অর্ণব আইচ: করোনা কালে নোটিস ছাড়া নেতাদের বাড়িতে ঢুকে গ্রেপ্তারি, সিবিআইয়ের (CBI)এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে এবার গড়িয়াহাট থানায় (Gariahat PS) অভিযোগ দায়ের করলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের বিরুদ্ধে মহামারী আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। ১৬৬, ১৬৬এ, ১৮৮ এবং ৩৪ ধারা ছাড়াও মহামারী আইনের ৫১ (বি) ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে। সোমবার অর্থাৎ সিবিআই যেদিন রাজ্যের হেভিওয়েট নেতাদের গ্রেপ্তার করেছিল, সেইদিনই চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য লালবাজারে এই অভিযোগ করেছিলেন। সেই মামলাটি বুধবার গড়িয়াহাট থানায় স্থানান্তর করা হল।
সোমবার প্রায় সাতসকালে রাজ্যের ২ মন্ত্রী – ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র এবং প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি গিয়ে তাঁদের নিজাম প্যালেসে নিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। কোভিড (COVID-19) পরিস্থিতিতে যেখানে শারীরিক দূরত্ববিধি মেনে চলার কথা, সেখানে একসঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান, সিবিআই আধিকারিক-সহ প্রায় ৫০ জনের একটি দল সেদিন ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে ঢুকে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ পরিবারের। প্রায় একই অভিযোগ মদন মিত্র, সুব্রত মুখোপাধ্যায়দেরও। আগাম নোটিস না দিয়ে কেন এই বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার?এ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
[আরও পড়ুন: নারদ মামলায় মন্ত্রী-বিধায়কদের বিনা অনুমতিতে গ্রেপ্তার, পালটা পদক্ষেপের ভাবনা বিধানসভার]
এসবের পর সোমবারই লালবাজারে সিবিআই টিমের বিরুদ্ধে রাজ্যের মন্ত্রী তথা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya) দলের তরফে কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। তাতে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। এরপর চন্দ্রিমা আইন মেনে কলকাতা পুলিশের সদর দপ্তর লালবাজারে এফআইআর দায়ের করেন। তাতে ১৬৬ ধারা অর্থাৎ কোনও সরকারি প্রতিনিধির এমন কোনও আচরণ, যা অন্যের পক্ষে ক্ষতিকারক, তা প্রয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪ ধারা অর্থাৎ নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রমূলক কাজ, এই ধারাও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মহামারী আইনের (DM Act) ৫১ (বি) ধারা প্রযুক্ত হয়েছে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে চন্দ্রিমার দায়ের করা এফআইআরে।
[আরও পড়ুন: ২৫-৪৪ বছর বয়সিদের দ্রুত টিকাকরণ হোক, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে চিঠি খোদ রাজ্য বিজেপি নেতার]
প্রসঙ্গত, সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগে মামলা দায়ের সচরাচর দেখা যায় না। সেদিক থেকে কলকাতায় এসে ৪ হেভিওয়েট নেতাকে নারদ কাণ্ডে চটজলদি গ্রেপ্তারের যে পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা, তার ভিত্তিতেই এই আইনি প্যাঁচে পড়তে হল সংস্থার আধিকারিকদের।