সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বর্ণবিদ্বেষের শিকার হয়ে দেরাদুনে মৃত্যু হয়েছে ত্রিপুরায় পড়ুয়া অ্যাঞ্জেল চাকমার! এমন অভিযোগ ঘিরে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিতর্ক আরও বাড়াল দেরাদুন পুলিশ। ‘বর্ণবিদ্বেষ’-এর তত্ত্ব খারিজ করে এক পুলিশ আধিকারিক জানালেন, অ্যাঞ্জেলকে উদ্দেশ্য করে অভিযুক্তরা কোনও মন্তব্য করেননি। তাঁরা নিজেরা ঠাট্টা করছিলেন।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে দেরাদুনের সিনিয়র পুলিশ সুপার অজয় সিং বলেন, “ঘটনার দিন কয়েকজন যুবক নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলছিলেন। ঠাট্টা করছিলেন। কিন্তু কোনওভাবে ধারণা তৈরি হয় যে সেগুলি অ্যাঞ্জেলকে উদ্দেশ্য করে বলা। এই বিভ্রান্তির মধ্যেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গোটা ঘটনাটি সাময়িক উত্তাপের প্রতিফলন ছিল। অ্যাঞ্জেলকে যে মন্তব্যগুলি করা হয়েছিল, তা কোনও ভাবেই বর্ণবিদ্বেষী ছিল না। কারণ, ঘটনায় অভিযুক্ত এক যুবক ত্রিপুরারই বাসিন্দা।” তিনি আরও বলেন, “দু’পক্ষই একে অপরকে চিনত না। ফলে বিবাদ হওয়ার কোনও কারণই ছিল না। অভিযুক্তদের মধ্যে একজন জিজ্ঞাসাবাদের সময় শিকার করে নিয়েছেন যে তাঁরা অ্যাঞ্জেলকে উদ্দেশ্য করে কোনও মন্তব্য করেনি। তাঁরা নিজেদের মধ্যে হাসি-ঠাট্টা করেছিল।”
ত্রিপুরার বাসিন্দা বছর চব্বিশের অ্যাঞ্জেল দেরাদুনের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া ছিলেন। জানা গিয়েছে, গত ৯ ডিসেম্বর তিনি ও তাঁর দাদা মাইকেল চাকমা কিছু সামগ্রী কিনতে বাজারে গিয়েছিলেন। সেই সময়ে কয়েকজন মদ্যপ যুবক তাঁদের বর্ণবিদ্বষী মন্তব্য করতে থাকেন বলে অভিযোগ। অভিযুক্তরা তাঁকে, চিনা নাগরিক বলে দাগিয়ে দেন। প্রতিবাদ করতেই বচসায় জড়িয়ে পড়েন অ্যাঞ্জেল। অভিযোগ, ধারালো অস্ত্র দিয়ে চাকমা ভাইদের উপর আচমকা হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর পাশাপাশি লোহার রড দিয়েও তাঁদের বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন অ্যাঞ্জেল। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। জানা গিয়েছে, মৃত্যুর আগে হামলাকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমি চিনা নই, ভারতের নাগরিক।”
