ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: এসআইআর (SIR in Bengal)-এর জন্য জন্মের শংসাপত্র চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু তা অনেকের কাছেই নেই। জন্মের শংসাপত্র নেই তাঁর মা-বাবারও। কারণ, তাঁরা হাসপাতালে নয়, বাড়িতে জন্মেছিলেন। এই যুক্তিতে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা বা এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেই সূত্রে নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। তৃণমূলনেত্রীর মমতার দাবি, মোদি-শাহদের কাছেও তাঁদের মা-বাবার জন্মের শংসাপত্র নেই। তাঁরা ডুপ্লিকেট বা নকল, ভুয়ো শংসাপত্র বানিয়ে নিয়েছেন বলেও মন্তব্য করলেন মমতা।
সোমবার নেতাজি ইন্ডোরে বিএলএ-দের সঙ্গে বৈঠকে মমতা বলেন, "কতজন স্কুলে পড়ত? সার্টিফিকেট কতজনের আছে? আমার মা-বাবার জন্ম বাড়িতে। তাঁদেরও নেই। নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ পারবেন? ফেক, ডুপ্লিকেট সার্টিফিকেট বানিয়েছে!" এর পরেই তৃণমূলনেত্রীর কটাক্ষ, "একটা ডুপ্লিকেট, ফেক (শংসাপত্র) বানাতে এক সেকেন্ড লাগে। কিন্তু আমরা তো ডুপ্লিকেট বানাব না। বড়দিন আসছে, আমরা কেক বানাব। সেই কেক খেয়ে তোমাদের (বিজেপিকে) হজম করব।”"
এসআইআর (SIR in Bengal) প্রক্রিয়া যে সব নথি চেয়েছে নির্বাচন কমিশন, তা নিয়ে প্রথম থেকেই প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তাঁর বক্তব্য, ২৫-৩০ বছর আগে অধিকাংশ মানুষেরই জন্ম বাড়িতে হত। তখন হাসপাতালে জন্মের হার এত বেশি ছিল না। ফলে তাঁদের কারও কাছেই জন্মের শংসাপত্র নেই। তাঁদের পক্ষে কী ভাবে এই ধরনের নথি জোগাড় করা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা। এ দিনও তৃণমূলনেত্রী বলেন, "১৮ বছরে ভোটাধিকার এসেছে রাজীব গান্ধীর সময়। আগে ভোটাধিকার মিলত ২১ বছরে। এ সব যদি হিসাব করেন, তাহলে মা-বাবার সার্টিফিকেট পাবেন কী করে?"
কমিশনকেও বিঁধেছেন মমতা। বলেছেন, “একজন ভোটার ২০০২ সালে কোনও ঠিকানায় ছিলেন। আজ সেই ঠিকানায় নেই। থাকবেন কী করে! তিনি তো অন্য ওয়ার্ডে চলে গিয়েছেন। বিয়ের পরে মেয়েরা শ্বশুরবাড়ি চলে যায়। কেউ পদবি পরিবর্তন করে, কেউ করে না। যারা পরিবর্তন করেছে, তাদের আপনারা বাদ দিয়ে দিচ্ছেন। কোন কারণে! তারা বৈধ ভোটার। কেউ বাবা-মায়ের নাম লিখতে গিয়ে ‘এ’-র জায়গায় ‘ই’ লিখেছে। বাংলায় যেটা ‘আ’ হয়, ইংরেজিতে সেটা ‘ডবল এ’ হয়। একটা হকার, দোকানদার, একটা গরিব মানুষ, বস্তির মানুষ, একটা মহল্লার মানুষ, কলোনির মানুষ তোমার ইংরেজি বুঝবে কী ভাবে।”
