গোবিন্দ রায়: প্রাথমিকে ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগে মামলার শুনানিতে জোরালো সওয়াল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের। নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে তা মানতে নারাজ পর্ষদ। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে পর্ষদের সওয়াল, নিয়ম না মানলেই সেটা 'দুর্নীতি' নয়। পাশাপাশি পর্ষদের আইনজীবী দাবি করেন, তথাকথিত দুর্নীতির প্রমাণ কোথায়। যদি দুর্নীতি বলা হয় তাহলে তা প্রমাণ করতে হবে। পর্ষদের হয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতে আরও জানিয়েছেন, ক্ষমতার অপব্যবহার 'দুর্নীতি'-র সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে না।
মঙ্গলবার প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি ৩২ হাজার শিক্ষক বাতিলের মামলাটি ওঠে ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানেই প্রথমে সওয়াল করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। তিনি বলেন, বারবার দুর্নীতি বললেই সেটা যে দুর্নীতি তা প্রমাণিত হয় না। দুর্নীতি বললে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে হবে। যদি দুর্নীতিতে আর্থিক লেনদেন হয়ে থাকে, সেই লেনদেন প্রমাণ করতে হবে। সঙ্গে কোনও পরীক্ষার্থীকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য ঘুষ নেওয়া হয়েছে সেটিও আদালতে প্রমাণ করতে হবে বলে জোরালো সওয়াল করেন এজি কিশোর দত্ত। তিনি আদালতে আরও জানান, নিয়ম না মানলেই সেটা 'দুর্নীতি' নয়। ক্ষমতার অপব্যবহার 'দুর্নীতি'র সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে না।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষা নেয় রাজ্য। প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার প্রার্থী উত্তীর্ণ হন। তাঁদের মধ্যে ৪২ হাজার ৯৪৯ জনকে নিয়োগপত্র দেয় পর্ষদ। কিন্তু একাধিক বেনিময়ের অভিযোগ তুলে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী। সেই মামলায় হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ২০২৩ সালের ১৬ মে প্রশিক্ষণহীন ৩২ হাজার শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করে তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে নির্দেশ দেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ সেই রায়ে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয়। মামলার জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। যদিও শীর্ষ আদালত এই মামলা রাজ্যের উচ্চ আদালতেই ফেরত পাঠায়। চলতি বছরের ৭ এপ্রিল বিচারপতি সৌমেন সেন এই মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোয় মামলা স্থগিত হয়ে যায়। আজ মঙ্গলবার তা শুনানি হয়। সেখানে জোরালো সওয়াল করল পর্ষদ।