সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি ভাঙচুর ও উপাচার্যকে নিগ্রহের ‘হুমকি’! এই অভিযোগেই এবার স্থগিত রাখা হয়েছে খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ। বাবাসাহেব আম্বেদকর শিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের (Baba Saheb Ambedkar Education University) নিয়মিত কাজকর্ম বন্ধের সিদ্ধান্তে চরমে উঠেছে বিতর্ক। যদিও এইভাবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। আইনি পদক্ষেপ করার ভাবনা চিন্তাও শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।
বুধবার রাতে এই সংক্রান্ত বিষয়েই জারি হয়েছে বিজ্ঞপ্তি। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বেসরকারি বিএড ও এমএড কলেজগুলির সঙ্গে যুক্ত কিছু ব্যক্তির কাছ থেকে পাওয়া গুরুতর হুমকির মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অংশীদারের নিরাপত্তা এবং সরকারি সম্পত্তির ক্ষতির সম্ভাবনা মাথায় রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম স্থগিত করা হল, যতক্ষণ না প্রশাসনিক সহযোগিতায় বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছর ২৫৩টি বেসরকারি বিএড কলেজকে (BEd College) পড়ুয়া ভর্তির অনুমোদন দেয়নি ওই বিশ্ববিদ্যালয় (BEd University)। যা নিয়ে আইনি লড়াইও চলছে। এর মধ্যেই ’ওয়েস্ট বেঙ্গল এডুকেশন টিচার্স ফোরাম’ নামে একটি সংগঠনের তরফে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়। এই সংগঠনের ‘প্যাট্রন’ বীরভূমের একাধিক বেসরকারি বিএড কলেজের মালিক মলয় পিট। এরই মধ্যে হুমকির বার্তা পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কাজকর্ম আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
[আরও পড়ুন: ‘আদি আছে, অন্ত নেই’, কুন্তলদের মামলায় CBI-কে তীব্র ভর্ৎসনা আদালতের]
বাবাসাহেব আম্বেদকর শিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”বুধবার রাত ১১টা নাগাদ আমরা হুমকির বিষয়ে জানতে পারি। একটি ভিডিওতে বলতে শোনা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি ভাঙচুর করা হবে এবং উপাচার্যকে নিগ্রহ করা হবে। সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নিই। মুখ্যমন্ত্রী, উচ্চশিক্ষা দপ্তরের পাশাপাশি পুলিশকে জানাই। সিদ্ধান্ত নিই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কর্মকাণ্ড আপাতত স্থগিত রাখার। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয় খুলে রাখলে যদি কোনও ছাত্র বা কর্মীর উপর কোনও হামলা হয় বা সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হয়, তার দায়িত্ব কার উপর বর্তাবে?”
[আরও পড়ুন: হাসপাতালেই পুড়ল বাজি! তারস্বরে বাজল মাইক, বিস্ফোরক অভিযোগ NRS ‘উৎসবে’]
দাবি, হুমকির ওই ভিডিওটিতে কাউকে দেখা না গেলেও শোনা গিয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তির বক্তব্য। অভিযোগ, একজনকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে অবস্থান-বিক্ষোভ করব। গেটে বাউন্সার আটকাতে এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের তালা ভেঙে আমরা ঢুকব এবং আমরা উপাচার্যকে ঘেরাও করে রাখব। কেউ বলছেন, ‘ভিতর থেকে তালা মেরে দেব। আমরা ওনার (ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য) রুমে গিয়ে বসে থাকব।’ ওই ভিডিওতেই মলয়কে উত্তেজিতভাবে ‘স্ট্র্যাটেজি’র কথা বলতে শোনা গিয়েছে। যদিও ওই ভাইরাল ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি ‘সংবাদ প্রতিদিন’।
বৃহস্পতিবার সকালেই অনুমোদন না পাওয়া বিএড কলেজগুলির শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের তরফে বিক্ষোভ কর্মসূচি করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে। কিন্তু, গেট বন্ধ থাকায় বাইরে বসেই অবস্থান-বিক্ষোভে শামিল হন তাঁরা।