সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুখ্যসচিব জানিয়েছিলেন, ডাক্তার এবং পিজিটিদের সুবিধার জন্য অনলাইন রেফারেল সিস্টেম চালু হবে রাজ্যে। ইতিমধ্যেই এম আর বাঙুর হাসপাতালকে 'সেন্টার অফ এক্সিলেন্স' করে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় অনলাইন রেফারেল সিস্টেম চালু হয়ে গিয়েছে। সেই কাজের সূত্র ধরেই ১ নভেম্বর কলকাতার পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সঙ্গে জেলা ও ব্লক হাসপাতালগুলিকে অনলাইনে যুক্ত করা হচ্ছে। বুধবার কার্যত নিঃশব্দে তার মহড়া হয়ে গেল আর জি কর-সহ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এসএসকেএম, এনআরএস, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে।
একইসঙ্গে এই পাঁচটি হাসপাতালে সিকিওরিটি অডিট করল লালবাজার। জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের দাবি ছিল, সিভিক পুলিশ নয়, পুরো সময়ের পুলিশ মোতায়েন করতে হবে হাসপাতালের আউটডোর প্রয়োজনে ইনডোরে। মহিলা পুলিশও রাখতে হবে স্ত্রী. প্রসূতি ও পেডিয়াট্রিকস বিভাগে। তবে আর জি করে যেহেতু আদালতের নির্দেশে সিআইএসএফ রয়েছে, তাই অনলাইন সিস্টেম চালু হলেও নিরাপত্তার বিষয়টি এখনই কলকাতা পুলিশের হাতে যাবে কিনা, তা নিয়ে এখনই কোনও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেয়নি নবান্ন। এখন প্রশ্ন, অনলাইন রেফারেল সিস্টেম চালু হলে চিকিৎসকদের কতটা সুবিধা হবে, রোগীদেরও লাভ কতটা?
অনলাইন রেফারেল সিস্টেম এমন একটা ব্যবস্থা যে আউটডোরে বসেই সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসক বুঝে নিতে পারবেন তাঁর বিভাগের কতগুলি বেড ফাঁকা আছে। আবার জেলা বা ব্লক হাসপাতালগুলি যুক্ত হওয়াতে তারাও বুঝতে পারবে কোন মেডিক্যাল কলেজ বা হাসপাতালে বেড ভ্যাকান্সি কতটা। এক্ষেত্রে ব্লক ও জেলা হাসপাতালগুলির গুরুত্ব অপরিসীম। সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসক দেখা নেবেন কোন হাসপাতালে রোগী পাঠানো উচিত। ধরা যাক, বাদুড়িয়া ব্লক হাসপাতালে সেরিব্রাল স্ট্রোকের কোনও রোগীকে আনা হয়েছে। বাঙুর হাসপাতালের সঙ্গে অনলাইনে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ইঞ্জেকশন-ওষুধ দিয়ে রোগীকে বাঙুরেই পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া যাবে। ঘটনা হল এই সিস্টেমে রোগীর হাতে একটা চিরকূট দেওয়া হবে, যেখানে বেড নম্বর লেখা থাকবে। অ্যাম্বুল্যান্সে করে রোগীকে বাঙুর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলেই সংশ্লিষ্ট বা কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীকে ভর্তি করে নেবেন। এর ফলে হাসপাতালগুলিতে রোগীর পরিজনের বিক্ষোভও কমবে। তাঁরাও জেনে যাবে যে কোন হাসপাতালে কোন রোগের চিকিৎসা হয়। চিকিৎসকদের উপরেও চাপ কমবে। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, কলকাতার ৫ মেডিক্যাল কলেজে চালু হওয়ার দিন কয়েকের মধ্যেই বাকি ২৩টি মেডিক্যাল কলেজে এই ব্যবস্থা চালু হবে। উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে নোডাল সেন্টার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এদিনই ঠিক হয়েছে, কলকাতার এক একটি মেডিক্যাল কলেজে কত সংখ্যক পুরুষ ও মহিলা পুলিশ কর্মী প্রয়োজন হবে। দিনে তিন দফা ডিউটি করতে হবে। রাতে এক ক্যাম্পাস থেকে অন্য ক্যাম্পাস অথবা ওয়ার্ডে মহিলা চিকিৎসক বা নার্স গেলে সঙ্গে থাকবেন মহিলা পুলিশ কর্মী। এছাড়া তো রইল 'রাত্তিরের সাথী' অ্যাপ। রোগী ভর্তির সময় এবং আউটডোরে দুজনের বেশি পরিজন থাকতে পারবে না। সবমিলিয়ে সরকারি হাসপাতালগুলি নিরাপত্তা ও সরঞ্জাম মিলিয়ে কর্পোরেট স্টাইলেই চলবে তারা।