গোবিন্দ রায়: প্রথম পক্ষের স্ত্রী নিঃসন্তান হলেও বাবার মৃত্যুকালীন চাকরি পেতে পারেন দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তানও। এই সমস্ত ক্ষেত্রে চাকরির জন্য আবেদন বিবেচনার সময় ‘বৈধ বৈবাহিক’ সম্পর্কে জন্ম নেওয়া সন্তানের সঙ্গে বৈষম্য করা যাবে না বলে জানাল কলকাতা হাই কোর্ট।
সোমবার এই সংক্রান্ত মামলায় হাই কোর্টের বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই বৈষম্য নিন্দনীয়। তিনি এই নির্দেশ দিতে গিয়ে বলেন, রুটি উপার্জনকারীর মৃত্যুর পর ওই পরিবারের আর্থিক সমস্যা মেটাতে এই চাকরি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। সেখানে উপার্জনকারীর বৈধ বৈবাহিক সম্পর্কে জন্ম নেওয়া সন্তান নয় বলে ওই সন্তানকে বঞ্চিত করা যায় না।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব রেলের আরপিএফএর হেড কনস্টেবল গোরক্ষনাথ পান্ডের মৃত্যুর পর তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান এই চাকরির দাবি জানান। কারণ প্রথম পক্ষের স্ত্রী লছমিনা দেবী হলেন নিঃসন্তান। মৃত্যুর পর পূর্ব রেল আর্থিক সুযোগ-সুবিধা দুই স্ত্রীর সন্তানদের মধ্যে ভাগ করে দিলেও 'ক্যাম্পাসিওনেট' বা অনুকম্পিত চাকরির ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান চাকরির হকদার নয় বলে জানিয়ে দেয়। এক্ষেত্রে কারণ হিসাবে বলা হয় যে তার দ্বিতীয় বিয়ে বৈধ নয়। যদিও আদালতে প্রথম স্ত্রী এই চাকরির ক্ষেত্রে কোন আপত্তি জানাননি। আসানসোলে কর্মরত অবস্থায় ওই কনস্টেবলের মৃত্যুর পর পরিবার পূর্ব রেলের কাছে চাকরির আবেদন জানায়। সেই আবেদন খারিজ হলে প্রথম স্ত্রী আদালতে আবেদন করে। কিন্তু নিঃসন্তান হওয়ায় চাকরি হয়নি।
এদিকে পরবর্তীতে দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে সেই আবেদন জানায়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের তরফে বৈধ আইনি বৈবাহিক সম্পর্কের সংসাপত্র (রেজিস্ট্রি ম্যারেজ সার্টিফিকেট) না দেখাতে পারায় আবেদন বাতিল করে দেয়। মামলা গড়ায় হাই কোর্টে। এদিন মামলার নিষ্পত্তি করে বিচারপতি বৈধতা না থাকলেও দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান এই চাকরির যোগ্য উত্তরাধিকার বলে নির্দেশ দিয়েছেন।