সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গাপুজোর রেশ এবার থাকবে সারাবছর ধরে। বছরে ৩৬৫ দিনই দেবী দুর্গার পুজো করা যাবে। পূর্ব ঘোষণামতো সোমবার বিকেলে নিউটাউনে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে দুর্গা অঙ্গনের শিলান্যাস করে এর বিশেষত্বের কথা সবিস্তারে বর্ণনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পাশাপাশি ছাব্বিশের ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী 'হিন্দুত্বে' জোর দিচ্ছেন বলে বিরোধীরা যে রব তুলেছিলেন, তারও সপাট জবাব দিলেন তিনি।
দুর্গা অঙ্গনের শিলান্যাসে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: পিন্টু প্রধান।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ''আমি সব ধর্মকে শ্রদ্ধা করি। সব ধর্মের সব অনুষ্ঠানে থাকি। কারণ, আমি মনে করি ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। জানেন এই দুর্গা অঙ্গন কেন তৈরি হচ্ছে? যাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, তাঁদের বলি। ইউনেস্কো আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজোকে কালচারাল হেরিটেজের তকমা দিয়েছে। তাদের স্বীকৃতিকে সম্মান জানাতে এই দুর্গা অঙ্গন তৈরি করা হল। সেই সঙ্গে সারাবছর এখানে মা দুর্গার দর্শন ও নিত্যপুজো হবে।'' মমতা জানান, আগামী ২ বছর অর্থাৎ ২০২৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই অঙ্গন তৈরির কাজ শেষ হবে।
কী কী থাকবে দুর্গা অঙ্গনে? এদিনের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে তা সবিস্তারে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।নিউটাউনে ইকো পার্কের কাছে ১৭.২৮ একর জমিতে তৈরি হওয়া দুর্গা অঙ্গনের চারপাশে থাকবে ২০ ফুট চওড়া রাস্তা। প্রতিদিন ১ লক্ষ ভক্ত আসতে পারবেন, উঠোনে একসঙ্গে হাজার ভক্তের বসার ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। ১০৮ দেবদেবীর মূর্তি, ৬৪ সিংহ মূর্তি থাকবে। ৩৬৫ দিন খোলা থাকবে দুর্গা অঙ্গন, দেওয়া যাবে পুজো। লক্ষ্মী, সরস্বতীর আলাদা মণ্ডপ, আলাদা প্রসাদ তৈরির ঘর এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ঘর তৈরি হবে। মন্দির চত্বরে তৈরি হবে দোকান, হবে কর্মসংস্থানের সুযোগ। এসব করতে মোট খরচ হবে ২৬১ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে রাজ্য দিচ্ছে ১৭০০ কোটি টাকা। গোটা কাজ হচ্ছে হিডকোর তত্ত্বাবধানে।
মমতার কথায়, ''প্রথমে যখন জায়গাটা দেখেছিলাম তখন ছিল ১২.৬ একর জমি। কিন্তু আমি ভাবলাম, দুর্গা অঙ্গন হচ্ছে যখন, বড় করে, ভালো করেই হোক। এখন মোট প্রায় ১৮ একর জমিতে গড়ে উঠছে। এই জায়গা বেছে নিলাম কেন? এর সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিমানবন্দর থেকে এখানে লোকজন আসতে পারবে সহজে।'' মুখ্যমন্ত্রী জানান, সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিকতার মেলবন্ধন হিসেবে তৈরি হবে দুর্গা অঙ্গন।
