রমেন দাস: অবশেষে ইতিহাস গড়ল যাদবপুর! বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলে ছাত্রমৃত্যুর দু’মাস পর ক্যাম্পাস জুড়ে কাজ শুরু করল সিসিটিভি ক্যামেরা। অরবিন্দ ভবনের সামনের এক নম্বর গেট থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক গেটে বসল সিসিটিভি। শুধু বসলই না, মঙ্গলবার বিকাল থেকেই পুরোদমে কাজ শুরু করল অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ওই সিসিটিভি ক্যামেরা। গাড়ির নম্বর প্লেট থেকে শুরু করে অন্ধকারেও আনাগোনা ধরা, মুখ চিহ্নিতকরণ, সবক্ষেত্রেই পারদর্শী যাদবপুরের এই সিসিটিভি ক্যামেরা (CCTV Camera)।
বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) একাধিক গেট, ক্যাম্পাসের অন্দরের হস্টেল গেট এবং মেইন হস্টেলের গেটেও বসছে ক্যামেরা। মেইন হস্টেলের (Jadavpur University Main Hostel) গেটে মোট ৩টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসছে। এর মধ্যেই থাকছে বুলেট এবং এএনপিআর ধরনের ক্যামেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তিভবন এবং অরবিন্দ ভবনে থাকছে দিনরাত পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থাও। সেখানে থাকবেন কর্মীরা।
[আরও পড়ুন:‘ভুল হতেই পারে’, ১০০ দিনের কাজ নিয়ে ‘স্বীকারোক্তি’ রাজ্যের, কেন্দ্রের হলফনামা চাইল হাই কোর্ট]
এ বিষয়ে ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’ যোগাযোগ করেছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্যের সঙ্গে। অধ্যাপক বুদ্ধদেব সাউ (Buddhadeb Sau) বলেন, ”আমি একজন প্রশাসক না, একজন শিক্ষক হিসাবে লজ্জিত! বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার জায়গা। সেখানে যে সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে হবে, এটা ঠিক মনে হয় না। কিন্তু এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে যে এই ব্যবস্থা করতে হচ্ছে নিয়ম মেনে।” আপনি কি অনুতপ্ত? উপাচার্যের উত্তর, “শিক্ষকের কাজ পড়ানো। অনুতপ্ত তো বটেই!”
[আরও পড়ুন: ফের ডেঙ্গু মৃত্যু কলকাতায়, আবারও প্রাণ গেল দক্ষিণ দমদম এলাকার বাসিন্দার]
যদিও ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’-এ নদিয়ার বাসিন্দা ওই মৃত ছাত্রের বাবা জানান, ”শুনলাম সিসিটিভি ক্যামেরা বসল অবশেষে। সেটা করতেও ২ মাস কেটে গেল! আমার ছেলেটাকে তো আর পাব না। আশা করব, যে অপরাধ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে হয় সেটা কমবে! অনেক প্রাণ বাঁচবে।”
দেখুন ভিডিও:
প্রসঙ্গত, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো নিয়ে বিতর্ক হয় বিস্তর। একাধিক বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের তরফে সিসিটিভি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। কিন্তু এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া তথা এসএফআই (SFI) সদস্য পাভেল রায় চৌধুরীর দাবি, ”সিসিটিভির বিরোধিতা আমরা কোনও দিন করিনি। কিন্তু ক্যাম্পাসে নজরদারির পক্ষে নই। আমাদের অবস্থান একই রয়েছে। আমাদের দাবি, সিসিটিভি ক্যামেরা বসুক যেখানে প্রয়োজন সেখানেই। কিন্তু আলোচনা হোক। একতরফা যেন কিছু না হয়।” যদিও বাম ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে তোপ দেগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (TMCP) ইউনিটের নেতা সঞ্জীব প্রামাণিক বলেন, ”আগেই প্রয়োজন ছিল সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর। অনেকেই বাধা দিয়েছেন এই কাজে। অসাধ্য সাধন হল অবশেষে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য এটার বিরোধিতা আমরা কোনও দিন করিনি। সাধুবাদ জানাই এই সিদ্ধান্তকে। আসলে আমাদের আন্দোলনের জয় হল।” কিন্তু কত দিন সঠিক থাকবে সিসিটিভি, আদৌ রক্ষণাবেক্ষন হবে তো? এমন প্রশ্নও তুলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ কেউ।