সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনীতি হল ক্রিকেট ম্যাচ। যেখানে খেলা শেষ বল পর্যন্ত না গড়ালে জয়ের উৎসব করা উচিত নয়। মহারাষ্ট্রের মাটিতে রাজনীতির সেই ঘূর্ণি কি এখনও বাকি! মারাঠাভূমে বিজেপির বিজয় উৎসবের মাঝেই কার্যত তেমনই ইঙ্গিত দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহারাষ্ট্রে 'মহাজুটি' সরকার গঠন করলেও সেই সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন তিনি। স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন, বিজেপির এই জোড়াতালির সরকার এক বছরও টিকবে না।
শুক্রবার 'নিউজ ১৮ বাংলা'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একের পর এক ইস্যুতে মুখ খোলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই উঠে আসে মহারাষ্ট্র প্রসঙ্গ। শিণ্ডের শিব সেনা ও অজিতের এনসিপিকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি সরকার গঠন করলেও তৃণমূল নেত্রী বলেন, "বিজেপির কাজই হল দেশে বিভাজন তৈরি করা। ভোটে হারের জন্য ভুল অনেকের রয়েছে। ভোট কাটাকাটিও একটা বড় ঘটনা।" তবে মহারাষ্ট্রে বিজেপি যে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি সে কথা স্মরণ করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় মহারাষ্ট্রে সুতোর উপড়ে ঝুলছে বিজেপি। দল ভেঙে যাঁদের নেওয়া হয়েছিল তাদের দুটো গ্রুপের সমর্থনে আপাতত সরকার চালাচ্ছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি বলব এই সরকার কতদিন টিকবে তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।"
এর পরই সুর চড়িয়ে স্পষ্টভাবে তৃণমূল নেত্রী বলেন, "মহারাষ্ট্রে সরকার এক বছরও টিকবে না। এই সরকার স্থায়ী সরকার নয়।" দুই শরিককে খুশি করতে একনাথ শিণ্ডে ও অজিত পওয়ারকে মুখ্যমন্ত্রী পদ দিলেই যে সরকার দীর্ঘমেয়াদী হবে তার কোনও মানে নেই। এমনটা জানিয়েই মমতা বলেন, "এই সরকার স্থায়ী সরকার নয়। ফলে দুইয়ের জায়গায় ওরা ১০টা উপমুখ্যমন্ত্রী করতে পারে। আপনার যদি নিজের সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকে তাহলে মানুষকে নেতৃত্ব দেবেন কীভাবে? অর্থনীতি, রাজনীতি কীভাবে চালাবেন?"
তৃণমূল নেত্রীর এহেন মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই জাতীয় রাজনীতিতে জল্পনা শুরু হয়েছে, তবে কী পালাবদল হতে চলেছে মহারাষ্ট্রে? বস্তুত, ২৮৮ আসনের মহারাষ্ট্র বিধানসভা জোট শরিকদের সঙ্গে নিয়ে ২৩০ আসন পেয়ে সরকার গড়েছে বিজেপি। এদিকে বিজেপির এই জোট শরিক শিব সেনা ও এনসিপি থেকে ভাঙিয়ে আনা নেতাদের নিয়ে গড়া। এর পর মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে শিণ্ডে ও ফড়ণবিসের টানাপোড়েন দেখেছে গোটা দেশ। ফলে যেভাবে শিব সেনা ও এনসিপি ভেঙেছে সেভাবে ফের যদি তারা এক হয়ে যায় তবে সরকার বদল অবসম্ভাবী। মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে মহারাষ্ট্রে গত কয়েকদিনের টানাপোড়েন ইতিমধ্যেই সে ইঙ্গিত দিয়ে দিয়েছে।