সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৬২ দিনের মাথায় জয়নগরে নাবালিকা ধর্ষণ-খুনের কিনারা করে ফাঁসির সাজা ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। রাজ্য পুলিশের সক্রিয়তা আর দক্ষতাতেই বিচারব্যবস্থায় এমন নজিরবিহীন ঘটনা। শুক্রবার বিকেলে বারুইপুর আদালত দোষীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে মুখ্যমন্ত্রী পুলিশের প্রশংসা করেছিলেন। সন্ধেবেলা নিউজ ১৮ বাংলার সম্পাদক বিশ্ব মজুমদারকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে সেকথা আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর আক্ষেপের সুরে বললেন আর জি কর কাণ্ডে (RG Kar Case) বিচারের কথা। তাঁর বক্তব্য, ''আমি মা-বাবাকে বলেছিলাম, একমাস সময় দিন। বিচার হবেই। তার পর না হলে তখন সিবিআই দিতে। কিন্তু তার আগেই সিবিআইয়ের হাতে চলে গেল তদন্তভার।'' প্রায় চারমাস হয়ে গেলেও আর জি করের চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া এগোল না তেমন, এই আক্ষেপ শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। সেই সঙ্গে এই ঘটনা ঘিরে গড়ে ওঠা নাগরিক আন্দোলন যে রাজনৈতিক, তা প্রমাণিত বলে জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
গত ৯ আগস্ট আর জি কর হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় জুনিয়র চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনা তোলপাড় ফেলেছিল গোটা দেশে। পুলিশ তদন্তে নেমে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মূল অভিযুক্ত হিসেবে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে সিবিআই তদন্তে নেমে দ্বিতীয় কাউকে গ্রেপ্তার করা দূর অস্ত। চার্জশিটে সঞ্জয় রায়কেই মূল অভিযুক্ত হিসেবে দেখানো হয়েছিল। এখন শিয়ালদহ আদালতে এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলছে।
এই ঘটনার দ্রুত বিচারের দাবিতে পথে নেমে এসেছিল নাগরিক সমাজ। আমজনতা অংশ নেন 'রাতদখল' কর্মসূচিতে। কর্মবিরতি করেন জুনিয়র ডাক্তারদের একটা বড় অংশ। দফায় দফায় সরকারের সঙ্গে আলোচনা, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের সাপেক্ষে কর্মবিরতি তুলে নেওয়া হয়। তবে সেই আন্দোলনের নেপথ্যে যে বড়সড় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ছিল, তা এতদিনে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। শুক্রবার নিউজ ১৮ বাংলায় সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রী এই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে বললেন, ''আন্দোলন কেউ করতেই পারে, সেটা গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু এই আন্দোলন যে রাজনৈতিক ছিল, তা তো প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে।''
এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার নিউজ ১৮ বাংলায় সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর গলায় আক্ষেপ ঝরে পড়ল যে সিবিআই তদন্তের মাঝে সময় নষ্ট না হলে হয়ত ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে এতদিনে আর জি কর মামলার নিষ্পত্তি হয়ে যেত। যেমনটা হয়েছে জয়নগরে নাবালিকা ধর্ষণ-খুনের ঘটনায়। মাত্র ৬২ দিনের মাথায় দোষী সাব্যস্ত ও শাস্তি ঘোষণা হয়েছে।