ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ও নব্যেন্দু হাজরা: কলকাতার হেরিটেজ আজ রুগ্ন। সার্ধশতবর্ষ পেরোনোর পথে ধুঁকছে ট্রাম। ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এ খবর প্রকাশিত হতেই ট্রামের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করলেন খোদ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (Biman Banerjee)। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানান, পরিস্থিতি যাই হোক কলকাতার ঐতিহ্য ট্রাম যেন বন্ধ না করা হয়। যার জবাবও দিয়েছেন কলকাতার মেয়র। আশ্বস্ত করেছেন, ট্রাম তুলে দেওয়া হবে না।
১৮৭৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় প্রথম ঘোড়ায় টানা ট্রাম চালু হয়। কালক্রমে সেই ট্রাম (Kolkata Tram) শহরবাসীর ঐতিহ্যের অংশ হয়ে গিয়েছে। শহরবাসীর অস্থিমজ্জায় ঢুকে গিয়েছে ট্রাম নিয়ে নস্ট্যালজিয়া। কিন্তু শুধু নস্ট্যালজিয়াতে তো দিন চলে না। তাই কালের নিয়মে ট্রাম আজ রুগ্ন। ইউরোপের বহু দেশে কিন্তু গণপরিবহণের অন্যতম মাধ্যম এই ট্রাম। কারণ, ডিজেল চালিত বাসের মতো তা দূষণের কালো ধোঁয়া ছড়ায় না। তাই পশ্চিমী দুনিয়ায় ট্রামের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। অথচ ঠিক উলটো পথে কলকাতা। ২৫টি ট্রাম রুট কমতে কমতে এখন দুয়ে এসে ঠেকেছে। তাও পরিষেবা অনিয়মিত। ট্রাম কোম্পানির কর্তারাই বলছেন, নাম কা ওয়াস্তে ট্রাম চালানো হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য স্পষ্ট’, বিবিসির তথ্যচিত্র নিয়ে বিস্ফোরক জয়শংকর]
‘সংবাদ প্রতিদিন’-এ ট্রামের এই দৈন্যদশা নিয়ে প্রকাশিত খবর নজরে পড়েছিল রাজ্যের বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মঙ্গলবার বিধানসভায় তিনি বলেন, ‘কলকাতার ট্রাম তুলে দেওয়ার খবর শুনলাম। মেয়র রয়েছেন। এটা আমাদের আবেগের বিষয়। ট্রাম আমাদের কলকাতার ঐতিহ্য। আমি অনুরোধ করব কলকাতার মেয়র যেন বিষয়টি দেখেন। ট্রাম নিয়ে আমাদের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। দেখবেন যাতে বন্ধ না হয়ে যায়।’
[আরও পড়ুন: ছত্তিশগড়ে ফের নৃশংস মাওবাদী হামলা, গলা কেটে হত্যা পুলিশকর্মীকে!]
স্পিকারের আরজি শুনে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) স্বীকার করে নেন, মেট্রো রেলের কাজ ও অন্য কিছু কারণে কয়েকটি রুটের ট্রাম চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। আবার কিছু জায়গায় লাইন খারাপ হয়ে গেছে। তবে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “ট্রাম বন্ধ করে দেওয়ার কোনও অভিপ্রায় সরকারের নেই।’ যেসব রুটে লাইন খারাপ হয়েছে, সেগুলি মেরামত করার চেষ্টা করছে সরকার। মেয়রের আশ্বাসবাণী, আমি দেখছি কী করা যায়।