সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আবেদন-নিবেদনের দিন শেষ! সরকারি ডাক্তারদের ফের হলফনামা দিতে বলছে স্বাস্থ্যভবন। সরকারি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকদের বলতে হবে, যাঁরা সরকারের থেকে 'নন প্র্যাক্টিসিং অ্যালাওয়েন্স (ভাতা) নিচ্ছেন তাঁরা বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে রোগীর চিকিৎসা করছেন না। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বেনিয়ম রুখতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্যভবন।
সরকারি হাসপাতালের বন্ড পোস্টিংয়ে থাকা সিনিয়র রেসিডেন্টরা সরকারের কাছ থেকে 'নন প্র্যাক্টিসিং অ্যালাওয়েন্স পান। যারা এই ভাতা নেন, তাঁদের বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখা আইনত অপরাধ। তাঁদের হলফনামাও দিতে হয় যে সরকারি হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোনও হাসপাতাল অথবা নার্সিংহোম যুক্ত হবেন না। তারপরেও একাধিক ক্ষেত্রে নিয়ম ভাঙার অভিযোগ সামনে এসেছে। যেমন অভয়া-আন্দোলন চলাকালীন বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের টাকা নেওয়ায় ৪১ সিনিয়র রেসিডেন্টকে ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছিল স্বাস্থ্যভবন।
স্বাস্থ্যভবনের সাম্প্রতিক এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র এস আর (সিনিয়র রেসিডেন্ট) নয়, যে সব সরকারি ডাক্তার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করেন তাঁদেরই হলফনামা দিয়ে সরকারকে জানাতে হবে। অন্যথায় তদন্তে ধরা পড়লে কড়া পদক্ষেপ নেবে স্বাস্থ্যদপ্তর।
সূত্রের খবর, রাজ্যে সিনিয়র রেসিডেন্ট যাঁরা বন্ড পোস্টিংয়ে কর্মরত এমন ডাক্তারের সংখ্যা প্রায় ৮ হাজার। ইতিমধ্যে প্রায় ২ হাজার সিনিয়র রেসিডেন্টকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বলা হয়েছে, কেন তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে না, তা দ্রুত জানাতে হবে। কারণ বন্ড পোস্টিং শুরুর সময় সংশ্লিষ্ট এস আর-কে লিখিতভাবে জানাতে হয় তিনি সরকারি হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোনও হাসপাতাল অথবা নার্সিংহোম যুক্ত থাকতে পারবেন না। এই নিয়ম শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ নয়, দেশের সব সরকারি হাসপাতালে প্রযোজ্য। বেনিয়মের বিষয়টি আর হালকাভাবে নিতে রাজি নয় স্বাস্থ্যদপ্তর। তাই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ফের হলফনামা দিতে বলা হয়েছে। এই জন্য ৬০ দিন বা দুমাস সময় ধার্য করা হয়েছে।
রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী পোর্টালে যেসব সরকারি ডাক্তারের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে তাঁদের 'ডক্টরস মাস্টার্স' সফটওয়ার ফরম আপলোড করে স্বাক্ষর করতে হবে। যদি কোনও সরকারি চিকিৎসক তালিকা থেকে নাম প্রত্যাহার করতে চান অর্থাৎ অতিরিক্ত ভাতা নেবেন না তাও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এবং স্বাস্থ্যদপ্তরে বদল করা যাবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের স্মার্টফোনের স্বাস্থ্যসাথী অ্যাপ থেকে তিনি নিজের কাজের যাবতীয় তথ্য দেখতে পাবেন। সরকারি ডাক্তারদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমকে তথ্য জানাতে হবে।