স্টাফ রিপোর্টার: বছর ঘুরতেই দেশ জুড়ে বেজে উঠতে চলেছে লোকসভা ভোটের বাদ্যি। তার আগে আবার ‘দুয়ারে সরকার’ (Duare Sarkar) শুরু হচ্ছে রাজ্যজুড়ে। আগামী ১৫ ডিসেম্বর থেকে এই জনপ্রিয় সরকারি কর্মসূচি শুরু হতে চলেছে বলেই নবান্ন সূত্রে খবর। শিবির চলবে টানা এক মাস। তার মধ্যে ৩১ ডিসেম্বর বছরের শেষ দিন পর্যন্ত চলবে আবেদন জমা নেওয়ার পর্ব। তারপর ১ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত পরিষেবা দেওয়া হবে আবেদনকারীদের।
বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে রাজ্যের জেলাশাসকদের সঙ্গে ভারচুয়াল বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে আগামী ১৫ তারিখ থেকে পক্ষকালব্যাপী রাজ্যজুড়ে দুয়ারে সরকার শুরুর খবর জানিয়ে দেওয়া হয় জেলাশাসকদের। জানা গিয়েছে, এবারের শিবিরে রাজ্য সরকার জোর দিচ্ছে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের পড়ে থাকা টাকা খরচের উপর। জেলাশাসকদের প্রতি মুখ্যসচিব এদিন নির্দেশ দিয়েছেন, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের যত টাকা এখনও পর্যন্ত কোষাগারে আছে, তার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে হবে। রাজ্যের কোনও মানুষ যাতে সরকারি পরিষেবা ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয়, সে বিষয়ে জোর দিতে জেলা প্রশাসনের প্রতি নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।
[আরও পড়ুন: বিধায়কের বাড়ি থেকে উদ্ধার লক্ষ লক্ষ টাকা, কী বলছে তৃণমূল? তরজায় কুণাল-সুকান্ত]
নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারের যে সমস্ত কাজ এখনও শুরু করা যায়নি, সেগুলোর জন্য অবিলম্বে টেন্ডার ডাকাতে এদিন জেলাশাসকদের বলেছেন মুখ্যসচিব। গ্রামীণ এলাকায় শৌচাগার নির্মাণ-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ শেষ করার পাশাপাশি থমকে থাকা কাজগুলিও চলতি অর্থবর্ষের মধ্যে শেষ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন মুখ্যসচিব। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির শিবির বসেছিল রাজ্যে। দুর্গাপুজোর আগে চলা এই শিবিরে মোট ৩৫টি আলাদা আলাদা সরকারি প্রকল্প পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল চারটি নতুন পরিষেবা। এগুলি হল ‘বার্ধক্য ভাতা’, ‘পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম নথিভুক্তিকরণ’, ‘উদ্যম পোর্টালে নাম নথিভুক্তকরণ’ এবং ‘হস্তশিল্পী ও তাঁতশিল্পীদের নাম তালিকাভুক্তিকরণ’। সপ্তম পর্যায়ের এই শিবিরের জন্য ১৭টি পৃথক নোডাল বিভাগ গঠন করা হয়েছিল। গোটা বিষয়টির তদারকির দায়িত্বে ছিলেন ৪১ সিনিয়র আইএএস অফিসার।
২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস শুরুর দিন থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের এই ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি রাজ্যে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে। প্রথম ছয় পর্বে সাড়ে ৯ কোটিরও বেশি মানুষের আবেদন করেন বিভিন্ন শিবিরে। তার মধ্যে আবেদনের ভিত্তিতে ৭.২০ কোটিরও বেশি মানুষকে পরিষেবা দেওয়া গিয়েছে। শেষ অর্থাৎ সপ্তম পর্বের দুয়ারে সরকারের জন্য স্থায়ী শিবিরের পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ শিবিরের বন্দোবস্তও করা হয়েছিল। মূলত, যাতায়াতের অসুবিধা আছে, এমন জায়গাগুলির বাসিন্দাদের কথা ভেবে এই মোবাইল ক্যাম্পের ব্যবস্থা। মোট শিবিরের ৩৬ শতাংশ ছিল এই মোবাইল ক্যাম্প।