shono
Advertisement

এবার সাত, আবারও বেস্ট সেলার হওয়ার পথে মমতার নতুন বই

মুখ্যমন্ত্রীর লেখা সব বই বিকোচ্ছে ঝড়ের গতিতে।
Posted: 09:25 AM Jan 22, 2024Updated: 09:25 AM Jan 22, 2024

ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: আসছে বছর দেড়শো ছোঁবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) লেখা বইয়ের সংখ‌্যা। কিন্তু তার আগে এ বছরই আরেক রেকর্ড ভাঙার দিকে দৌড়চ্ছে তাঁর লেখা ১৪৩টি বইয়ের বিক্রি। ৪৭-তম বইমেলায় রবিবার প্রথম তাঁর এবারের লেখা ৭টি বই একত্রে পাওয়া গিয়েছে। কার্যত ‘হট কেকে’র মতো সেসব স্রেফ উড়ে গিয়েছে। গতবার বেস্ট সেলার হয়েছিল মুখ‌্যমন্ত্রীর লেখা বই। এবারও ট্রেন্ড সেই দিকেই বলে মনে করছে প্রকাশনা সংস্থাগুলি।

Advertisement

১৮ জানুয়ারি বইমেলার উদ্বোধনের দিন দুটি বই প্রকাশ করা হয় মুখ‌্যমন্ত্রীর। তার পর একে একে বাকি বইগুলি ময়দানে নামে। যাদের মধ্যে ‘লহ প্রণাম ছড়ায় ছড়ায়’ (দ্বিতীয় ভাগ), ‘উৎসব সবার’, ‘তৃণমূল স্তরে তৃণমূলের জয়’, ‘কবিতাবিতান’-এর পরিবর্ধিত সংস্করণ, ও লহ প্রণাম ছড়ায় ছড়ায়-এর ইংরেজি সংস্করণ ‘হাম্বল রিগার্ডস’– এই পঁাচটি বই দেজ পাবলিশিংয়ের। আরও দুটির মধে‌্য একটি উৎসব সবার-এর ইংরেজি সংস্করণ ‘ফেস্টিভালস ফর অল’ এবং ‘বিল্ট হেরিটেজ অফ বেঙ্গল’ এই দুটি বই বি বুকস প্রকাশনার। ‘উৎসব সবার’ ও ‘ফেস্টিভালস ফর অল’-এর বিষয় একই। দুর্গাপুজোর পাশাপাশি বাংলার সমস্ত জেলার নানা প্রান্তে কোন কোন উৎসব কীভাবে পালিত হয়, তার বিস্তারিত বিবরণ মূলত ছবি ও উৎসবের বর্ণনায়। লেখার সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজস্ব অভিমত মিশেছে। ‘বিল্ট হেরিটেজ অফ বেঙ্গলে’ আবার বাংলার সমস্ত ঐতিহ‌্যপূর্ণ বাড়ি, ধর্মীয় স্থান জায়গা করে নিয়েছে। তবে সেগুলি পরপর সাজানোর ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখা হয়েছে বিষয়ের গভীরতায়। অর্থাৎ কলকাতা শহর ও রাজ্যের কোন কোন ঐতিহাসিক ও ঐতিহ‌্যপূর্ণ স্থানের সঙ্গে কোন কোন ইতিহাস ও স্থান মাহাত্ম‌্য জড়িয়ে সেসবকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বইটি তৈরির সময়।

[আরও পড়ুন: সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনায় সুদের হার বাড়াল কেন্দ্র, বাদ পিপিএফ]

‘লহ প্রণাম ছড়ায় ছড়ায়’ শিশুদের জন‌্য ভেবে লেখা। এর আগে একটি সংস্করণ নিমেষে শেষ হয়ে গিয়েছে। এবার তারই দ্বিতীয় ভাগ। এখানে মূলত বাংলা ও দেশের সমস্ত মনীষীকে সম্মান জানিয়ে তাঁদের উপর কবিতাগুলি লেখা হয়েছে। যার ভূমিকা অংশে মুখ‌্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘কবিতার মাধ‌্যমে গুণিজনকে শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি সিরিজ লেখার প্রয়াস শুরু করেছিলাম কয়েক বছর আগে। সেই সিরিজের পঞ্চম বই এটি। বরেণ‌্য মনীষীদের সম্পর্কে যাতে নব প্রজন্মের মনে আগ্রহ জাগে সেই লক্ষ্যে ২০২০ সালের বইমেলায় প্রকাশিত হয়ছিল আমার প্রথম বইটি।’ এবারের ‘কবিতাবিতান’-এ আরও বেশ কিছু কবিতা যুক্ত হয়েছে। মুখ‌্যমন্ত্রীর এবারের লেখা আরও কবিতা নিয়ে বইটি তৈরি। আরেকটি বই সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। নাম ‘তৃণমূল স্তরে তৃণমূলের (TMC) জয়’। এই বইয়ে মুখ‌্যমন্ত্রীর নিশানা বিজেপি (BJP)। তাদের বিরুদ্ধে হিংসা ও মানুষের উন্নয়ন আটকানোর অভিযোগ বারবার উঠে এসেছে মমতার (Mamata Banerjee) কথায়। তার পরও কীভাবে বাংলার মানুষের জন‌্য সংগ্রাম করেছেন তিনি রয়েছে সেই কথা। ভূমিকায় লিখছেন, ‘মানুষ দেখেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার টাকা আটকে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সঙ্গে কী বঞ্চনা করেছে। তবু তৃণমূল কংগ্রেস তার সীমীত সাধ্যের মধ্যেও রাজ‌্যকে উন্নয়নের শিখরে পৌঁছে দিয়েছে।’

[আরও পড়ুন: পাঁচ বিচারপতির রায়েই অযোধ্যায় রামমন্দির, আমন্ত্রণ পেয়েও উদ্বোধনে একজন! কেন?]

সব কটি বই পাওয়া যাচ্ছে দলীয় মুখপত্র ‘জাগোবাংলা’ স্টলে। দুটি প্রকাশনার সংস্থার স্টলেও বইগুলি মিলছে। ‘জাগোবাংলা’-র (Jaago Bangla) স্টলকে তৃণমূলনেত্রীর নির্দেশে সংবিধানের চেহারা দিয়েছেন সাংসদ দোলা সেন। সঙ্গে সংবিধানের মুখবন্ধের পাতাগুলি তুলে এনে একেকদিকে কৃত্রিম দেওয়ালের মতো তৈরি করেছেন। তিনিই বরাবর এই স্টল সাজানোর দায়িত্বে থাকেন। উদ্বোধনের দিন স্টল দেখে একেবারে অভিভূত হয়ে যান মমতা। সে কথা বলতে গিয়েই সাংসদ বলেন, “বইমেলা শুরুর দিন থেকেই মুখ‌্যমন্ত্রীর লেখা সমস্ত নতুন বইয়ের খোঁজে হন্যে হয়ে ফিরেছেন পাঠক। সব বই রবিবার হাতে এসে পড়ায় আর কারও তর সয়নি। এক মুহূর্তে সব ফুরিয়ে গিয়েছে।” তার সঙ্গে মিলছে ‘দুই ব‌্যাগ মমতা’। এ পর্যন্ত লেখা ১৪৩টি বইয়ের সব কটি দুটি চটের ব‌্যাগে মিলছে। মিলছে মুখ‌্যমন্ত্রীর লেখা গানের সিডিও। ‘মা’ সিডিটির দাম ছিল ১০০ টাকা। কিন্তু মুখ‌্যমন্ত্রীর নির্দেশে সেটি ৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। পুরনো বইগুলির মধ্যে ‘উপলব্ধি’, ‘পরিবর্তন’, ‘লহ প্রণাম ছড়ায় ছড়ায়’ (প্রথম ভাগ), ‘কবিতাবিতান’, ‘আমাদের সংবিধান ও কিছু কথা’ বইগুলির বিক্রি এখনও আগের মতোই। দোলা সেন জানালেন, ‘উপলব্ধি’, ‘পরিবর্তন’ ও ‘আমাদের সংবিধান ও কিছু কথা’ এই তিনটি বইয়ের কদর দিনে দিনে বাড়ছে। মুখ‌্যমন্ত্রীর বই কিনতে আসা পাঠকদের সঙ্গে কথায় কথায় অনেক চমকে দেওয়া গল্প জানতে পেরেছেন স্টলের কর্মীরা। তাদের মধ্যে অন‌্যতম একটি হল, এক সিপিএম কর্মীর বাবার কথা। বয়স তাঁর আশি ছুঁই ছুঁই। মমতার অন্ধভক্ত। বারবার বাবার হাত ধরে তাঁকে জাগোবাংলার স্টলে নিয়ে আসেন ওই সিপিএম কর্মী। স্টলের এক সিনিয়র কর্মীর কথায়, যিনি যে মতেই বিশ্বাসী হোন, আমাদের কাছে প্রত্যেকে স্বাগত।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement