অভিরূপ দাস: বুকের ব্যথা কমানোর র্যানোজেক্স কিংবা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ টেলমা এইচ। বিগত কয়েক মাসে গুণমান পরীক্ষায় ব্যর্থ একের পর এক জীবনদায়ী ওষুধ। কপালে ভাঁজ সাধারণ মানুষের। আমজনতাকে সুরক্ষা দিতে নম্বর প্রকাশ করল ডাইরেক্টরেট অফ ড্রাগ কন্ট্রোল(ওয়েস্ট বেঙ্গল)। ওয়েস্ট বেঙ্গল ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ডের তরফে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ওষুধের শিশি/স্ট্রিপ সন্দেহজনক মনে হলেই ফোন করুন ডাইরেক্টরেট অফ ড্রাগ কন্ট্রোলে। নম্বর ২২২৫-২২১৩, ২২২৫-২২১৪। কোনও দোকান থেকে কেনা ওষুধ সন্দেহজনক মনে হলে, অথবা দীর্ঘদিন খাওয়ার পরেও তা কাজ না করলে ইমেল করেও জানানো যাবে অভিযোগ। মেল করার ঠিকানা tellddcwb@rediffmail.com।

‘সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন’ সূত্রে খবর, গত তিন মাসে ৩০০টির উপর ওষুধ ল্যাবরেটরিতে গুণমান পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক সংস্থার তৈরি ওষুধ। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরও। গুণগত মানের পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহার বন্ধ করতে সম্প্রতি নির্দেশিকা জারি করেছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। সেখানে বলা হয়েছিল, পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ব্যাচের ওষুধের তালিকা ও তথ্য সমস্ত সরকারি হাসপাতাল, সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর, পাইকারি বিক্রেতা এবং ডিস্ট্রিবিউটরদের নির্দেশিকা দিয়ে জানাতে হবে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলকে। যাতে কোথাও ওই সব ওষুধ ব্যবহার না হয়।
স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশ, যে সমস্ত ওষুধ ল্যাবরেটরিতে গুণমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি, সেই ‘এনএসকিউ’ (নট স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি) ওষুধ যেন কোনওভাবেই পাইকারি এবং খুচরো বিক্রেতাদের কাছ থেকে বিক্রি না হয়। সেটি নিশ্চিত করতে হবে ‘স্ট্রেট ড্রাগ কন্ট্রোল অথোরিটি’-কে। রাজ্যের প্রতিটি ওষুধের দোকানে অবিলম্বে সেই এনএসকিউ বা নট স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি ড্রাগের তালিকা ঝোলাতে বলেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। সূত্রের খবর, প্রতিটি ওষুধের দোকান এই তালিকা ঝুলিয়েছে কি না, তা দেখতে ওষুধের দোকানে অতর্কিতে হানা দেবে ওয়েস্ট বেঙ্গল ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ড। যদিও ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংগঠন, বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জানানো হয়েছে, কিছু সংস্থা এমনভাবে ওষুধ জাল করছে যে সাধারণ চোখে জাল ওষুধ আর আসল ওষুধ আলাদা করা মুশকিল। বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক পৃথ্বী বোস জানিয়েছেন, যারা জাল ওষুধ তৈরি করছে, তারা এতটাই নিখুঁতভাবে বানাচ্ছে যে, ব্যবসায়ীরাও ধরতে পারছেন না অনেক ক্ষেত্রে।