সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কথায় আছে, ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। না, শুধু বোধহয় ইচ্ছে নয়, একাগ্রতা আর জেদটা প্রয়োজন হয় লক্ষ্যপূরণের জন্য। স্বপ্নকে ছোঁয়ার জন্য। আর এই মন্ত্রেই সর্বভারতীয়স্তরে সবচেয়ে কঠিন চাকরি পরীক্ষার বাধা টপকেছেন কলকাতার মেয়ে অঙ্কিতা আগরওয়াল (Ankita Agarwal)। শুধু গণ্ডি টপকেছেন বললে ভুল হবে। খাটো করা হবে তাঁর সাফল্যকে। সিভিল সার্ভিসের (Indian Civil Service) চূড়ান্ত স্তরের পরীক্ষায় ১০ হাজার জনের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন লেকটাউনের বাসিন্দা অঙ্কিতা। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য কীভাবে প্রস্তুতি সারবে আগামী প্রজন্ম, তারা কী করবে আর কী করবে না, সফল হওয়াল কিছু গোপন টিপস বাতলে দিলেন বাংলার এই মেয়ে।
অঙ্কিতা বলছেন, সিভিল সার্ভেন্ট হতে চাইলে প্রথম থেকেই লক্ষ্য স্থির করে নেওয়া প্রয়োজন। কারণ জীবনের কঠিন সময়, ব্যর্থতার মুহূর্তগুলিতে এই স্বপ্নপূরণের খিদেই প্রেরণা জোগাবে একজন পরীক্ষার্থীকে। কেরিয়ার গড়তে দু নৌকায় পা দিয়ে চলা যাবে না। উদাহরণস্বরূপ অঙ্কিতা নিজের কথা তুলে ধরেছেন। বলছেন,”প্রথম থেকে আইএএস (IAS) হতে চেয়েছি তাই স্নাতকোত্তরে ভরতি হইনি।” বরং দু’বছর ধরে পরীক্ষার প্রস্তুতি সেরেছিলেন তিনি। কঠিন প্রস্তুতিতে প্রথম সাফল্য এসেছিল ২০১৯ সালে। কিন্তু আইএএস নয়, আইআরএস (IRS) অর্থাৎ ইন্ডিয়ান রেভেনিউ সার্ভিসে (Indian Revenue Service) সুযোগ পেয়েছিলেন অঙ্কিতা। আপাতত সেই ট্রেনিংয়ে ফরিদাবাদে রয়েছেন কলকাতায় বেড়ে ওঠা এই কৃতী।
[আরও পড়ুন: টিকিটের ৩৫ টাকা পেতে পাঁচ বছর লড়াই, অবশেষে ৩ লক্ষ যাত্রীকে অর্থ ফেরাচ্ছে রেল]
কলকাতার বেসরকারি স্কুলে পড়াশোনা অঙ্কিতা আগরওয়ালের (Ankita Agarwal)। তার পর কলেজের পড়াশোনা সেরেছেন দিল্লিতে। পড়াশোনা শেষে কর্পোরেট সেক্টরে মোটা অঙ্কের বেতনের চাকরিতে যোগ। চাকরির পাশাপাশি চলেছে আইএএস পরীক্ষার প্রস্তুতি। শেষে চাকরি ছেড়ে দিনরাত পরীক্ষার প্রস্তুতিতে নিমগ্ন থেকেছেন তিনি। বাড়িতে পড়ার পাশাপাশি কোচিংয়ের সাহায্যও নিয়েছেন। করোনা কালে অনলাইনেও প্রস্তুতি সেরেছেন তিনি।
বাংলার মেয়ে বলছেন, বইয়ে মুখ গুঁজে বসে থাকা পছন্দ ছিল না কখনওই। নির্দিষ্ট স্ট্র্যাটেজি মেনে প্রস্তুতি নিয়েছেন। কখনও ৮ ঘণ্টা তো কখনও ১২ ঘণ্টা পড়েছেন তিনি। তবে প্রস্তুতিতে এক শতাংশও ফাঁকি দেওয়া চলবে না বলে ভবিষ্যতের পরীক্ষার্থীদের আগাম সতর্ক করে দিয়েছেন অঙ্কিতা। পড়ার ফাঁকে ফাঁকে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়েছেন। সিনেমাও দেখেছেন। তবে একটা বিষয় থেকে নিজেকে শতহস্ত দূরে রেখেছিলেন। যারা সিভিল সার্ভিসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁদেরও একই পরামর্শ দিচ্ছেন এই কৃতী।
[আরও পড়ুন: টিকিটের ৩৫ টাকা পেতে পাঁচ বছর লড়াই, অবশেষে ৩ লক্ষ যাত্রীকে অর্থ ফেরাচ্ছে রেল]
অঙ্কিতার কথায়, প্রস্তুতির ফাঁকে সোশ্যাল মিডিয়া নৈব নৈব চ! কারণ ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম মারাত্মকভাবে মনোযোগ নষ্ট করে। তাই প্রস্তুতির শুরুতেই তিনি এই প্ল্যাটফর্মগুলি ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। আর এই একাগ্রতা আর জেদ বাংলার মেয়েকে এনে দিল তাঁর কাঙ্ক্ষিত সাফল্য।