নব্যেন্দু হাজরা: রাজ্যে চাহিদা এক কোটির। কিন্তু, পুজোর দিন এত জবার জোগান দেবে কে? তাই ১০৮ জবার মালার বদলে মায়ের গলায় পড়তে পারে প্লাস্টিকের জবাও। কোথাও বা মাকে সাজাতে দু’রকমের মালাই ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া এই ‘নকল’ মালার দামও কিছুটা কম। ১০৮ জবা ফুলের মালার দাম পুজোর আগের দিনই উঠেছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, অথচ সেই সাইজের প্লাস্টিকের মালা বিকোচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকাতেই। ফলে পকেট বাঁচিয়ে ‘মা’কে খুশি রাখতে ‘নকল’ জবাতেই ভরসা করছেন অনেক বারোয়ারি বা গেরস্থ।
কালীপুজো (Kali Puja) দিনে জবার চাহিদা মেটাতে এক সপ্তাহ আগে থেকেই ফুল তুলে হিমঘরে মজুত করেন ফুলচাষিরা। ফুলচাষিদের কথায়, আগে থেকে ফুল কিনে রাখলে লাভ অনেক বেশি। শুধু লাভই নয়, একদিনে এত জবার জোগান দেওয়াও সম্ভব হয় না। তাই ‘বাসি’ ফুলই বিকোয় সর্বত্র। যারা সেটাও পান না, তাঁদের প্লাস্টিকের জবাতেই ভক্তি নিবেদন করতে হয়।
[আরও পড়ুন: করোনা কালে অভিনব উদ্যোগ, নাম-গোত্র হোয়াটসঅ্যাপ করলেই মিলবে মা কালীর আর্শীবাদ]
মূলত হাওড়ার বাগনান, কোলাঘাট, পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর, পূর্ব মেদিনীপর, নদিয়া থেকেই ফুল আসে হাওড়ার ফুলবাজারে। তারপরই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তা নিয়ে যাওয়া হয়। ফুলচাষিদের কথায়, পুজোর সময় থেকেই দাম বাড়ে সব ফুলের। কোনওটার কম। কোনওটার বেশি। এবারও হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় যে মাল্টিপারপাস হিমঘর রয়েছে সেখানেই রাখা হচ্ছে জবা। ব্যবসায়ীদের কথায়, এতদিন হিমঘরে রাখলে অনেক সময় ফুল পচে যায়। আর এই পচে যাওয়া ফুলের দামও তুলে নেওয়া হয় মালা বিক্রি থেকে। ফলে জবা দেয় ছেঁকা। আর সেই ছেঁকা থেকে কিছুটা রিলিফ দেয় প্লাস্টিকের জবা।
শুক্রবার হাওড়ার মল্লিকঘাট ফুলবাজারে ১০০০ পিস জবা বিক্রি হয়েছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। খুচরো বাজারে যখন তা ১০৮ জবার মালা হিসাবে বিক্রি হবে তারই দাম আজ ১৪০ টাকা ছাড়াবে বলেই জানাচ্ছেন ফুল বিক্রেতারা। তাছাড়া বেলপাতার মালা বিকোচ্ছে ৩০ টাকা প্রতি পিস। পদ্ম ৩০ টাকা প্রতি পিস। এদিন মল্লিকঘাটে পাইকারি বাজারে গাঁদা ১০০থেকে ১২০টাকা প্রতি কেজি, দোপাটি ১০০ থেকে ১১০টাকা প্রতি কেজি, অপরাজিতা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি, রজনীগন্ধা ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সেই ফুলেরই খুচরো বাজারে দ্বিগুণ-তিনগুণ দাম হয়েছে। তাই অনেকেই প্লাস্টিকের জবাতেই ভরসা রাখছেন। পরিবেশবিদদের কথায়, এই ধরনের প্লাস্টিকের জবা (artificial hibiscus flowers) ব্যবহার করা ঠিক নয়। পুজোর পর এই মালাও ফেলা হয় গঙ্গা বা জলাশয়ে। সেখান থেকেও ছড়ায় দূষণ। কিন্তু কারও কোনও হুঁশ থাকে না।
[আরও পড়ুন: নাম না করে ফের অধীরকে তোপ সোমেন পুত্রর, বাড়ছে দলবদলের জল্পনা]
সারা বাংলা ফুলচাষি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নারায়ণচন্দ্র নায়েক বলেন, “এই একটা দিনের জন্য জবার চাহিদা থাকে আকাশছোঁয়া। এই সময় এমনিই ফুলের দাম বাড়ে। কালীপুজোতেও তাই জবার দাম বেড়েছে।”