অর্ণব আইচ: ধরা পড়ার ভয়ে মোবাইল ভেঙে দিয়ে দু'সপ্তাহ ধরে গা ঢাকা। তবে অন্য মোবাইল ব্যবহার করেও রেহাই পেল না অভিযুক্ত। রজন বা রেজিনের আড়ালে সাড়ে তিন কোটি টাকার সুপুরি পাচারের অভিযোগে মূলচক্রীকে গ্রেপ্তার করল শুল্ক দপ্তর।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ওই ব্যক্তির নাম নরোত্তম বালা। হুগলির (Hooghly) বাসিন্দা ওই ব্যক্তি ক্লিয়ারিং এজেন্টের কাজ করেন। সম্প্রতি বিদেশ থেকে রেজিনের আড়ালে একাধিক কন্টেনারে করে সুপুরি পাচার হয়। সূত্র মারফৎ খবর পেয়েই, শুল্ক দপ্তরের গোয়েন্দারা ওই কন্টেনারগুলি পরীক্ষা করেন। আর তার পরই কেঁচো খুঁড়তে কেউটে! দেখেন, রেজিনের পরিমাণ অত্যন্ত কম। বদলে পাচার হচ্ছে সুপুরি। সুপুরি আমদানির জন্য সরকারকে ১১০ শতাংশ কর দিতে হয়। কর এড়ানোর জন্যই পাচারচক্র এমন ফন্দি এঁটেছিল। এভাবেই কলকাতায় বিপুল পরিমাণ সুপুরি পাচার হয়। তদন্তে নেমে প্রথমে শুল্ক দপ্তরের গোয়েন্দারা মহম্মদ হাবিবুল্লাহ ও অরুণ রাহা নামে দু'জনকে গ্রেপ্তার করেন।
[আরও পড়ুন: চুরির চেষ্টা আটকানোর ‘শাস্তি’, গৃহকর্তাকে পিটিয়ে ‘খুন’ দুষ্কৃতীদের]
জেরা মুখে তারা জানায়, একটি ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে ৩ কোটি ৪৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার সুপুরি চোরাপথে আমদানি করা হয়েছে। একটি অফিসে তল্লাশি চালিয়ে ওই ভুয়ো সংস্থার প্রচুর নথিও উদ্ধার করেন গোয়েন্দারা। তার ভিত্তিতেই জানা যায়, এই চক্রের অন্যতম মূলচক্রী নরোত্তম বালা। তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, এই নরোত্তমই ওই ভুয়ো সংস্থার মালিক। যদিও ওই ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া সহজ হয়নি। তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। অন্য ফোন ও সিম ব্যবহার করছিল সে। বাড়ি ছেড়ে গা ঢাকা দিতে বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয়ও নেয়। তবে কয়েকদিন আগে অন্য় মোবাইল থেকে পরিজনদের ফোন করার পরই গোয়েন্দারা তার হদিশ পান।
মঙ্গলবার রাতে শুল্ক দপ্তরের (Customs Department)গোয়েন্দারা নরোত্তম বালাকে গ্রেপ্তার করেন। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, যে সিম থেকে পাচারচক্রের অন্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হত সেটি ভেঙে ফেলেছে সে। এমনকী ওই মোবাইলটিও নষ্ট করা হয়েছে। যদিও সেই মোবাইলটিকে ফরেনসিকে পাঠানো হয়েছে। সম্প্রতি ওই ব্যক্তির একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ওই টাকা সুপুরি পাচারের বলেই অভিযোগ। তার অন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি খতিয়ে দেখার পর জেলে জেরা করা হবে বলে জানানো হয়েছে শুল্ক দপ্তরের তরফে।