অর্ণব আইচ: কলকাতায় ‘পাক বউ’য়ের সংখ্যা কত? কতজনই বা ‘চিনা বউ’? কী-ই বা তাঁদের কার্যকলাপ? এবার সেই তথ্যই জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। এই ব্যাপারে ডেটা বেসও তৈরি করা হচ্ছে বলে খবর। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশে পুলিশের হাতে পাকিস্তানি মহিলা সীমা হায়দার (Seema Haider) ধরা পড়ার পর আরও তৎপর হয়েছেন গোয়েন্দারা। ওই মহিলার বিরুদ্ধে পাক চর সংস্থা আইএসআইয়ের হয়েও চরবৃত্তির অভিযোগ ওঠে। ওই পাক মহিলার জাল ভারতীয় নথি তৈরির অভিযোগে উত্তরপ্রদেশের নয়ডা পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতারও করেছে।
শনিবার রাতেই হো চি মিন সরণিতে কলকাতার মার্কিন দূতাবাসের কাছ থেকেই সন্দেহভাজন এক পাক মহিলাকে আটক করা হয়। ওই মহিলার কাছে বৈধ পাসপোর্ট, ভিসা ও অন্যান্য নথি থাকার কারণে প্রায় ২৪ ঘণ্টা টানা জেরার পর তাঁকে ছেড়ে দেন কলকাতার গোয়েন্দারা। যদিও গোয়েন্দারা তাঁর গতিবিধির উপর নজরদারি রাখছেন। সূত্রের খবর, তাঁর পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য নিতে শুরু করেছেন গোয়েন্দারা (Intelligence Department)। কোন কোন দেশ হয়ে তিনি এই দেশ তথা কলকাতায় এসেছেন, সেই তথ্যও গোয়েন্দারা জানার চেষ্টা করছেন।
[আরও পড়ুন: সীমান্তে খতম অনুপ্রবেশকারী, পাকিস্তান-চিনকে বার্তা দিয়ে কাশ্মীরে উড়ল ভারতে তৈরি তেজস]
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশে সীমা হায়দার ধরা পড়ার পর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা প্রত্যেকটি রাজ্য ও শহরের পুলিশকে সতর্ক করে। সেইমতো সতর্ক হয় কলকাতা পুলিশও। গোয়েন্দাদের সূত্র জানিয়েছে, কলকাতার বেশ কয়েকটি জায়গায় এমন মহিলারা থাকেন, যাঁরা আসলে পাকিস্তানের বাসিন্দা, কিন্তু এখন কলকাতার বাসিন্দাদের স্ত্রী। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন বহু বছর ধরে কলকাতায় থাকলেও তাঁরা এখনও পাক (Pakistan) পাসপোর্টের অধিকারী। তাঁদের পাসপোর্টের মেয়াদ বৃদ্ধি করতে হয়। তার জন্য কলকাতা পুলিশের বিশেষ দফতরও রয়েছে। কিন্তু এবার শহরের ‘পাক বউ’রা শুধু গৃহবধূ হিসাবেই রয়েছেন, না কি তাঁরা কোথাও কাজ করছেন, তাঁদের কেউ কোনও সন্দেহভাজন কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত কি না, সেদিকে গোয়েন্দারা নজর রাখতে শুরু করেছেন। আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য ওই মহিলারা পাকিস্তানে ফোনও করেন। কিন্তু তাঁরা কাকে বা কাদের ফোন করছেন, যাঁদের ফোন করছেন, তাঁদের আসল পরিচয় কী, এবার তাও জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। সূত্রের খবর, এই ব্যাপারে ওই ‘পাক বউ’য়ের ব্যাপারে ডেটা বেস তৈরির কাজও শুরু হয়েছে।
একইভাবে কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলার বাসিন্দা বিয়ে করেছেন চিনা মহিলাদেরও। দেখা গিয়েছে, কলকাতা বা জেলার যুবকদের মধ্যে অনেকেই চিনের (China) কুনমিং-সহ কয়েকটি প্রদেশে পড়াশোনা করতে যান। অনেকেই সেখানে ডাক্তারি পড়েন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন চিনা যুবতীদের বিয়ে করেছেন। আবার কয়েকজন ব্যবসা করতে গিয়েও বিয়ে করে এনেছেন ‘চিনা বউ’। ওই ‘চিনা বউ’দের মধ্যে কয়েকজন গত কয়েক বছর ধরে এই রাজ্যেই রয়েছেন। তাঁরা কোথাও কাজ করেন কি না, বা কার কার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, সেই তথ্যও জানার চেষ্টা করে ডেটা বেস তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ওই পাক বা চিনা ‘বউ’দের মধ্যে কেউ চরবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত কি না, সেই তথ্য জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।