দিপালী সেন: প্রবল শব্দ করে ফাটে একের পর এক বাজি। প্রতিবারই কেঁপে ওঠে গোটা শরীর। কেউ প্রবল আতঙ্কে খাটের নিচে, কেউ ঘরের কোণে গুটিয়ে বসে কাঁপতে থাকে। ভুলে যায় খাওয়া-দাওয়া। তবু মেলে না শব্দযন্ত্রণা থেকে মুক্তি। প্রতি বছরই কালীপুজোর রাতে বা দীপাবলি (Diwali) উৎসবে বহু বাড়ির পোষ্যের এমনই অবস্থা হয়। এক অংশের আনন্দের বহিঃপ্রকাশ আতঙ্ক হয়ে ওঠে পোষ্য মহলের কাছে। এবছর পোষ্যদের সেই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে, দীপাবলির উৎসবটা তাদের জন্য সুরক্ষিত করার আবেদন জানাতে উদ্যোগী বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট। আয়োজন করা হচ্ছে একটি সচেতনতা মিছিলের। যেখানে শুধু দু’পেয়ে নয়, নিজেদের হয়ে আবেদন জানাতে হাঁটবে চারপেয়েরাও।
আগামী ২০ অক্টোবর বিকেল চারটেয় নিউটাউনে সেন্ট্রাল মলের কাছে সিটি স্কোয়্যার বলে পরিচিত মাঠে হবে এই অভিনব মিছিল। সেখানে পোষ্যদের নিয়ে অংশগ্রহণের আবেদন জানানো হয়েছে বিধাননগর পুলিশের তরফে। মিছিলে অংশগ্রহণকারী পোষ্যদের জন্য বানানো হয়েছে বিশেষ পোশাক। ‘শুভ দীপাবলি, প্লিজ শব্দবাজি ফাটিও না’, ‘শব্দবাজি বন্ধ করে দাও, আমাদের দিওয়ালি হ্যাপি করে দাও’ -এই ধরনের বার্তা লেখা বিশেষ সেই পোশাক পরে মিছিলে হাঁটবে চারপেয়েরা। আর পোষ্যদের অভিভাবকদের হাতে থাকবে প্ল্যাকার্ড।
[আরও পড়ুন: পুলিশ পরিচয়ে খাস কলকাতায় কোটি টাকা ডাকাতি! গ্রেপ্তার ‘মাস্টারমাইন্ড’ কাশীপুর থানার কনস্টেবল]
বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘নিউটাউন একটা পোষ্যবান্ধব অঞ্চল। এখানে অনেকেই পোষ্য রাখেন এবং পোষ্যদের ভাল-মন্দের সঙ্গে জড়িত থাকেন। দেওয়ালির শব্দবাজিতে পোষ্যদের আলাদা একটা সমস্যা হয়। ওরা অবলা। কান ঢাকতে পারে না নিজেদের হাত দিয়ে। তাই পোষ্য ও পোষ্যর মালিকরা এই সচেতনতা প্রচারে অংশগ্রহণ করলে মানুষের কাছে হয়তো বার্তাটা আরও ভালভাবে পৌঁছবে। সেই ভাবনা থেকেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’’
এর পাশাপাশি বিধাননগর পুলিশের তরফে নিষিদ্ধ বাজি নিয়ে সচেতনতা প্রচারও চালানো হচ্ছে। বিধাননগরের যে জায়গাগুলিতে কালীপুজোর রাতে বা দীপাবলির উৎসবে নিষিদ্ধ বাজি ফাটানোর অভিযোগ আসে, সেই জায়গাগুলির অলিগলিতে মিছিল করে সচেতন করার চেষ্টা করা হচ্ছে পুলিশের তরফে। ইতিমধ্যেই লেকটাউন, বাঙুর অ্যাভিনিউ ও দমদম পার্কে মিছিল করা হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে সেই সচেতনতা মিছিলে পা মিলিয়েছিল স্থানীয় দু’টি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। রবিবার একইভাবে মিছিল করা হয়েছে রাজারহাটে। পুলিশের তরফে সকলের কাছে নিষিদ্ধ বাজি না ফাটানোর আবেদন করা হচ্ছে। পরিবর্তে সবুজ বাজি ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে। পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘দীপাবলি আলোর উৎসব। আলোটাকে কখনও শব্দের দিকে নিয়ে যাবেন না। বাজি ফাটাতে হলে শুধু সবুজ বাজি ফাটান।’’ বিধাননগরবাসীকে সচেতন করতে সোশ্যাল মিডিয়াও ব্যবহার করছে বিধাননগর পুলিশ।
