ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বহু হেভিওয়েট প্রার্থীকে হারের মুখ দেখতে হয়েছে। সেই তালিকায় খুব কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সংখ্যা কম নয়। প্রায় ১৩ জন মন্ত্রী পরাজিত হয়েছেন। আর সেই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ''ভগবান হারিয়ে দিয়েছে, ওদের ভালো হোক।'' এখানে মমতার নিশানায় বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি আর এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান বিনোদ সোনকার। দুজনের বিরুদ্ধেই দিল্লিতে তৃণমূল প্রতিনিধিদের হেনস্তার অভিযোগ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে গত অক্টোবরে তৃণমূলের কৃষিভবন যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে মমতার খোঁচা, ''অভিষেকদের চুলের মুঠি ধরে তাড়িয়েছিল, এবার ভগবান হারিয়েছে, ওঁদের ভালো হোক।''
রাজ্যের কৃষক-শ্রমিকদের জন্য ১০০ দিনের কাজের বকেয়া চাইতে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নেতৃত্বে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল গিয়েছিল দিল্লিতে (Delhi) কৃষি ভবনে, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতির সঙ্গে দেখা করতে। কিন্তু তাঁদের সময় দেওয়ার পর দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করিয়েও দেখা করেননি মন্ত্রী। উপরন্তু তৃণমূল (TMC) প্রতিনিধিরা তাঁর ঘরের সামনে গেলে নিরাপত্তারক্ষীদের দিয়ে বের করিয়ে দেওয়া হয়। মহিলা সাংসদ মহুয়া মৈত্র, প্রতিমা মণ্ডলদের প্রতি যথেষ্ট আপত্তিকর আচরণ করা হয়েছে। মহুয়াকে রীতিমতো টানাহেঁচড়া করা হয়। সেসব ভিডিও ভাইরাল।
[আরও পড়ুন: চন্দ্রবাবু ৪, মোদির মন্ত্রিসভায় কটি মন্ত্রক পাচ্ছেন কিংমেকার নীতীশ?]
সেই ঘটনায় দুই মূল কাণ্ডারি বলে ধরা হয় যাঁকে, সেই সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি এবারের নির্বাচনে (2024 Lok Sabha Election) পরাজিত হয়েছেন। পাশপাশি এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান বিনোদ সোনকার, যাঁর অঙ্গুলিহেলনে মহুয়া মৈত্রর সাংসদ পদ খারিজ হয়েছিল বলে অভিযোগ, তিনিও হেরে গিয়েছেন। শনিবার সেই প্রসঙ্গ তুলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বললেন, ''আমাদের দল বকেয়া চাইতে গিয়েছিল দিল্লিতে। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন তাঁদের সময় দিয়েও দেখা করেননি। কৃষিভবন থেকে অভিষেকদের চুলের মুঠি ধরে বের করে দিয়েছিল। এবার ওদের ভগবান হারিয়েছে, ওঁদের ভালো হোক।'' এই বার্তাতেই স্পষ্ট, হেনস্তার বিরোধিতায় হেনস্তা নয়, মুখ বুজে সহ্যও নয়। প্রতিশোধ শুধু সময়ের হাতে ছেড়ে রেখেছিলেন তৃণমূল নেত্রী ও তাঁর টিম। লোকসভা ভোটে হারে সেই প্রতিশোধ নেওয়া হয়ে গেল।