রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: নির্বাচন এলেই 'সন্ত্রাস' তত্ত্ব সামনে এনে সরব হয় সিপিএম। তারা। ভোটের দিন, তার আগেও শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তোলে তারা। কিন্তু সেই সিপিএমের হাওড়া-সহ বিভিন্ন জেলায় একাধিক এরিয়া কমিটির সম্মেলনে মেনে নেওয়া হয়েছে, গত লোকসভা ভোটে এলাকায় কোনও সন্ত্রাসের পরিবেশই ছিল না। পার্টির খারাপ ফলের জন্য নেতাদের নিষ্ক্রিয়তা ও কাজে খামতিকেই দায়ী করা হয়েছে।
একটি এরিয়া কমিটির সম্মেলনের সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে স্বীকার করা হয়েছে, ''গত লোকসভা নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট এরিয়া কমিটি এলাকায় কোনও ভয়-ভীতি, সন্ত্রাসের পরিবেশ ছিল না। অধিকাংশ শাখা সম্পাদকের একটি সাধারণ নির্বাচনে যে দায় ও দায়বদ্ধতা থাকার প্রয়োজন ছিল, তা তাদের ভূমিকায় প্রকাশ পায়নি। নির্বাচনকে সামনে রেখে ১০ দিন ছাড়া শাখা মিটিং ডাকা, নির্বাচনী কাজের সিদ্ধান্ত নেওয়া, কাজের পর্যালোচনা করা কিছুই হয়নি। কোনওরকম যান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনী বৈতরণী পার করা হয়েছে।''
একইসঙ্গে নিচুস্তরে বহু পার্টি সদস্য নির্বাচনে কোনও কাজ করেনি বলেও এরিয়া সম্মেলনের সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ''কিছু সংখ্যক সদস্য লোকদেখানো গোছের নির্বাচনী কাজে অংশগ্রহণ করে হাজিরা দিয়ে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে। বাস্তব ঘটনা হল, কমরেডরা নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে অনেকাংশেই ব্যর্থ হয়েছেন। কোনও বুথেই নিবিড় প্রচার সংগঠিত করা যায়নি। সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে পার্টির যোগসূত্র গড়ে ওঠেনি এবং পার্টির বক্তব্য মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়নি।''
গত সোমবার সোশাল মিডিয়ায় সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের একটি পোস্ট নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে পার্টির মধ্যে। দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে সেলিম লিখেছেন, ''বের হতে হবে তথাকথিত 'কমফোর্ট জোন' থেকে। শুধু পার্টি কর্মসূচি করাই যথেষ্ট নয়। ভাবনাচিন্তা, কাজের ধারাকেও সাম্প্রতিক পরিস্থিতির সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ করতে হবে। নতুন নতুন পরিস্থিতিতে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার কী বীজ নিহিত আছে, তা পার্টি কর্মীদের অনুসন্ধান করতে হবে।''