ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় : বাংলাদেশে চরমে হিন্দু নির্যাতন। পরিস্থিতি আরও ঘোরাল করে বাংলা, বিহার, ওড়িশা দখলের ডাক দিয়েছে খালেদা জিয়ার দল বিএনপি। এই প্রেক্ষাপটে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে সম্প্রীতির বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সাফ জানালেন, বাংলা সবার। ধর্মীয় উন্মাদনার জায়গা এখানে নেই। একই সঙ্গে ওপার বাংলায় মৌলবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থান যে অত্যন্ত কঠোর, তাও স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বাংলাদেশ ইস্যুতে বিধানসভা থেকে বার্তা দিলেন মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের বিধায়করা যাতে কোনও বিতর্কিত মন্তব্য না করেন। সাধারণ মানুষদেরও একইভাবে বিতর্কিত মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে বললেন তিনি। বাংলাদেশ ইস্যুতে শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপি বিধায়করা সরব। একাধিক বেলাগাম মন্তব্যও করছেন তাঁরা। সেখানে বিধানসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তা অত্যন্ত ইঙ্গিতপূর্ণ। এমনই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'বাংলাদেশের যে সংখ্যালঘু অত্যাচার চলছে সেটাকে ভালো চোখে দেখছি না। দাঙ্গা কোনও হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান করে না। করে কিছু সমাজ বিরোধী, তারা সমাজের বোঝা। আমরা যেন এমন মন্তব্য না করি, তাতে সমাজে তার প্রভাব পড়ে, কারও ক্ষতি হয়। এটা কেন্দ্রের বিষয়। তাদের কথা আমরা শুনব।' মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'কাল কিছু মানুষ এই নিয়ে প্রতিবাদ করেছেন। অভিনন্দন জানাই। এই বাংলাই সেদিক থেকে বড় স্তম্ভ। অনেকে বলেছিল মিছিল করতে। আমরা দাঙ্গা চাই না, শান্তি চাই। একটা হিন্দুর গায়ে যে রক্ত আছে, মুসলিমেরও সেই রক্ত আছে।'
বিরোধী দলের বিধায়কদের উদ্দেশ্য করেও বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'আমরা যেন অতিরিক্ত কথা না বলি। যারা বলছেন এটা নিয়ে রাজনীতি করবেন, জেনে রাখুন এতে আপনার রাজ্যের ক্ষতি হবে। বলা ভালো, বাংলাদেশ ইস্যুতে প্রবল আক্রমণাত্মক শুভেন্দু অধিকারী সহ রাজ্য বিজেপি নেতারা। বাংলাদেশের সীমান্ত বন্ধ করার দাবি তোলা হয়েছে। যুদ্ধবিমান পাঠানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। সেখান থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা গুরুত্বপূর্ণ। জানাচ্ছেন ওয়াকিবহাল মহল।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'বিদেশ সচিবের মিটিং আছে। তাঁদের সিদ্ধান্ত নিতে দিন। বিদেশ মন্ত্রক যে গাইডলাইন দেয়, সেটা আমরা মেনে চলি। আমরা এমন একটা পরিবেশ তৈরি করি, যাতে বাংলা দেখিয়ে দেবে ভারতবর্ষের জাতীয়তাবোধ, মমত্ববোধ সব থেকে সেরা।' কেন্দ্রের বার্তা অনুসারেই যে রাজ্য চলবে। মুখ্যমন্ত্রী কথায়, 'কেন্দ্রীয় সরকারের কিছু পলিসি আছে। এটা তাঁদের এক্তিয়ারে। অনেকে ঢুকতে চাইছে। কিন্তু তাদের ঢুকতে দেবে কী না, কেন্দ্রের ব্যাপার। কিন্তু যাদের একটু টাকা পয়সা আছে, তারা প্লেনে আসছে। কিন্তু গরিবদের কাছে যাদের কিছু নেই, তাঁরা আসতে পারছে না। বিএসএফকে বলছে।'
বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে কিছু বলার নেই। ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা হবে। এদিন সেই কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী।