অর্ণব আইচ: ৬ বছর আগে কলকাতা পুলিশ থেকে চাকরি গিয়েছিল। কিন্তু তার পরও পুলিশ অফিসার সেজে রাস্তায় জরিমানা নেওয়ার নামে তোলাবাজি ও প্রতারণা করে চলেছিলেন হোমগার্ড। সার্জেন্ট পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে মধ্য কলকাতার বউবাজার থানার (Bowbazar Police Station) পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলেন প্রসাদ সিংহ নামের সেই ব্যক্তি। তাঁর মোবাইল ফোন থেকে উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু তথ্য। সন্ধান মিলেছে তাঁর এক সঙ্গীরও।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৩ আগস্ট এই ঘটনার সূত্রপাত। বীরভূমের বাসিন্দা দেবব্রত চট্টোপাধ্যায় কলকাতায় (Kolkata) গাড়ি নিয়ে কিছু বৈদ্যুতিন সামগ্রী কিনতে এসেছিলেন বউবাজারের চাঁদনি মার্কেটে। একটি দোকানের সামনে গাড়ি পার্ক করে রাখেন তিনি। তখনই সঙ্গীকে নিয়ে এগিয়ে আসেন সরশুনার বাসিন্দা প্রসাদ সিংহ। নিজেকে বউবাজার থানার সার্জেন্ট বলে পরিচয় দেন প্রসাদ। বলেন, নো পার্কিং এলাকায় গাড়ি রাখার জন্য মোটা টাকা জরিমানা দিতে হবে। গাড়িটি আটক করে রাখার হুমকিও দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত রফায় আসতে দেবব্রতবাবুর কাছ থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যান প্রসাদ। দেবব্রতবাবু পুলিশের কাছে তখন লিখিত অভিযোগ দায়ের না করলেও বিষয়টি জানিয়ে রাখেন।
[আরও পড়ুন: ‘আত্মসম্মানের সঙ্গে আপস নয়’, গুলাম নবি আজাদের পর কংগ্রেসের পদ ছাড়লেন আনন্দ শর্মাও]
আবার গতকাল, শনিবার বউবাজারের চাঁদনি মার্কেটে জিনিস কিনতে আসেন বীরভূমের ইলামবাজারের বাসিন্দা সুভাষ নস্কর। তিনি গাড়ি পার্কিং করে রেখেছিলেন। একইভাবে সার্জেন্ট পরিচয় দিয়ে তাঁর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা চান প্রসাদ। তারই জেরে সুভাষবাবু প্রতিবাদ করে ওঠেন। শুরু হয় বচসা। প্রসাদ পালানোর আগেই তাঁকে ধরে এলাকার বাসিন্দারা তুলে দেয় বউবাজার থানার পুলিশের হাতে।
জেরার মুখে প্রসাদ স্বীকার করেন যে, তিনি কলকাতা পুলিশে হোমগার্ডের চাকরি করতেন। ৬ বছর আগে অপরাধের অভিযোগেই তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। এর পর থেকে তিনি শুরু করেন পুলিশ সেজে প্রতারণা। রবিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে ধৃতর জামিনের বিরোধিতা করেন সরকারি আইনজীবী অরূপ চক্রবর্তী। তাঁকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। ধৃতকে জেরা করে তাঁর সঙ্গীর খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।