স্টাফ রিপোর্টার: প্রবল তাপপ্রবাহের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রাজ্যজুড়ে বাড়ছে বিদ্যুতের চাহিদা। দহন তাপের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে সমানতালে বিদ্যুতের জোগান দিয়ে নয়া রেকর্ড করল রাজ্য সরকারের বিদুৎদপ্তর এবং সিইএসসি। শনিবার রাজ্য বিদুৎদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গরমের সময় চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিদ্যুতের জোগান দিয়ে শুক্রবার সর্বকালীন রেকর্ড করেছে পশ্চিমবঙ্গ বিদুৎ বণ্টন নিগম।
রাত সাড়ে এগারোটায় চাহিদা পূরণ করে রাজ্যজুড়ে সর্বাধিক ৯ হাজার ৯৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে রাজ্য সরকার। এটা গত বছরের ১৮ জুনের চাহিদা মেটানোর রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে বিদুৎ বণ্টন নিগম। দুঃসহ দাবদাহের জেরে ওইদিন বাংলার সমস্ত জেলাজুড়ে চাহিদা মেটাতে রাজ্য সরকার ৯ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছিল। কিন্তু এবার ৫৩ দিন আগেই সেই রেকর্ড ভেঙে গেল। চাহিদা মিটিয়ে মানুষের ঘরে ঘরে বাড়তি বিদুৎ পৌঁছে দিয়ে আগের সেই রেকর্ড ভেঙে সাফল্যের নয়া নজির গড়ল রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগম।
[আরও পড়ুন: ভোটের আগে রক্তাক্ত খাস কলকাতা, পিটিয়ে খুন তৃণমূল কর্মীকে!]
আর্দ্রতা ও তাপপ্রবাহের জেরে বিদুৎ বণ্টন নিগম সংস্থার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে একই দিনে যোগ্য সহযোগী হিসাবে কলকাতা, হাওড়া ও শহরতলিতে চাহিদা মিটিয়ে বিদ্যুৎ জোগান দিয়ে নয়া রেকর্ড গড়েছে সিইএসসি। শুক্রবার বিকেল সওয়া তিনটের সময় কলকাতা ও লাগোয়া শহরতলিতে চাহিদা মিটিয়ে সর্বাধিক ২ হাজার ৭২৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে। এটাও গত বছরের চেয়ে ১২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাড়তি জোগান দিয়ে সাফল্যের নয়া রেকর্ড গড়েছে সিইএসসি। গত বছর গরমের দাপট সামাল দিয়ে চাহিদা মিটিয়ে ১৬ জুন সিইএসসি সর্বাধিক ২ হাজার ৬০৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করে রেকর্ড করেছিল। কিন্তু এবছর ৫১ দিন আগেই সরবরাহের ক্ষেত্রে নিজের রেকর্ড নিজেই ভাঙল সিইএসসি। মূলত এসি ও পাখার ব্যবহার যথেচ্ছ হারে বেড়ে যাওয়ায় এই চাহিদা বাড়ছে বলে ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছেন। কিন্তু সেই চাহিদাও মেটানোর ক্ষেত্রে সাফল্য দেখাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তথা বাংলা।
এদিন তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ, বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, "বিদ্যুতের চাহিদা অস্বাভাবিক বেড়ে গিয়েছে এই গরমে। কোথাও কোনও ঘাটতি নেই। শুধু চাহিদা বেড়ে গিয়েছে। কোথাও প্রয়োজন হলেই বিদ্যুৎমন্ত্রী নিজে সেগুলো দায়িত্ব নিয়ে সমস্যা মেটাচ্ছেন।" দিনকয়েক আগেই সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ আসায় সিইএসসি কর্তাদের ডেকে বিদ্যুৎ বিভ্রাট সামাল দিতে বাড়তি কর্মীর পাশাপাশি কলকাতা জুড়ে জেনারেটর প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাকেও বাড়তি উৎপাদনে জোর দিতে বলেন মন্ত্রী। সূত্রের খবর, বিদ্যুৎ বণ্টন নিগম ও সিইএসসি নয়া রেকর্ড গড়ার পরেও বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস গরমের সঙ্গে আরও চাহিদা বাড়তে পারে বলে দুই সংস্থার শীর্ষকর্তাদের সতর্ক থাকতে বলেছেন।