গোবিন্দ রায়: বরখাস্ত হওয়া এক আংশিক সময়ের শিক্ষককে ভর্ৎসনা করলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার। জানা গিয়েছে, ১৯৯৮ সালের মে মাসে বাংলার আংশিক সময়ের শিক্ষক হিসাবে নদিয়ার গয়েশপুর উচ্চবিদ্যালয়ে নিযুক্ত হন নাসিরউদ্দিন শেখ। পরিচালন কমিটি তাকে নিযুক্ত করে। নিয়োগপত্রও দেওয়া হয়। ২০০৭ সালের এপ্রিলেই চাকরি হারান তিনি। কোনও কারণ উল্লেখ না করে আচমকাই তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় বলেই দাবি চাকরিহারা ব্যক্তির। এরপর ২০১২ সালে সুবিচারের আশায় কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন নাসিরউদ্দিন। বুধবার রাজাশেখর মান্থারের বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। রাজ্য সরকারের তরফে জানান হয়, এই শিক্ষক স্থায়ী নন। তাকে নিয়োগ করার কোনও নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি। পরিচালন কমিটি তাকে নিযোগ করেছে।
[আরও পড়ুন: সিগারেট খেতে দশ টাকা চেয়ে না পাওয়ার ক্ষোভে খুন নাবালককে!]
একথা শোনার পরই হাই কোর্টের (Calcutta High Court) তরফে বিচারপতি বলেন, “কার সুপারিশে চাকরি পেয়েছিলেন? স্থানীয় বিধায়ক? দুর্ভাগ্যজনক! আপনাদের মতো লোকের জন্য ৯ বছর স্থায়ী পদে শিক্ষক নিয়োগ করা যায়নি। আপনি পদ আটকে রেখেছিলেন। এটা কি মগের মুলুক?” এভাবেই তীব্র ভর্ৎসনার পর আংশিক সময়ের ওই শিক্ষকের মামলা খারিজ করে কলকাতা হাই কোর্ট।
এদিকে, স্কুল সার্ভিস কমিশনের (School Service Commission) মাধ্যমে গণিতের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে সিবিআইয়ের হাতে নথি তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। গণিত শিক্ষক সিদ্দিক গাজির নিয়োগ সংক্রান্ত ‘গরমিল’ সন্দেহে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার উপর তদন্তের দায়ভার দিল বিচারপতি রাজাশেখর মান্থারের বেঞ্চ। বুধবার রাজ্যের তরফে জানান হয়, সিদ্দিক গাজিকে নাকি আগেই চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। যা শুনে রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি। তাঁর প্রশ্ন, এই সিদ্ধান্ত আগে নেওয়া হয়ে থাকলে কেন তা আদালতে জানানো হয়নি? মামলাকারীদেরই বা কেন সেই তথ্য দেওয়া হয়নি? সিদ্দিক গাজির সমস্ত কাগজপত্র সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ বিচারপতি মান্থারের। পাশাপাশি মামলাকারী অনুপ গুপ্তর নিয়োগের বিষয়টিও বিবেচনার নির্দেশ দেন বিচারপতি।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই এসএসসি মামলার (SSC Scam) তদন্তভার নিয়েছে সিবিআই। রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছেন বলেই জানায় হাই কোর্ট। সেই অনুযায়ী হাই কোর্টের নির্দেশে চাকরিহারা অঙ্কিতা। দুই কিস্তিতে প্রাপ্ত বেতন ফেরতের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। আরও নানা তথ্যের খোঁজে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী এবং প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সিবিআই (CBI) জেরার মুখোমুখি হয়েছেন।