অর্ণব আইচ: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সদ্য ধৃত তৃণমূল যুব নেতা কুন্তল ঘোষের জোড়া ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া ডায়েরি এবং খাতা নিয়ে চিন্তিত ইডি। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সূত্রে খবর, ওই ডায়েরিতে একাধিক তথ্য সাংকেতিক চিহ্নের মাধ্যমে লেখা রয়েছে। সাংকেতিক চিহ্ন কীভাবে উদ্ধার করা হবে, তা নিয়ে ধন্দে তদন্তকারীরা। এদিকে, সোমবার সকালে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে নীলাদ্রি ঘোষ নামে আরও একজনের নাম বলেন ধৃত তৃণমূল যুব নেতা। কে এই নীলাদ্রি, তার খোঁজ শুরু করেছেন তদন্তকারীরা।
কুন্তল ঘোষের জোড়া ফ্ল্যাট থেকে একটি ছাই রঙের ডায়েরি ও একটি বড় মাপের নোটের খাতা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। দু’টিতে মোট ৪৯ কোটি ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকার লেনদেনের হিসাব। ছাই রঙের ডায়েরিতে তাপস মণ্ডল যে কুন্তল ঘোষকে ১৯ কোটি ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন, তার প্রমাণ মিলেছে। ১০ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ, ৩ কোটি ৩০ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা আপার প্রাইমারি শিক্ষক, ৫ কোটি ২৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা টেট ২০১৪ প্রার্থী নিয়োগের জন্য, যার মধ্যে ৩ কোটি ২৫ লক্ষ প্রার্থীদের পাশ করানোর জন্য নেওয়া হয়। অন্য খাতায় প্রাথমিক শিক্ষক, আপার প্রাইমারি, গ্রুপ সি ও ডি নিয়োগে কুন্তল ও তাঁর সঙ্গীরা ৩০ কোটি টাকা যে তুলেছেন, তার হিসাব রয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘রাজনৈতিক হিংসার জেরেই বাংলায় নেই বিনিয়োগ’, তোপ অনুরাগ ঠাকুরের, পালটা তৃণমূলের]
ইডি সূত্রে খবর, কুন্তলের ডায়েরিতে গোলাকার সাংকেতিক চিহ্ন রয়েছে। ওই সাংকেতিক চিহ্নের মাধ্যমে কুন্তল ঠিক কী তথ্য লিখে রেখেছেন, তা ডিকোড করতে ব্যস্ত ইডি আধিকারিকরা। ওই সাংকেতিক চিহ্নের রহস্যভেদ করলে আরও নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে আসবে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। এছাড়া ধৃত তৃণমূল যুব নেতার ডায়েরিতে একাধিক সংক্ষিপ্ত নাম লেখা রয়েছে বলেও দাবি ইডি’র। ‘SA’ এবং ‘PS’ নামের উল্লেখ রয়েছে। তারা কে, তা জানতে তৎপর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের।
এদিকে, সোমবার ফের কুন্তল ঘোষের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো হয়। বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে আবারও মুখ খোলেন সদ্য ধৃত তৃণমূল যুব নেতা। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে বলেই দাবি করেন কুন্তল। নীলাদ্রি ঘোষ নামে আরও একজনের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। এই নীলাদ্রি ঘোষ কে, নিয়োগ দুর্নীতিতে কী যোগসূত্র রয়েছে তাঁর, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।