঠীকে বাংলায় শাখাপ্রশাখা বিস্তারে বাধা দেওয়ার পরিকল্পনা এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতীম সরকারের। উল্লেখ্য, উত্তপ্ত বাংলাদেশে ক্রমশ মৌলবাদী, কট্টরপন্থীদের দাপট বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে দুই জঙ্গি গ্রেপ্তারিতে বাংলার নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ যে বাড়ছে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।